ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার।
,
১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।
২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।
তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।
,
ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়।
৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا الْحَسَنَةُ مِنَ الرَّجُلِ الصَّالِحِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ ".
আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নেককার লোকের ভাল স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ।
(বুখারী শরীফ ৬৫১২)
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى ـ هُوَ ابْنُ سَعِيدٍ ـ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا مِنَ اللَّهِ، وَالْحُلْمُ مِنَ الشَّيْطَانِ ".
আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) ... আবূ কাতাদা (রাঃ) সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে আর অশুভ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে।
(৬৫১৩)
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خَبَّابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ رُؤْيَا يُحِبُّهَا فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ اللَّهِ، فَلْيَحْمَدِ اللَّهَ عَلَيْهَا، وَلْيُحَدِّثْ بِهَا، وَإِذَا رَأَى غَيْرَ ذَلِكَ مِمَّا يَكْرَهُ، فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَلْيَسْتَعِذْ مِنْ شَرِّهَا، وَلاَ يَذْكُرْهَا لأَحَدٍ، فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّهُ ".
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, যখন তোমাদের কেউ এমন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে, তাহলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর উপর আল্লাহর প্রশংসা করে এবং অন্যের কাছে তা বর্ণনা করে। আর যদি এর বিপরীত অপছন্দনীয় কিছু দেখে, তাহলে তা শয়তানের পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর আশ্রয় চায়। আর কারো কাছে যেন তা বর্ণনা না করে। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি সাধন করবে না।
(বুখারী শরীফ ৬৫১৪)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
কেউ যদি স্বপ্নে দেখে যে, সে দেখে দেখে কুরআন তেলাওয়াত করছেন, তাহলে তার ব্যাখ্যা হবে যে তার মর্যাদা বুলন্দি হবে এবং তার জীবনে খুশি নেমে আসবে।
আর যদি স্বপ্নে মুখস্ত (হিফজ) কুরআন তেলাওয়াত করতে দেখে তাহলে তার ব্যাখ্যা হবে, যে তার সাথে কারো সঙ্গে আদালতে মুখোমুখি হবে এবং তার দাবিই সহিহ হবে। এবং সে আমানত দার প্রমাণিত হবে। নম্র হৃদয়ের অধিকারী মুমিন হবে। সৎ কাজের আদেশ করবে, অসৎ কাজ থেকে বাধা দিবে।
আর যদি কেউ স্বপ্নে কুরআনে কারিম খতম করতে দেখে তাহলে তার কোন বড় আশা পূরণ হবে। আল্লাহ তাআলা তাকে অনেক সওয়াব দান করবেন।
আর যদি কেউ এটা দেখে যে, সে কুরআন শরীফ মুখস্ত করে ফেলছে অথচ তার কুরআন শরীফ মুখস্ত ছিল না তাহলে তাকে তার পরিস্থিতির অনুযায়ী শক্তি বা মর্যাদা দান করা হবে।
যদি কেউ স্বপ্নে নিজেকে কুরআন শরীফ পড়া অবস্থায় দেখে, কিন্তু তার মনে নেই যে সে ঠিক কোন অংশ থেকে পড়েছে বা কোন আয়াত কোন সূরা পড়েছে। তাহলে সে যদি অসুস্থ থাকে সুস্থ হয়ে যাবে। আর যদি সে ব্যবসায়ী হয় তাহলে তো আর কোনো বড় মুনাফা হবে।
আর যদি কেউ সপ্নে দেখে যে, সে কুরআন শরীফ শ্রবণ করছে তাহলে তার শক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং তার সব কাজের ফলাফল সুন্দর হবে এবং সে ষড়যন্ত্রকারীর ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা পাবে।
আর যদি কেউ সপ্নে এটা দেখে যে, সে কুরআনে মাজীদ তেলাওয়াত করছে আর লোকেরা তার তেলাওয়াত শুনছে, তাহলে লোক সমাজে তাঁর আদেশগুলো মান্য হবে।
আর যদি কেউ স্বপ্নে কুরআনে কারিমকে বিকৃতি করে পড়তে এবং তাতে "খলল" সৃষ্টি করতে দেখে তাহলে এটা তার দুর্দশার লক্ষণ হবে।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত স্বপ্নটি অনেক ভালো,আলহামদুলিল্লাহ। এই স্বপ্নের জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করুন।
তবে অন্য সুরা মুখস্থ থাকলে ফরজ নামাজ ইচ্ছাকৃতভাবে এভাবে তিলাওয়াত করলে নামাজ মাকরুহ হবে।