আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
116 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আজ থেকে প্রায় চার বছর আগে দেখছি।স্বপ্নে আমি দেখি এক বয়স্ক লোক কে যিনি সাদা জুব্বা আর সবুজ পাগড়ি পড়া তার সামনে এক ছেলে বসা। তার সাথে কথা বলতেছে আর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। যার সুরুত আমাদের রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে মিলে।যেমনটা তিরমিজি তে পড়েছি।আলহামদুলিল্লাহ! এরপর দেখি আমি একটা পালঙ্কের উপর। যা দেখতে রাজকীয় স্টািলের।সাদা জামা পড়া।আমি ওড়নার আস্তিন দেখে বলতেছি কি সুন্দর জামাটা,মুক্তার কাজ করা।এর মধ্যে দু জন মেয়েকে দেখি তারা আমাকে তোমাকে হুজুর ডাকতেছে, আমি বলি কোন হুজুর?তারপর ওরা জোর করে বলতেছে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাও উনি তোমার জন্য বসে আছে।তারপর দেখি আমি এক কামরার সামনে।আমি উনাকে সালাম দেই, ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দিলে ঢুকি।তারপর চারপাশে তাকাতে নিলে উনি বলে তুমি তাকিও না ভয় পাবে ফেরেশতারা আমাকে পাহাড়া দিচ্ছে। ওয়াল্লাহি আমি তখন পিছনে অদ্ভুত আকৃতির ছায়া দেখি এরপর আর তাকাই না।তারপর উনার খাটের উপর বসে মুসাফাহা করি। তখনও ঐ ছেলেটা পাশে বসা।তিনি তারপর আমাকে বলে আমি তার সাথে তোমার বিবাহ দিতে চাই তুমি রাজি? আমি সম্মতি জানাই এবং আমাদের বিয়ে হয়।তারপর আমাদের হাত একত্রিত করে দুয়া করেন।সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। এটার ব্যাখ্যা কি?


এখন আমি যেই ছেলেকে দেখেছি তাকে আমার পরিচিত মনে হয় আবার অপরিচিত ও।তার চেহারা কিছু টা আমার মনে আছে। পরিচিত যাকে মনে হয় তার সাথে মিলালে আমি ভীষণ অবাক হই কারন সে ছেলে গান শোনে, দাড়ি ছাটে,তার ইনকাম ও সন্দিহান।আমি ভীষণ চিন্তিত এ নিয়ে যদিও জানি গায়েবের বিষয় আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।আর আমার বিয়ে কি সত্যি ই দুনিয়ায় হবে নাকি আখেরাতে?গ্যারান্টি দিয়ে নয় অনুমান ভিত্তিক বলবেন।

এ স্বপ্ন দেখার আগে আমার আকাঙ্খা ছিলো হুজুর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার বিয়ে পড়াবেন। আমি উত্তম জীবনসঙ্গীর জন্য দুয়া চালিয়ে যাচ্ছি।

1 Answer

0 votes
by (566,940 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

আপনার স্বপ্ন খুবই মুবারক স্বপ্ন। রাসূল সাঃ কে দেখেছেন মানে আপনার আমল সুন্দর। আপনি আরো বেশি বেশি সুন্নতের পাবন্দ হতে চেষ্টা করুন। বেশি বেশি দরূদ শরীফ পাঠ করুন। আল্লাহ তাআলা আপনাকে রাসূল সাঃ এর একজন সাচ্চা উম্মত ও প্রিয়ভাজনদের কাতারে শামিল করেই ইনশাআল্লাহ হাশর করাবেন।

বেশি বেশি দরূদ পাঠ এবং সুন্নতের পাবন্দি রক্ষা করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যান। কোন সুন্নতের প্রতি যেন অবহেলা না হয়। আল্লাহ তাআলা আপনার মঙ্গল করুন।
,
রাসূল সাঃ এর আকৃতি শয়তান ধারণ করতে পারে না। তাই স্বপ্নে রাসূল সাঃ দৃষ্টিগোচর হয়েছে বলে প্রবল ধারনা হলে, বুঝতে হবে রাসূল সাঃ কেই দেখছে। অন্য কাউকে নয়।

তবে কথা হল স্বপ্নে পরিদৃষ্ট রাসূল সাঃ এর আকৃতি ও অবস্থা সম্পর্কে। স্বপ্নে পরিদৃষ্ট আকৃতিও অবস্থান কি রাসূল সাঃ এর প্রকৃত আকৃতি ও অবস্থান? নাকি মিসালী তথা প্রতিচ্ছবিমূলক?

ওলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে একমত যে, স্বপ্নযোগে পরিদৃষ্ট রাসূল সাঃ এর চেহারার আকৃতি ও অবস্থান রাসূল সাঃ এর প্রকৃত চেহারা ও অবস্থান নয়। বরং এটি মিসালী তথা প্রতিচ্ছবিমূলক।

তাই স্বপ্নে রাসূল সাঃ এর আকৃতি ও অবস্থান দেখে একথা বলা যাবে না যে, স্বপ্নে যেমন দেখেছে হুবহু সেটাই রাসূল সাঃ এর আসল ও প্রকৃত চেহারা ও আকৃতি। বরং সেটি ছিল একটি প্রতিচ্ছবিমূলক আকৃতি।

তাই একাধিক ব্যক্তি রাসূল সাঃ এর আকৃতি ও অবস্থান একাধিক ধরণের হতে পারে।

তবে যেহেতু শয়তান রাসূল সাঃ এর আকৃতি ধারণ করতে পারে না, তাই স্বপ্নে যদি ইয়াকিন হয় যে, পরিদৃষ্ট ব্যক্তি রাসূল সাঃ, তাহলে বিশ্বাস করে নিবে ব্যক্তি রাসূল সাঃ কেই দেখছে। তবে আকৃতিটা হুবহু রাসূল সাঃ এর হওয়া জরুরী নয়।

আরেকটি বিষয় হল, স্বপ্নে রাসূল সাঃ কে তেমন দেখতে পাওয়া যায়, যেমন ব্যক্তির ঈমান ও আমলের অবস্থা হয়ে থাকে। যদি রাসূল সাঃ এর অবস্থা ভাল দেখে স্বপ্নে, তাহলে স্বপ্ন দেখাকারী ব্যক্তির ঈমান ও আমল ভাল হওয়ার দলীল এটা। আর যদি খারাপ অবস্থায় রাসূল সাঃ কে দেখে, তাহলে বুঝতে হবে যে দেখছে তার ঈমান বা আমলে সমস্যা আছে।

তেমনি কেউ যদি রাসূল সাঃ কে সুন্দর অবয়বে দ্বীনী কাজ করতে দেখে, তাহলে বুঝতে হবে লোকটির ঈমানী কাজে আগ্রহ আছে। এক কথায় রাসূল সাঃ কে যে অবস্থায় পরিদৃষ্ট করবে স্বপ্নে, নিজের ঈমান ও আমলের হালাত তেমনি মনে করে নিবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

أن أبا هريرة قال : سمعت النبي صلى الله عليه و سلم يقول ( من رآني في المنام فسيراني في اليقظة ولا يتمثل الشيطان بي 

হযতর আবূ হুরায়রা রাঃ বলেনঃ রাসূল সাঃ বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নযোগে দেখল, সে যেন আমাকে বাস্তবেই দেখল। কারণ শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬৫৯২, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৬০৫৬, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৬০৫২, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৫০২৫ , সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২১৩৯, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৩৯০৫, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২২৭৬}

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনার স্বপ্ন খুবই মুবারক স্বপ্ন।
আপনি দরুদ শরীফ বেশি বেশি পাঠ করবেন,সুন্নাতের উপর পূর্ণ আমল চালিয়ে যাবেন।

নির্দিষ্ট সেই ছেলেটির সাথে আপনার বিবাহ হতে পারে। তবে এটিকে পূর্ণ নিশ্চয়তার সহিত বলা যায়না যে তার সাথে বিবাহ হবেই।

বিপরীতও হতে পারে।

সুতরাং এক্ষেত্রে দ্বীনদার উত্তম জীবনসঙ্গীর জন্য দুয়া চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ রইলো। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...