যাকাত সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿خُذۡ مِنۡ أَمۡوَٰلِهِمۡ صَدَقَةٗ تُطَهِّرُهُمۡ وَتُزَكِّيهِم بِهَا وَصَلِّ عَلَيۡهِمۡۖ إِنَّ صَلَوٰتَكَ سَكَنٞ لَّهُمۡۗ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ ١٠٣﴾ [التوبة: 103]
“তাদের সম্পদ থেকে সদকা নাও, এর মাধ্যমে তাদেরকে তুমি পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করবে এবং তাদের জন্য দো‘আ কর, নিশ্চয় তোমার দো‘আ তাদের জন্য প্রশান্তিদায়ক”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৩]
অপর আয়াতে তিনি বলেন:
﴿وَٱلَّذِينَ يَكۡنِزُونَ ٱلذَّهَبَ وَٱلۡفِضَّةَ وَلَا يُنفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ فَبَشِّرۡهُم بِعَذَابٍ أَلِيمٖ ٣٤﴾ [التوبة:34]
“যারা সোনা ও রূপা পুঞ্জীভূত করে রাখে এবং তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, তুমি তাদেরকে বেদনাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দাও”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৩৪]
অপর আয়াতে তিনি বলেন:
﴿وَلَا يَحۡسَبَنَّ ٱلَّذِينَ يَبۡخَلُونَ بِمَآ ءَاتَىٰهُمُ ٱللَّهُ مِن فَضۡلِهِۦ هُوَ خَيۡرٗا لَّهُمۖ بَلۡ هُوَ شَرّٞ لَّهُمۡۖ سَيُطَوَّقُونَ مَا بَخِلُواْ بِهِۦ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِۗ ١٨٠﴾ [آل عمران:180]
“আল্লাহ যাদেরকে তার অনুগ্রহ থেকে যা দান করেছেন তা নিয়ে যারা কৃপণতা করে তারা যেন ধারণা না করে যে, তা তাদের জন্য কল্যাণকর, বরং তা তাদের জন্য অকল্যাণকর, যা নিয়ে তারা কৃপণতা করেছিল, কিয়ামত দিবসে তা দিয়ে তাদের বেড়ি পরানো হবে”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৮]
,
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী স্বর্ণের যাকাত যখন আদায় করবেন, তখনকার বাজারদর অনুযায়ী যাকাত আদায় করতে হবে। সুতরাং যাকাত বর্তমান বাজার মূল্য হিসাবেই আদায় করতে হবে।
কেননা যাকাত ওয়াজিব হচ্ছে স্বর্ণের উপর। আপনার কাছে যে স্বর্ণ আছে তার ২.৫% যাকাত দিতে হবে। সুতরাং যাকাত আদায়ের সময় স্বর্ণ দিবেন বা তখন স্বর্ণের যে মূল্য হয় তা আদায় করবেন।
(আলজামেউস সগীর পৃ. ১৫; বাদায়েউস সানায়ে ২/১১১; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/১৬৭; রদ্দুল মুহতার ২/২৮৬)
وتعتبر القيمة يوم الوجوب وقال: يوم الأداء (الدر المختار مع رد المحتار، زكريا-3\211، كرتاشى-2\276، فتح القدير، كتاب الزكاة، فى العروض-2\219، مصرى)
সারমর্মঃ-
যাকাত ওয়াজিব হওয়ার দিনের মূল্য গ্রহনযোগ্য হবে। কেহ কেহ বলেছেন যাকাত আদায়ের দিনের মূল্য গ্রহনযোগ্য হবে।
যাকাত দেওয়ার নিয়ম: ব্যক্তির মালিকানায় যে ক্যারেট স্বর্ণ রয়েছে সেই ক্যারেটের একগ্রাম স্বর্ণের বাজার দর জানবে প্রথম। যদি একাধিক ক্যারেটের স্বর্ণ থাকে, যে ক্যারেট স্বর্ণ বেশি আছে তার বাজার দর জানবে, অতঃপর একগ্রাম স্বর্ণের মূল্যকে তার নিকট যে ক’গ্রাম স্বর্ণ রয়েছে তার সংখ্যা দিয়ে পূরণ দিবে। এভাবে স্বর্ণের গ্রামকে মুদ্রায় পরিণত করবে, অতঃপর ক্যালকুলেটর দিয়ে মোট মূল্য থেকে ২.৫% বের করবে, যে অংক আসবে তাই স্বর্ণের যাকাত।
উদাহরণ: কেউ ২১ ক্যারেট ১০০ গ্রাম স্বর্ণের মালিক, সে তার যাকাত বের করার জন্য প্রথম ২১ ক্যারেট স্বর্ণের বাজার দর জানবে, যদি একগ্রাম স্বর্ণের দাম হয় ১০,০০০ টাকা, যাকাতের হিসেব হবে নিম্নরূপ: ১০০ (গ্রাম-স্বর্ণ)* ১০,০০০ (টাকা, যা একগ্রাম স্বর্ণের মূল্য)* ২.৫% (যাকাত) অর্থাৎ ১০০* ১০,০০০* ২.৫%=২৫০০০ টাকা।
আপনার নিকট যত গহনা আছে,গলার স্বর্ণের চেইন ও কানের দুল যেটা সবসময় পরেন,এসব কিছু মিলে কি সাড়ে ৭ ভড়ি স্বর্ণ হয়?
যদি এসব কিছু মিলে সাড়ে ৭ ভড়ি স্বর্ণ না হয়,এবং আপনার মালিকানায় কোনো রুপা বা দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত সামান্য ৫০/১০০ টাকাও না থাকে,সেক্ষেত্রে আপনার উপর যাকাত ফরজ হবেনা।
আর যদি এসব কিছু মিলে সাড়ে ৭ ভড়ি স্বর্ণ হয়,অথবা আপনার মালিকানায় কোনো রুপা বা দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত সামান্য ৫০/১০০ টাকা হলেও থাকে,সেক্ষেত্রে আপনার উপর যাকাত ফরজ হবে।
তারা এসব কিছুর আনুমানিক যেই মূল্য বলবে,সব মূল্য যোগ করে তার চল্লিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত দিতে হবে।