জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকল মুসলমান পুরো রমজান মাস ইশার নামাজের পর তারাবিহ এর নামাজ আদায় করবে।
শাওয়াল মাসের চাঁদ উঠলে সে রাত হতে আর তারাবিহ এর নামাজ আদায় করতে হবেনা।
ছেলেদের ২৭ রোজায় তারাবিহ শেষ হয়না।
বরং খতম তারাবিহ শেষ হয়,তথা তারাবিহ তে যে কুরআন খতম হয়,সেই খতম শেষ হয়।
মূলত তারাবিহ পুরো রমজান মাস ইশার নামাজের পর আদায় করতে হবে।
(০২)
তারাবিহ না পড়লেও রোযা হবে।
(০৩)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صَلَّى ذَاتَ لَيْلَةٍ فِي الْمَسْجِدِ فَصَلَّى بِصَلاَتِهِ نَاسٌ ثُمَّ صَلَّى مِنَ الْقَابِلَةِ فَكَثُرَ النَّاسُ ثُمَّ اجْتَمَعُوا مِنْ اللَّيْلَةِ الثَّالِثَةِ أَوْ الرَّابِعَةِ فَلَمْ يَخْرُجْ إِلَيْهِمْ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا أَصْبَحَ قَالَ قَدْ رَأَيْتُ الَّذِي صَنَعْتُمْ وَلَمْ يَمْنَعْنِي مِنَ الْخُرُوجِ إِلَيْكُمْ إِلاَّ أَنِّي خَشِيتُ أَنْ تُفْرَضَ عَلَيْكُمْ وَذَلِكَ فِي رَمَضَانَ.
উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক রাতে মসজিদে সালাত আদায় করছিলেন, কিছু লোক তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করলো। পরবর্তী রাতেও তিনি সালাত আদায় করলেন এবং লোক আরো বেড়ে গেল। অতঃপর তৃতীয় কিংবা চতুর্থ রাতে লোকজন সমবেত হলেন, কিন্তু আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হলেন না। সকাল হলে তিনি বললেনঃ তোমরা যা করেছ আমি লক্ষ্য করেছি। তোমাদের নিকট বেরিয়ে আসার ব্যাপারে এ আশঙ্কাই আমাকে বাধা দিয়েছে যে, তোমাদের উপর তা ফরজ হয়ে যাবে। এটা ছিল রমাযান মাসের ঘটনা। (বুখারী শরীফ ১১২৯.৭২৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১০৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১০৬২)
★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী তারাবিহ নামাজ বিশ রাকাত পড়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদা।
কেহ যদি বিনা ওযরে বিশ রাকাত না পড়ে,বা ওযর বশত বিশ রাকাত না পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলে,তাহলে সে গুনাহগার হবে।
,
এবং শেষে তিন রাকাত বিতর পড়া ওয়াজিব।
,
ইমাম বুখারীসহ সিহাহ সিত্তার সকল গ্রন্থকারের উস্তাদের ২৬ খন্ডে রচিত কিতাব ‘মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবাহ’( ২/১৬৪)-তে সহিহ সনদে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﷺ ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺼَﻠِّﻲ ﻓِﻲ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ ﺭَﻛْﻌَﺔً ﻭَﺍﻟْﻮِﺗْﺮَ
রাসূল ﷺ রমযান মাসে বিশ রাকাআত তারাবী ও বিতির আদায় করতেন।
হাদিসটি এই হাদিসগ্রন্থগুলোতেও বর্ণিত হয়েছে– সুনানুল কোবরা লিল-বায়হাকী: ২/৬৯৮, আল-মুনতাখিব: ৬৫৩, আল-মু’জামুল কাবীর: ১১/৩৯৩, আল-মু’জামুল আওসাত: ১/২৪৩।
ইয়াজিদ বিন রূমান বলেন,
كان الناس يقومون في زمان عمر بن الخطاب في رمضان بثلاث وعشرين ركعة
লোকেরা (সাহাবী ও তাবেয়িগণ) ওমর রাযি. এর শাসনামলে বিশ রাকাত তারাবী এবং তিন রাকাত বিতির রমযান মাসে আদায় করতো। (মারিফাতুস সুনান ওয়াল আসার, হাদীস নং-১৪৪৩, মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৩৮০, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৪৩৯৪)
সায়েব বিন ইয়াজিদ বলেন,
كـانوا يقـومـون عهد عمر بن الخطاب رضى الله عنه فى شهر رمضان بعشرين ركعة وكانوا يقومون بالمأتين وكانو يتوكؤن على عصيتهم فى عهد عثمان من شدة القيام
ওমর রাযি. এর শাসনামলে লোকেরা (সাহাবী ও তাবেয়িগণ) বিশ রাকাত তারাবী পড়তেন। আর উসমান রাযি. এর শাসনামলে লম্বা কেরাতের কারণে লাঠির উপর ভর দিতেন। (বায়হাকী-৪/২৯৬)
বিস্তারিত জানুনঃ-
তারাবীহ এর সালাত প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলমানের উপর সুন্নাতে মুআক্কাদা। এবং জামাতের সাথে আদায় করা সুন্নাতে মুআক্কাদা আ'লাল কিফায়া।
ফেকহে হানাফির নির্ভর্যোগ্য প্রসিদ্ধ গ্রন্থ "ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে" বর্ণিত আছে,
وَنَفْسُ التَّرَاوِيحِ سُنَّةٌ عَلَى الْأَعْيَانِ عِنْدَنَا كَمَا رَوَى الْحَسَنُ عَنْ أَبِي حَنِيفَةَ - رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى - وَقِيلَ: تُسْتَحَبُّ وَالْأَوَّلُ أَصَحُّ. وَالْجَمَاعَةُ فِيهَا سُنَّةٌ عَلَى الْكِفَايَةِ، كَذَا فِي التَّبْيِينِ وَهُوَ الصَّحِيحُ، كَذَا فِي مُحِيطِ السَّرَخْسِيِّ.
তারাবীহ সুন্নাতে মুআক্কাদা আলাল আইন।যেমন ইমাম আবু-হানিফা থেকে হাসানের রেওয়াতে বর্ণিত আছে।কেউ কেউ অবশ্য মুস্তাহাব ও বলেছেন।তবে প্রথম অভিমতটাই অধিক গ্রহণযোগ্য।এবং জামাতের সাথে তারাবীহের সালাত আদায় করা সুন্নাতে মুআক্কাদা আলাল কিফায়া। এভাবেই "তাবয়ীনুল হাক্বাইক্ব" নামক কিতাবে বর্ণিত আছে। এবং "মুহিতে সারাখসীতে" বর্ণিত আছে।(ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া,১/১১৬)
আরো জানুনঃ-
(০৪)
তারাবীহ (تَرَاوِيْحِ) এর একবচন 'তারবীহাতুন', আরবি: تَروِيْحَة)।
আভিধানিক অর্থ বসা বিশ্রাম করা বা আরাম করা এবং এটি আরবি ر و ح শব্দমূল থেকে আগত।
তারাবীহ বা কিয়ামুল লাইল হলো রাতের একটি বিশেষ সুন্নত নামাজ যেটি মুসলিমগণ রমজান মাসব্যপী প্রতি রাতে এশার ফরজ নামাজের পর দীর্ঘ তিলাওয়াত সহকারে পড়ে থাকেন।
তারাবীহ শব্দের অর্থ বিশ্রাম করা। তারাবীহ বহু দীর্ঘায়িত একটি সালাত। প্রতি চার রাকআত শেষে যাতে একটু বিশ্রাম গ্রহণ করতে পারে সেজন্য এর নামকরণ করা হয়েছে তারাবীহ।
واما سننها: وَمِنْهَا أَنَّ الْإِمَامَ كُلَّمَا صَلَّى تَرْوِيحَةً قَعَدَ بَيْنَ التَّرْوِيحَتَيْنِ قَدْرَ تَرْوِيحَةٍ يُسَبِّحُ، وَيُهَلِّلُ وَيُكَبِّرُ، وَيُصَلِّي عَلَى النَّبِيِّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – وَيَدْعُو وَيَنْتَظِرُ أَيْضًا بَعْدَ الْخَامِسَةِ قَدْرَ تَرْوِيحَةٍ؛ لِأَنَّهُ مُتَوَارَثٌ مِنْ السَّلَفِ (بدائع الصنائع، كتاب الصلاة، فصل فى سننها والتراويح-1/648(
সারমর্মঃ
সুন্নাত হলো ইমাম দুই তারবিহ তথা চার রাকাত পর পর বসবে,(বিশ্রাম নিবে) তাকবির যিকির,দরুদ পাঠ,দোয়া ইত্যাদিতে মগ্ন থাকবে।,,,,