আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
53 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম,
আমরা স্বামী-স্ত্রী শীঘ্রই বাচ্চা নেওয়ার জন্য চেষ্টা এবং দু'আ শুরু করতে চাচ্ছি। এ ব্যাপারে জানার ছিল যে এ চেষ্টার জন্য ইসলামের দৃষ্টিতে কোনো উত্তম সময় আছে কিনা যেন বাচ্চার উপর আল্লাহর রহমত ও বরকত অনেক বেড়ে যায়। যেমন এখন রমযান মাস চলছে আর রমযানের মাঝেই (অনুমোদিত সময়ে অবশ্যই) যদি আমরা চেষ্টা করি এক্সট্রা বরকতের আশায়, আল্লাহ চাইলে বাচ্চা বা আল্লাহর যেকোনো ফয়সালার উপর রমযানের ওসিলায় এক্সট্রা বরকত পাওয়া যাবে কি?


আর রমযানের বাইরে অন্য সময়ে চেষ্টা করলে এক্সট্রা বরকত লাভের কী উপায় থাকতে পারে?

1 Answer

0 votes
by (677,120 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হযরত যাকারিয়া (আ.) বয়োবৃদ্ধ হয়ে যাওয়ার পরও নিঃসন্তান ছিলেন। মরিয়ম (আ.) বায়তুল মোকাদ্দাসে জাকারিয়া (আ.)-এর তত্ত্বাবধানে ছিলেন। একদিন তিনি দেখলেন, আল্লাহ তাআলা মৌসুম ছাড়াই মরিয়ম (আ.)-কে ফল দান করেছেন। তখন তার মনে সন্তান লাভের সুপ্ত আকাঙ্ক্ষা জেগে উঠল। তিনি ভাবলেন যে, যে আল্লাহ বিনা-মৌসুমে ফল দিতে পারেন, সে আল্লাহ বৃদ্ধ দম্পতিকে সন্তান দান করতে পারেন। তাই তিনি আল্লাহর দরবারে দোয়া করলেন, যে দোয়াটি সবাই করতে পারেন। দোয়াটি হলো—

رَبِّ هَبْ لِي مِن لَّدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَاء

অর্থ: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! তোমার পক্ষ থেকে আমাকে পূতপবিত্র সন্তান দান করো। নিশ্চয়ই তুমি প্রার্থনা কবুলকারী।’ (সুরা আলে ইমরান: ৩৮)

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নিঃসন্তান মাতা-পিতাকে নিচের দোয়াটিও শিখিয়েছেন—

رَبِّ لَا تَذَرْنِى فَرْدًا وَأَنتَ خَيْرُ ٱلْوَٰرِثِينَ

‘রব্বি লা-তাযারনি ফারদাঁও ওয়া আন্তা খাইরুল ওয়ারিছিন’ অর্থ: ‘হে আমার রব, আমাকে একা রেখো না। তুমি তো সর্বোত্তম উত্তরাধিকারী’ (সুরা আম্বিয়া: ৮৯)। অতএব, আপনিও দোয়াটি করতে পারেন। ইনশাআল্লাহ আল্লাহ আপনাকে নেক সন্তান দান করবেন।

সন্তান লাভে ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়াটিও মুসলিম উম্মাহর জন্য অনুকরণীয়। আল্লাহ তাআলার কাছে তিনি দোয়া করেছিলেন সৎ পুত্র সন্তানের জন্য। মহান আল্লাহ তাঁর দোয়া কবুল করেন। এতে শিক্ষা রয়েছে সন্তান কামনা করতে কীভাবে দোয়া করতে হয়।

দোয়াটি হলো— رَبِّ هَبْ لِي مِنَ الصَّالِحِينَ

অর্থ: ‘হে আমার প্রভু! আমাকে এক সৎপুত্র দান করুন।’ (সুরা সাফফাত: ১০০)

এছাড়াও আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের অন্যতম একটি গুণ হলো- তাঁরা পুণ্যবান স্ত্রী ও সন্তানের জন্য দোয়া করেন। কোরআনে বর্ণিত নিচের দোয়াটিও করতে পারেন। ইনশা-আল্লাহ আল্লাহ আপনাকে সন্তান দিয়ে সুখী করবেন। দোয়াটি হলো—

رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا

‘রাব্বানা-হাবলানা-মিন্ আয্ওয়াজ্বিনা ওয়া যুররিয়্যা-তিনা-কুররাতা আ’ইয়ুন, ওয়া জা’আলনা-লিল মুত্তাকিনা ইমামা।’ অর্থ: ‘হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদের জীবনসঙ্গীর পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান দান করুন এবং আমাদেরকে আল্লাহভীরুদের জন্যে আদর্শস্বরূপ দান করুন।’ (সুরা ফুরকান: ৭৪)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এক্ষেত্রে রমযানের ওসিলায় এক্সট্রা বরকত পাওয়া যাবে,এমন বরকতের কোনো কথা কুরআন হাদীসে নেই।

তবে নিয়মিত উপরোক্ত গুলি পড়ার পরামর্শ থাকবে। পাশাপাশি সহবাসের আগে নিম্নোক্ত দোয়া পড়ার পরামর্শ থাকবে। 

দোয়াটি হলো- بِسْمِ اللَّهِ ، اللَّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ ، وَجَنِّبْ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا

অর্থ: হে আল্লাহ! আপনার নামে শুরু করছি, আপনি আমাদের নিকট হতে শয়তানকে দূরে রাখুন। আমাদের এ মিলনের ফলে যে সন্তান দান করবেন, তা হতেও শয়তানকে দূরে রাখুন।’

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (স.) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ আপন স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হওয়ার ইচ্ছা করে তখন উক্ত দোয়া পড়ে যেন মিলিত হয়। এ মিলনে যদি তাদের কিসমতে কোনো সন্তান আসে, সে সন্তানকে শয়তান কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’ (বুখারি: ৬৩৮৮)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...