ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ- (১)ইবনে নুজাইম রাহ লিখেন,
وَإِنَّمَا الْخِلَافُ فِي نَجَاسَةِ عَيْنِهِ، فَظَهَرَ بِهَذَا أَنَّ الْكَلْبَ طَاهِرُ الْعَيْنِ بِمَعْنَى طَهَارَةِ عَظْمِهِ وَشَعْرِهِ وَعَصَبِهِ
কুকুর নজসে আইন কি না? সে সম্পর্কে মতবিরোধ রয়েছে।কুকুর বাহ্যিকভাবে পবিত্র।তথা তার হাড্ডি,পশম,রগ ইত্যাদি পবিত্র।তবে তার গোশত এবং মুখের লালা অপবিত্র।(বাহরুর-রায়েক-১/১০৮)
শুকনা কুকুর মানুষের শরীর বা কাপড়ে লেগে গেলে তা নাপাক হবে না।(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৫/২৩৩)
কুকুরের লালা অপবিত্র।যদি কুকুরের শুকনা শরীর কাপড়ে লাগে তাহলে এর দ্বারা সেই কাপড় নাপাক হবে না।নামায পড়ার জন্য সেই কাপড়কে ধৌত করাবাবা বদলানো কিংবা পরিবর্তন করা কিছুই জরুরী নয়।(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৫/২৭৫)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
কুকুরের শরীর শুকনা থাকলে,এবং তাতে কোনো প্রকার নাজাসত লেগে না থাকলে, উক্ত কুকুর কারো শরীর বা কাপড়ের সাথে লেগে গেলে সেই শরীর বা কাপড় নাপাক হবে না।
- (২)
ঘরের নামাযের সওয়াব এবং মসজিদের নামাযের সওয়াব কখনো সমান হবে না।
উক্ত কুকুর থেকে রেহাই পাওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে।হয়তো কুকুরকে জলাতঙ্কের ইনজেকশন প্রদান করুন নতুবা পড়া প্রতিবেশীকে সাথে নিয়ে এগুলোকে দমানোর চেষ্টা করুন কিংবা হত্যা করুন-
কুকুর থেকে রেহাই পাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বাড়ীতে নামায আদায় করতে পারবেন।রুখসত থাকবে।
কুকুর হত্যা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর হাদীস -
প্রথমে রাসূলুল্লাহ সাঃ কুকুর নিধনের আদেশ প্রদাণ করেন। যখন দেখলেন যে, সবাই কুকুর নিধনে এমনভাবে ব্যস্ত হয়ে যাচ্ছে যে, এ প্রজাতি একদিন হারিয়ে যাবে।যাকে আল্লাহ মানব জাতীর ফায়দা তথা পরিবেশ রক্ষার জন্য সৃষ্টি করেছেন।তাই পরবর্তীতে ব্যাপকতাকে সীমিত করে নির্দিষ্ট কিছু প্রজাতির কুকুরকে হত্যা করার নির্দেশ দেন।
যেমনঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুগাফফাল রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻣﻐﻔَّﻞ ﻋﻦ ﺍﻟﻨَّﺒﻲِّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : ﻟَﻮْﻻَ ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻜِﻼَﺏَ ﺃﻣَّﺔٌ ﻣِﻦَ ﺍﻷﻣَﻢِ ﻷﻣَﺮْﺕُ ﺑِﻘَﺘْﻠِﻬَﺎ ﻓَﺎﻗْﺘُﻠُﻮﺍ ﻛُﻞَّ ﺃﺳْﻮَﺩَ ﺑَﻬِﻴﻢٍ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন- যদি কুকুর প্রাণীজগৎ এর এক প্রকার না হত,তাহলে আমি কুকুরের জাতকে নিধনের হুকুম দিতাম।এখন তোমরা নিখুঁত কালো কুকুর) দেখে দেখে হত্যা করো।
(সুনানে তিরমিযি-১৪৮৬,সুনানে আবু-দাউদ-২৮৪৫,সুনানে নাসাঈ-৪২৮০,সুনানে ইবনে মা'জা-৩২০৫)
রাসূলুল্লাহ সাঃ প্রথমে ব্যাপকহারে কুকুর নিধনের আদেশ দিয়েছিলেন।পরবর্তীতে যখন দেখলেন যে,সবাই যেভাবে কুকুর নিধনে ব্যস্ত তাতে প্রাণীজগৎ এর একটি জাত সম্পূর্ণরূপে নিধন হয়ে যাবে তখন কিছু প্রজাতির কুকুরকে নির্দিষ্ট করে হত্যার নির্দেশ দেন।
যেমন চাঁন কাপালি নিখুঁত কালো কুকুরকে হত্যার নির্দেশ প্রদাণ করেন-
হযরত জাবের রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋﻦ ﺟﺎﺑﺮ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ : ﺃﻣَﺮَﻧﺎ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺑِﻘَﺘْﻞِ ﺍﻟﻜِﻼﺏِ ، ﺣَﺘَّﻰ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻤَﺮْﺃﺓَ ﺗَﻘْﺪُﻡُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺒَﺎﺩِﻳَﺔِ ﺑِﻜَﻠْﺒِﻬَﺎ ﻓَﻨَﻘْﺘُﻠُﻪُ ، ﺛُﻢَّ ﻧَﻬَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒﻲُّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻋَﻦْ ﻗَﺘْﻠِﻬَﺎ ، ﻭَﻗَﺎﻝَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺑِﺎﻷﺳْﻮَﺩِ ﺍﻟﺒَﻬِﻴﻢِ ﺫِﻱ ﺍﻟﻨُّﻘْﻄَﺘَﻴْﻦِ ﻓَﺈﻧَّﻪُ ﺷَﻴْﻄَﺎﻥٌ
রাসূলুল্লাহ সাঃ আমাদের কুকুর নিধনের আদেশ দিয়েছিলেন।তখন গ্রাম থেকেও কোনো মহিলা কুকুর নিয়ে আসলে সেটাকেও আমরা হত্যা করে ফেলতাম।অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাঃ আমাদেরকে ব্যাপকহারে কুকুর নিধন থেকে নিষেধ করে আমাদেরকে বললেন,তোমরা নিখুঁত কালো ও চাঁন কপালি কুকুর দেখে হত্যা করো, কেননা এটা শয়তান।
(সহীহ মুসলিম-১৫৭২)
এবং পাগলা কুকুর কে হত্যা করার নির্দেশ প্রদাণ করেন-
হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: " خَمْسٌ فَوَاسِقُ، يُقْتَلْنَ فِي الحَرَمِ: الفَأْرَةُ، وَالعَقْرَبُ، وَالحُدَيَّا، وَالغُرَابُ، وَالكَلْبُ العَقُورُ "
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, পাচঁ প্রকার প্রাণী অধিক ক্ষতিকারক। এদেরকে হারামেও (সীমানার মধ্যে)হত্যা করা যায়।এগুলো হল, বিচ্ছু, ইঁদুর,চিল,কাক ও পাগলা কুকুর।
(সহীহ বুখারী-৩৩১৪,সহীহ মুসলিম-১১৯৮)