আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
286 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (21 points)
আসসালামু আলাইকুম।

১) কেউ যদি রিজিকের জন্য হারাম কাজ করার জন্য জোরাজুরি করে তখন তাকে "আগে অবাধ্য ছিলাম তখনো আল্লাহ আমার রিজিকের ব্যবস্হা করেছেন। এখন আল্লাহর কথা মেনে চলি, এখন আল্লাহ আমাকে অবশ্যই খাওয়াবেন" একথা বলাতে কি তার দ্বীনদারিতা নিয়ে আত্মগর্ব বা অহংকার প্রকাশ পেয়েছে?
২)" অহংকার ছোট শিরক। যেভা অহংকার করছে সে আল্লাহর সাথে প্রতিদ্বন্দিতায় লিপ্ত। আল্লাহর বড়ত্ব , তার চাদর নিয়ে টানাটানি করতে চাচ্ছে। আল্লাহর মর্যাদায় নিজেকে শরীক করতে চাচ্ছে।" - এই কথাগুলো কি সঠিক?

1 Answer

+1 vote
by (710,120 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
অহংকার কাকে বলে? কোন কোন বিষয় গুলো অহংকারের মধ্যে পড়ে? অহংকারের কারণ সমূহ কি? কিভাবে অহংকার দূর করব?

#অন্যের চাইতে নিজেকে বড় মনে করাকেই মূলত অহংকার বলে। অহংকার মানব স্বভাবের একটি নিকৃষ্ট একটি অংশ। 
একে দমন করে সৎকর্মে লাগানোর মধ্যেই মানুষের কৃতিত্ব নির্ভর করে।

রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তির অন্তরে এক সরিষা দানা পরিনাম অহংকার থাকবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। [সহীহ মুসলিম, হাদিসঃ ৯১]

অহংকারের কতিপয় নিদর্শনঃ
১) অন্যকে নিজের তুলনায় ছোট মনে করা,
২) অন্যের কাছে নিজের বড়ত্ব যাহির করা,
৩) অধীনস্তদের সাথে দুর্ব্যবহার করা,
৪) অন্যের আনুগত্য ও সেবা করাকে নিজের জন্য অপমানজনক মনে করা,
৫) দাম্ভিকতার সাথে সত্যকে প্রত্যাখ্যান করা,
৬) নিজের ভুলের উপরে জিদ করে অটল থাকা,
৭) মানুষের সাথে নম্রতা পরিহার করে সর্বদা কঠোর আচরণ করা,
৮) নিজেকে অভাবমুক্ত মনে করা,
৯) জ্ঞান অর্জন না করা,
১০) অন্যের উপদেশ গ্রহণ না করা ইত্যাদি

অহংকারের কারন সমূহঃ
১) জ্ঞানের স্বল্পতা,
২) বংশ মর্যাদা,
৩) পদমর্যাদা,
৪) ভালর প্রতি হিংসা,
৫) ধন- সম্পদ ,
৬) নেক আমল ।

অহংকার দূরীকরণের উপায় সমূহঃ
১) নিজের সৃষ্টি নিয়ে ভাবা,
২) মৃত্যুর কথা সর্বদা স্মরণ করা,
৩) হাশরের ময়দানে জবাবদিহিতার ভঁয়ে ভীত থাকা,
৪) আমার প্রত্যেকটি কাজ আল্লাহ্ দেখেন এই ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাস রাখা
৫) গরীব ও ইয়াতীমের সহযোগিতা করা,
৬) অসুস্থকে সেবা প্রদান অথবা সেবা প্রদানে সহযোগিতা করা,
৭) দম্ভভরে পৃথিবীতে পদচারনা করা থেকে নিজেকে বিরত রাখা,
৮) গোপন ও রিয়ামুক্ত আমলে নিজেকে অভ্যস্ত করা,
৯) আল্লাহর ভঁয়ে গোপনে ক্রন্দন করা,
১০) অন্যের সাথে নম্র আচরণ করা,
১১) অন্যের ভুল ক্ষমা করা,
১২) অহংকার বশত অন্যের সাথে অসদাচরণ করে ফেললে তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেয়া,
১৩) ভুলক্রমে অহংকার প্রকাশ পেলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া,
১৪) অহংকার থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া।
১৫) অগ্রগামী হয়ে অন্যের আগেই সালাম দেয়া,

আল্লাহ্ সূরা লুকমানের ১৮ নাম্বার আয়াতে বলেন,
অহংকারের বশবর্তী হয়ে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা করোনা এবং পৃথিবীতে গর্বভরে বিচরণ করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ কোন অহংকারীকে পছন্দ করেন না। [সূরাঃ লুকমান, আয়াতঃ ১৮]

আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে অহংকার নামক ব্যাধি এবং এর কুফল থেকে সবাইকে রক্ষা করুন।(সংগৃহিত)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

(১)
যদি কেউ বলে,
"আগে অবাধ্য ছিলাম তখনো আল্লাহ আমার রিজিকের ব্যবস্হা করেছেন। এখন আল্লাহর কথা মেনে চলি, এখন আল্লাহ আমাকে অবশ্যই খাওয়াবেন" 

একথা বলাতে তার দ্বীনদারিতা নিয়ে আত্মগর্ব বা অহংকার প্রকাশ পায়নি বরং এদ্বারা তার তাওয়াক্কুল বা খোদা ভরসা প্রকাশ পেয়েছে।যদি তার সঠিক নিয়ত থাকে,তাহলে আল্লাহর সাহায্য তার নিকট আসবে।আর যদি লোকদেখানো উদ্দেশ্য হয়,তাহলে আল্লাহর সাহায্য থেকে মাহরুম হবে।

(২)

'অহংকার ছোট শিরক। যে অহংকার করছে সে আল্লাহর সাথে প্রতিদ্বন্দিতায় লিপ্ত। আল্লাহর বড়ত্ব , তার চাদর নিয়ে টানাটানি করতে চাচ্ছে। আল্লাহর মর্যাদায় নিজেকে শরীক করতে চাচ্ছে'

এ কথাগুলো সঠিক।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (710,120 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...