কুরআন তেলাওয়াত বুঝে করুক বা না বুঝে করুক প্রতিটি হরফের বিনিময়ে দশটি নেকী রয়েছে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: مَنْ قَرَأَ حَرْفًا مِنْ كِتَابِ اللّٰهِ فَلَه بِه حَسَنَةٌ وَالْحَسَنَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا لَا أَقُولُ: اَلٓمٓ حَرْفٌ. أَلْفٌ حَرْفٌ وَلَامٌ حَرْفٌ وَمِيمٌ حَرْفٌ. رَوَاهُ التِّرْمِذِي
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাবের কোন একটি অক্ষরও পাঠ করবে, সে নেকী পাবে। আর নেকী হচ্ছে ‘আমালের দশ গুণ। আমি বলছি না যে, (الٓمٓ) ‘আলিফ লাম মীম’ একটি অক্ষর। বরং ‘আলিফ’ একটি অক্ষর, ‘লাম’ একটি অক্ষর ও ‘মীম’ একটি অক্ষর। (তাই আলিফ, লাম ও মীম বললেই ত্রিশটি নেকী পাবে)।
সহীহ : তিরমিযী ২৯১০, সহীহাহ্ ৩৩২৭, সহীহ আত্ তারগীব ১৪১৬, সহীহ আল জামি‘ ৬৪৬৯, দারিমী ৩৩১১।
আরো জানুনঃ-
তবে বুঝে পাঠ করলে অতিরিক্ত ছওয়াব পাওয়া যাবে। কেননা কুরআন তেলাওয়াতের মূল উদ্দেশ্য হ’ল উপদেশ গ্রহণ করা, যার জন্য কুরআন বুঝা আবশ্যক।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
کِتٰبٌ اَنۡزَلۡنٰہُ اِلَیۡکَ مُبٰرَکٌ لِّیَدَّبَّرُوۡۤا اٰیٰتِہٖ وَ لِیَتَذَکَّرَ اُولُوا الۡاَلۡبَابِ ﴿۲۹﴾
এটা মুবারক কিতাব, এটা আমরা আপনার প্রতি নাযিল করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসমূহে গভীরভাবে চিন্তা করে এবং যাতে বোধশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিরা গ্ৰহণ করে উপদেশ।
(সুরা সোয়াদ ২৯)
اَفَلَا یَتَدَبَّرُوۡنَ الۡقُرۡاٰنَ اَمۡ عَلٰی قُلُوۡبٍ اَقۡفَالُہَا ﴿۲۴﴾
তবে কি তারা কুরআন নিয়ে গভীর চিন্তা করে না? নাকি তাদের অন্তরসমূহে তালা রয়েছে?
(সুরা মুহাম্মাদ ২৪)
কুরআন না বুঝে তেলাওয়াত করলে ছওয়াব পাওয়া যাবে। তবে বুঝে পড়া, অনুধাবন করা ও তদনুযায়ী আমল করাই কুরআন তেলাওয়াতের মূল উদ্দেশ্য ও অধিক ছওয়াবের কারণ।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
حَدَّثَنَا الْعَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْوَاسِطِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ غَالِبٍ الْعَبَّادَانِيُّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زِيَادٍ الْبَحْرَانِيِّ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " يَا أَبَا ذَرٍّ لأَنْ تَغْدُوَ فَتَعَلَّمَ آيَةً مِنْ كِتَابِ اللَّهِ خَيْرٌ لَكَ مِنْ أَنْ تُصَلِّيَ مِائَةَ رَكْعَةٍ وَلأَنْ تَغْدُوَ فَتَعَلَّمَ بَابًا مِنَ الْعِلْمِ عُمِلَ بِهِ أَوْ لَمْ يُعْمَلْ خَيْرٌ لَكَ مِنْ أَنْ تُصَلِّيَ أَلْفَ رَكْعَةٍ " .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেনঃ হে আবূ যার! সকালবেলা কুরআনের একটি আয়াত শিক্ষা করা তোমার জন্য একশত রাকআত (নফল) সালাত আদায়ের চেয়ে উত্তম। সকালবেলা জ্ঞানের কিছু অংশ শিক্ষা করা তোমার জন্য এক হাজার রাকআত সালাত আদায়ের চেয়ে উত্তম, তদনুযায়ী কাজ করা হোক বা না হোক।
(সুনানে ইবনে মাজাহ ২১৯)
উপরোক্ত হাদীসে সকালবেলা কুরআনের একটি আয়াত শিক্ষা করা একশত রাকআত (নফল) সালাত আদায়ের চেয়ে উত্তম বলা হয়েছে,অনেকের মতে এখানে কুরআনের আয়াতের অর্থ ,তাফসীর , নাজিলের প্রেক্ষাপট এবং আয়াতের শিক্ষা ইত্যাদি বুঝে পড়লে উক্ত ছওয়াব পাওয়া যাবে উল্লেখ রয়েছে।