জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
কুরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছে-
سُبْحَانَ الَّذِي أَسْرَى بِعَبْدِهِ لَيْلًا مِنَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ إِلَى الْمَسْجِدِ الْأَقْصَى الَّذِي بَارَكْنَا حَوْلَهُ لِنُرِيَهُ مِنْ آَيَاتِنَا إِنَّه هُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ
অর্থ: পবিত্র ঐ মহান সত্ত্বা যিনি রাত্রি বেলায় তাঁর বান্দাকে মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত ভ্রমণ করিয়েছেন, যার আশপাশকে আমি বরকতময় করেছি। এটা এজন্য যাতে আমি তাকে আমার নিদর্শনাবলী দেখাতে পারি। (সূরা বনী ইসরাইল আয়াত নং-১)
,
মুফতী মনসুরুল হক সাহেব দাঃবাঃ বলেছেন,
১. রূহানী মি‘রাজ কোনো আশ্চর্যের বিষয় নয়। বরং শারীরিক মি‘রাজই আশ্চর্যের বিষয়। এ দিকে ইংগিত করে আল্লাহ তা‘আলা উক্ত ঘটনার বর্ণনার শুরু করেছেন ‘সুবহানা’ শব্দ দিয়ে। তাছাড়া উক্ত আয়াতে ‘বি আবদিহী’ (অর্থাৎ, নিজের বান্দাকে) শব্দ রয়েছে। যা মি‘রাজ স্বশরীরে হওয়ার প্রমাণ বহন করে।
২. মি‘রাজ যদি স্বাপ্নিক হত তাহলে কেউ মুরতাদ হতো না। কারণ স্বপ্নের কোনো কিছুকে কেউ অস্বীকার করে না।
৩. স্বশরীরে মি‘রাজ হওয়ার ব্যাপারে উম্মতের ইজমা রয়েছে। অতএব প্রসিদ্ধ মি‘রাজকে রূহানী বা স্বাপ্নিক বলে ব্যক্ত করার কোন অবকাশ নেই। (শরহে যুরকানী ৮/১৩৮)
,
একদা রাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত উম্মে হানী রা. এর ঘরে শুয়েছিলেন। রাসূলের অর্ধনিদ্রা অবস্থায় হযরত জিবরীল আ. অন্যান্য ফেরেশতাসহ অবতরণ করেন এবং হুযুর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মসজিদে হারামে নিয়ে যান। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন হাতীমে কা’বায় ঘুমিয়ে পড়েন। হযরত জিবরীল ও মীকাঈল আ. নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জাগিয়ে যমযমের পাশে নিয়ে সীনা মুবারক বিদীর্ণ করে অন্তরাত্মা বের করে যমযমের পানিতে ধুয়ে ইলম ও হিকমতে পরিপূর্ণ করে স্বর্ণের তশতরীতে রাখেন। অতঃপর পুনরায় বক্ষে স্থাপন করে দেন। এরপর বোরাক নামক বাহনে করে হুযুর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মসজিদে আকসা পর্যন্ত নিয়ে যান। অতঃপর সেখান থেকে আসমানে নিয়ে যান। প্রথম আসমানের নিকট গিয়ে জিবরীল আ. দরজা খোলার আবেদন জানান। ফেরেশতাগণ অভিবাদন জানিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বরণ করে নেন। এভাবে সপ্তম আসমান অতিক্রম করেন। এসময়ে যথাক্রমে প্রথম আসমানে হযরত আদম আ., দ্বিতীয় আসমানে ইয়াহইয়া এবং ঈসা আ. তৃতীয় আসমানে হযরত ইউসুফ আ. চতুর্থ আসমানে হযরত ইদরীস আ. পঞ্চম আসমানে হযরত হারুন আ. ষষ্ঠ আসমানে হযরত মূসা আ. সপ্তম আসমানে হযরত ইবরাহীম আ. এর সাথে সাক্ষাৎ হয়। সকলেই হুযুর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অভ্যর্থনা জানান। সপ্তমাকাশ থেকে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম রফরফ নামক বাহনের মাধ্যমে সিদরাতুলমুনতাহা ও আরশে আযীমে গমন করেন। সেখানে অনেক আশ্চর্য ও বিস্ময়কর জিনিস প্রত্যক্ষ করেন। জান্নাত জাহান্নাম স্বচক্ষে দেখেন। পরিশেষে আল্লাহর দীদার ও কালাম লাভে ধন্য হন। এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে উপঢৌকন স্বরূপ পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাযের বিধান নিয়ে জমিনের দিকে প্রত্যাবর্তন করেন। পথিমধ্যে হযরত মূসা আ. এর পরামর্শক্রমে কয়েকবার আল্লাহর নিকট গিয়ে নামাযের সংখ্যা কমানোর আবেদন জানান। অবশেষে পাঁচ ওয়াক্ত নামায (যাতে পঞ্চাশ ওয়াক্তের সওয়াব পাওয়া যাবে।) এর বিধান নিয়ে বাইতুল মুকাদ্দাস হয়ে মক্কায় ফিরে আসেন। (বুখারী শরীফ হাদীস নং ৩৮৮৭, ফাতহুলবারী ৭/২৫০,২৫৯, শরহে যুরকানী ৮/৪২, সীরাতে ইবনে হিশাম ২/১০, খাসায়েসুল কুবরা ১/১৫২)
হিজরত শুধু স্বপ্নে হলে মক্কার কাফেরদের আশ্চর্য হবার কোন প্রয়োজন ছিল না। কারণ স্বপ্নে মানুষ কত কিছুই দেখতে পারে। এতে আশ্চর্য হবার মত কিছু নেই।
মেরাজ সম্পর্কিত হাদীসগুলো ভাল করে অধ্যয়ন করলেই পরিস্কার হয়ে যাবে যে, দ্বিতীয়বারের মেরাজ স্বশরীরে জাগ্রত অবস্থায় হয়েছে স্বপ্নে নয়।
,
হাকীমুল উম্মত আশরাফ আলী থানবী রহঃ লিখেছেন, জমহুর আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআতের মতামত হল, মেরাজ জাগ্রত অবস্থায় স্বশরীরে হয়েছে। এর দলীল হল ইজমায়ে উম্মত। {নশরুত্তীব-৮০}
আল্লামা সুহাইলী রহঃ বলেন,
وَرَأَيْت الْمُهَلّبَ فِي شَرْحِ الْبُخَارِيّ قَدْ حَكَى هَذَا الْقَوْلَ عَنْ طَائِفَةٍ مِنْ الْعُلَمَاءِ وَأَنّهُمْ قَالُوا: كَانَ الْإِسْرَاءُ مَرّتَيْنِ مَرّةً فِي نُوُمِهِ وَمَرّةً فِي يَقَظَتِهِ بِبَدَنِهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ –
قَالَ الْمُؤَلّفُ وَهَذَا الْقَوْلُ هُوَ الّذِي يَصِحّ، وَبِهِ تَتّفِقُ مَعَانِي الْأَخْبَارِ الخ (الروض الأنف شرح سيرت ابن هشام-1/244
মুহাল্লাব বুখারীর ব্যাখ্যাগ্রন্থে আহলে ইলমের এক জামাতের বক্তব্য উদ্ধৃত করেছেন যে, মূলত মিরাজ দুইবার হয়েছে। একবার স্বপ্নে দ্বিতীয়বার জাগ্রত অবস্থায় স্বশরীরে। {আররওজুল আনফ ফী শরহিস সীরাতিন নাবাবিয়্যাহ লিইবনে হিশাম-১/২৪৪}
,
★মহানবী স. কি মিরাজে আল্লাহ তায়ালা কে দেখেছেন?
এই বিষয়ে বিস্তারিত জানুনঃ
,
(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا ابْنُ فُضَيْلٍ، عَنِ الْمُخْتَارِ بْنِ فُلْفُلٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " أُنْزِلَتْ عَلَىَّ آنِفًا سُورَةٌ " . فَقَرَأَ بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ ( إِنَّا أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ ) حَتَّى خَتَمَهَا . قَالَ " هَلْ تَدْرُونَ مَا الْكَوْثَرُ " . قَالُوا اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ " فَإِنَّهُ نَهْرٌ وَعَدَنِيهِ رَبِّي فِي الْجَنَّةِ " .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এইমাত্র আমার উপর একটি সূরাহ অবতীর্ণ হয়েছে। অতঃপর তিনি পড়লেনঃ ‘‘বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম, ইন্না আ’ত্বায়না কাল-কাওসার .....’’ সূরাটির শেষ পর্যন্ত। তিনি বললেন, তোমরা কি জান! কাওসার কি? তাঁরা বললেন, এ বিষয়ে আল্লাহ এবং তাঁর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ই সর্বাধিক অবগত। তিনি বললেন, তা হচ্ছে একটি নহর, আমার রব্ব আমাকে জান্নাতে তা দান করবেন বলে অঙ্গীকার করেছেন।
(মুসলিম ৯০৩,আবু দাউদ ৭৮৪)
,
حَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنِ الْمُخْتَارِ بْنِ فُلْفُلٍ، قَالَ: سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ: أَغْفَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِغْفَاءَةً، فَرَفَعَ رَأْسَهُ مُتَبَسِّمًا، فَإِمَّا قَالَ لَهُمْ، وَإِمَّا قَالُوا لَهُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ لِمَ ضَحِكْتَ؟ فَقَالَ: إِنَّهُ أُنْزِلَتْ عَلَيَّ آنِفًا سُورَةٌ فَقَرَأَ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ إِنَّا أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ حَتَّى خَتَمَهَا، فَلَمَّا قَرَأَهَا قَالَ: هَلْ تَدْرُونَ مَا الْكَوْثَرُ؟ قَالُوا: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، قَالَ: فَإِنَّهُ نَهْرٌ وَعَدَنِيهِ رَبِّي عَزَّ وَجَلَّ فِي الْجَنَّةِ، وَعَلَيْهِ خَيْرٌ كَثِيرٌ، عَلَيْهِ حَوْضٌ تَرِدُ عَلَيْهِ أُمَّتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ، آنِيَتُهُ عَدَدُ الْكَوَاكِبِ
আল-মুখতার ইবনু ফুলফুল সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তন্দ্রাচ্ছন্ন হলেন। অতঃপর মুচকি হেসে মাথা তুলে তিনি তাদেরকে অথবা তাঁকে তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কেন হাসলেন? তিনি বললেন, এইমাত্র আমার উপর একটি সূরা নাযিল হয়েছে। অতঃপর তিনি পড়লেন, পরম করুণাময় ও দয়ালু আল্লাহর নামে। ‘‘নিশ্চয়ই আমি আপনাকে আল-কাওসার দান করেছি।’’ এভাবে তিনি সূরাটি পাঠ শেষ করে বললেন, তোমরা কি জানো কাওসার কী? তারা বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি বলেন, তা এমন একটি পানির ঝর্ণা যা আমার রব জান্নাতে সৃষ্টি করে রেখেছেন। তাতে অসংখ্য কল্যাণ বিদ্যমান। তাতে হাওয ও কাওসারও রয়েছে। আমার উম্মতগণ কিয়ামাতের দিন সেখানে উপস্থিত হবে। এর পানপাত্রের সংখ্যা হবে (আকাশের) তারকার সমপরিমাণ।
(মুসলিম,নাসায়ী,আবু দাউদ ৪৭৪৭)
,
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُسْلِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا الْكَوْثَرُ قَالَ " ذَاكَ نَهْرٌ أَعْطَانِيهِ اللَّهُ يَعْنِي فِي الْجَنَّةِ أَشَدُّ بَيَاضًا مِنَ اللَّبَنِ وَأَحْلَى مِنَ الْعَسَلِ
আনাস ইবনু মালিক (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, হাওযে কাওসার প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ তা একটি ঝর্ণা যা আল্লাহ তা'আলা জান্নাতে আমাকে প্রদান করেছেন। এর পানি দুধের চেয়ে সাদা এবং মধুর চেয়ে মিষ্টি।
মিশকাত (৫৬৪১), সহীহাহ (২৫১৪),তিরমিজি ২৫৪২)
,
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الْكَوْثَرُ نَهْرٌ فِي الْجَنَّةِ حَافَّتَاهُ مِنْ ذَهَبٍ وَمَجْرَاهُ عَلَى الدُّرِّ وَالْيَاقُوتِ تُرْبَتُهُ أَطْيَبُ مِنَ الْمِسْكِ وَمَاؤُهُ أَحْلَى مِنَ الْعَسَلِ وَأَبْيَضُ مِنَ الثَّلْجِ " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
হান্নাদ (রহঃ) ..... আবদুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কাওছার হল জান্নাতের একটা নহর। এর দুই তীর হল স্বর্ণের, মতি ও ইয়াকুতের উপর দিয়ে তা প্রবাহিত হয়। এর মাটি মিশক-আম্বার থেকে সুগন্ধময়। এর পানি মধু থেকে মিষ্টি এবং তুষার থেকে শুভ্র।
ইবনু মাজাহ ৪৩৩৪, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৩৩৬১ [আল মাদানী প্রকাশনী] তিরমিজি ৩৩৬১)
,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ -رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ- قَالَ: بَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ يَوْمٍ بَيْنَ أَظْهُرِنَا إِذْ أَغْفَى إِغْفَاءَةً ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ مُتَبَسِّمًا، فَقُلْنَا: مَا أَضْحَكَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟! قَالَ: « أُنْزِلَتْ عَلَيَّ آنِفًا سُورَةٌ فَقَرَأَ: بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ ﴿إِنَّآ أَعۡطَيۡنَٰكَ ٱلۡكَوۡثَرَ ١ فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَٱنۡحَرۡ ٢ إِنَّ شَانِئَكَ هُوَ ٱلۡأَبۡتَرُ ٣﴾ ثُمَّ قَالَ: أَتَدْرُونَ مَا الْكَوْثَرُ؟» فَقُلْنَا: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ قَالَ: «فَإِنَّهُ نَهْرٌ وَعَدَنِيهِ رَبِّي -عَزَّ وَجَلَّ- عَلَيْهِ خَيْرٌ كَثِيرٌ هُوَ حَوْضٌ تَرِدُ عَلَيْهِ أُمَّتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ آنِيَتُهُ عَدَدُ النُّجُومِ فَيُخْتَلَجُ الْعَبْدُ مِنْهُمْ فَأَقُولُ: رَبِّ إِنَّهُ مِنْ أُمَّتِي فَيَقُولُ: مَا تَدْرِي مَا أَحْدَثَتْ بَعْدَكَ » . ( م, د ) صحيح
আনাস ইব্ন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মাঝে ছিলেন, হঠাৎ তিনি তন্দ্রা গেলেন, অতঃপর হাসতে হাসতে মাথা তুললেন। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল কিসে আপনাকে হাসাচ্ছে?! তিনি বললেন, “এ মুহূর্তে আমার ওপর একটি সূরা নাযিল করা হয়েছে, অতঃপর তিনি পড়লেন,
إِنَّآ أَعۡطَيۡنَٰكَ ٱلۡكَوۡثَرَ ١ فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَٱنۡحَرۡ ٢ إِنَّ شَانِئَكَ هُوَ ٱلۡأَبۡتَرُ [الكوثر, ١، ٤]
“নিশ্চয় আমি তোমাকে আল-কাউসার দান করেছি। অতএব তোমার রবের উদ্দেশ্যেই সালাত পড় এবং নহর কর।নিশ্চয় তোমার প্রতি শত্রুতা পোষণকারীই নির্বংশ”। অতঃপর তিনি বললেন, “তোমরা জান কাউসার কি?” আমরা বললাম, আল্লাহ ও তার রাসূল ভাল জানেন। তিনি বললেন, “এটা একটা নহর, এর ওয়াদা আল্লাহ আমার নিকট করেছেন, তাতে রয়েছে প্রচুর কল্যাণ। এটা এক হাউজ তাতে আমার উম্মত গমন করবে, তার পাত্রগুলো নক্ষত্রের সংখ্যার ন্যায়, তাদের থেকে এক বান্দাকে ছো মেরে নেয়া হবে, আমি বলব, হে আমার রব, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত, তিনি বলবেন, তুমি জান না তোমার পর তারা কি আবিষ্কার করেছে”। [মুসলিম ও আবু দাউদ] হাদিসটি সহিহ
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
এই হাদীস গুলোর মাধ্যমে জানা গেলো যে হাউজে আসলে কি জিনিস।
কেয়ামতের দিন সবাইকে যখন পুনরুত্থিত করা হবে তখন জেগে ওঠার পর সবাই অনেক বেশী পিপাসা নিয়ে তৃষ্ণা নিবারণ করার চেষ্টা করবে।
তখন আল্লাহ তায়ালা রাসুলুল্লাহ সাঃ কে এই নিয়ামত দান করবেন।
যাদেরকে তিন সেসময় পানি পান করাবেন,তারা আর কোনো সময়েই পিপাসিত হবেননা।
,
★এই হাউজে কাউসার যে আল্লাহ তায়ালা রাসুলুল্লাহ সাঃ দিবেন,সেটি সুরা কাউসার নাজিল করেই আল্লাহ তায়ালা রাসুলুল্লাহ সাঃ কে জানিয়েছেন।
এটাই সম্পর্কের কারন।
,
★লউহে মাহফুজে কুরআন,তাকদীর লিপিবদ্ধ রয়েছে।
ইবনে কাছির (রহঃ) বলেন:
فِي لَوْحٍ مَحْفُوظ (অর্থ-লাওহে মাহফুযে তথা সুরক্ষিত ফলকে রয়েছে): অর্থাৎ এটি উচ্চ পরিষদ কর্তৃক সংযোজন, বিয়োজন, বিকৃতি ও পরিবর্তন থেকে সংরক্ষিত।[তাফসিরে ইবনে কাছির (৪/৪৯৭, ৪৯৮]
মানুষের ভাগ্যলিপিসহ মহাবিশে কেয়ামত পর্যন্ত যা যা ঘটবে আল্লাহ তায়ালা সব কিছু লাওহে মাহফুজে পুঙ্খানুপুঙ্খ লিখে রেখেছেন।
সেই লেখার বিন্দুমাত্র পরিবর্তন ও হেরফের হওয়া সম্ভব নয়। তাফসিরে তাবারিতে উল্লেখ রয়েছে, লাওহে মাহফুজকে আল্লাহ তায়ালা বৃদ্ধি ও হ্রাস থেকে সংরক্ষণ করেন। অর্থাৎ তাতে যা লিখিত হয়েছে তা কমেও না বাড়েও না।
তাফসিরে ইবনে কাসিরে সুরা বুরুজের ‘বরং এটা মহান কোরআন। লাওহে মাহফুজে লিপিবদ্ধ’ এই আয়াতের তাফসিরে উল্লেখ রয়েছে, লাওহে মাহফুজ হ্রাস-বৃদ্ধি ও পরিবর্তন-বিচ্যুতি থেকে মুক্ত।
,
(০৩)
জায়নামাজ বিছিয়ে রাখলে কোনো গুনাহ নেই।
তবে নামাজের জন্য যেহেতু জায়গা পাক হওয়া শর্ত।
তাই জায়নামাজে বিছিয়ে রাখলে নাপাক পা নিয়ে কেহ তার উপর দিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রাখলে,বা অন্য কোনোভাবে উক্ত জায়নামাজে নাপাক বস্তু লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে জায়নামাজ বিছিয়ে রাখবেননা।