আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
163 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (37 points)
আমি কসম সম্পর্কিত একটি প্রশ্ন করেছিলাম। আমার প্রশ্নটি ছিলোঃ

আসসালামু আলাইকুম। ধরুন একজন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আল্লাহকে বললো," আল্লাহর কসম! আমি যদি আল্লাহর নামে শিরকমূলক এবং গালিমূলক কথা বলি তাহলে আল্লাহ আমাকে দুনিয়াতে অমুক শাস্তি(ঐ ব্যক্তিটির দ্বারা কামনাকৃত একটি শাস্তি) দেবেন এবং আমি যদি আমার কামনাকৃত শাস্তিটি থেকে ক্ষমা চাই তাহলে যেন আল্লাহ তা গ্রহণ না করেন"। তো এরপর যদি ব্যক্তিটি আল্লাহর নামে ইচ্ছাকৃতভাবে শিরকমূলক এবং গালিমূলক কথা বলে ফেলে তাহলে সে(ঐ ব্যক্তিটি) কিভাবে আল্লাহর কাছ থেকে তার(ঐ ব্যক্তিটি) নিজের কামনাকৃত শাস্তিটি থেকে বাঁচতে পারবে? (শুধু শাস্তিটি থেকে বাঁচার উপায়টি বলবেন যা সকল মাজহাবের নিকট গ্রহণযোগ্য)।

তো এখানে মুফতি সাহেব উত্তর দিয়েছিলেন "যে কসম করেছে তাকে কাফফারা আদায় করতে হবে এবং তওবা করতে হবে"। তো আমার প্রশ্ন হলো এখানে নিজের কামনাকৃত শাস্তিটি থেকে বাঁচার জন্য কাফফারার প্রয়োজন আছে কি? শুধু তওবা করলেই নিজের কামনাকৃত শাস্তিটি থেকে কি বাঁচা সম্ভব? তাহলে শুধু যে কসমটা ভঙ্গ হয়েছে এখানে তার জন্য কাফফারা দিতে হবে কি?

হয়তো বিরক্ত করছি কিন্তু কিছু মনে করিয়েন না।

আল্লাহ আপনার এ কষ্টের উত্তম প্রতিদান দিক।

জাজাকাল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (581,490 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
কসম ভঙ্গ হওয়ার জন্য আপনাকে কাফফারা দিতে হবে।আর কামানকৃত শাস্তি থেকে বাচতে আল্লাহর নিকট চাইতে হবে।



আল্লাহর সাথে ওয়াদা করার পর সেই ওয়াদা কে রক্ষা করা ও পূর্ণ করা অতীব জরুরী।ওয়াদা করার পর ওয়াদার উল্টো কোনো কাজ করা অত্যন্ত নিকৃষ্টতম বিষয়।

তবে ওয়াদা করার সময়ে আল্লাহর 'নাম' উচ্ছারণ করে ওয়াদা করে, সেই ওয়াদাকে ভঙ্গ করলে তখন কিন্তু কাফফারা দিতে হবে।

আল্লাহর নাম উচ্ছারণ করে ওয়াদা করলে সেই ওয়াদার নাম কসম বা শপথ হয়।
কসম বা শপথ তিন প্রকার যথাঃ- 
(اليمين بالله ثلاثة أنواع) غموس، وهو الحلف على إثبات شيء، أو نفيه في الماضي، أو الحال يتعمد الكذب فيه فهذه اليمين يأثم فيها صاحبها، وعليه فيها الاستغفار، والتوبة دون الكفارة.
(১)গুমুস- অতীত বা বর্তমান কালে কোনো জিনিষকে প্রমাণিত করা বা না করার জন্য ইচ্ছা করে মিথ্যা কসম করা।এমন শপথকারী নিজে গোনাহগার হবে।তার উপর তাওবাহ ইস্তেগফার করা অত্যাবশ্যকীয়। তবে তার উপর কাফফারা আসবে না।
ولغو، وهو أن يحلف على أمر في الماضي، أو في الحال، وهو يظن أنه كما قال:، والأمر بخلافه بأن يقول: والله قد فعلت كذا، وهو ما فعل، وهو يظن أنه فعل، أو: ما فعلت كذا، وقد فعل، وهو يظن أنه ما فعل، أو رأى شخصا من بعيد فقال: والله إنه لزيد، وظنه زيدا، وهو عمرو، أو طائرا فقال: والله إنه لغراب، وظنه غرابا، وهو حدأة فهذه اليمين نرجو أن لا يؤاخذ بها صاحبها، واليمين في الماضي إذا كان لا عن قصد لا حكم له في الدنيا، والآخرة عندنا.
(২)লগু-অতীত বা বর্তমান কালে কোনো জিনিষ প্রমাণিত করা বা না করার জন্য শপথ করা।সে ধারণা করছে যে,সে যা বলছে তাই সত্য,অথচ বাস্তবতা হল,মিথ্যা।যেমন কেউ বলল,আল্লাহর কসম,আমি এমনটা করেছি।অথচ বাস্তবতা হল, সে করেনি।কিন্তু সে মনে করে করেছে যে,সে করোছে।এবং তার উল্টো বিষয়ও এমনই।
এবং কেউ দূর থেকে কোনো ব্যক্তিকে দেখে বলল,এতো যায়েদ।অথচ সে আমর।কিন্তু সে ধারণা করেছিল যে,উনি যায়েদ,ইত্যাদি ইত্যাদি।এমন শপথের ব্যাপারে বলা যায় যে,এই শপথের শপথকারীর কোনো প্রকার গোনাহ হবে না।অতীতকালের শপথ যদি কেউ মিথ্যার ইচ্ছায় না করে,তাহলে হানাফি ফিকহ অনুযায়ী দুনিয়া ও আখেরাতে এর কোনো শাস্তির বিধান আরোপিত হবে না।
ومنعقدة، وهو أن يحلف على أمر في المستقبل أن يفعله، أو لا يفعله، وحكمها لزوم الكفارة عند الحنث كذا في الكافي.
(৩)মুনআকিদাহ- ভবিষ্যৎকালে কোনো জিনিষ করা বা না করার শপথ করা।শপথ পূর্ণ না করলে এর কাফফারা অবশ্যই দিতে হবে।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-২/৫২)

আপনার বক্তব্য থেকে বুঝা যাচ্ছে যে,আপনি ভবিষ্যতে কিছু করা বা না করার শপথ নিয়েছিলেন।সুতরাং এখন শপথকে রক্ষা না করলে অবশ্যই আপনাকে কাফফারা দিতে হবে।এ সম্পর্কে  বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/1808


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (37 points)
এক্ষেত্রে শুধু তওবা করলেই তাহলে নিজের কামনাকৃত শাস্তিটি থেকে সে বেঁচে যাবে? তাকে আর কিছু করতে হবে না নিজের কামনাকৃত শাস্তিটি থেকে বাঁচার জন্য? আর কসমের কাফফারা তাকে আগে দিতে হবে নাকি কামনাকৃত শাস্তিটি থেকে বাঁচার জন্য তওবা করতে হবে নাকি তার যেটা ইচ্ছা সেটা আগে করবে? সে কাফফারা না দেওয়া পর্যন্ত তওবা না করলে কি তার কামনাকৃত শাস্তিটি মাফ হবেনা?
by (581,490 points)
কাফফারা বা কামনাকৃত শাস্তি থেকে মাফ চাওয়া যেকোনো একটিকে আগে করা যাবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...