আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
130 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (16 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম
১) কেউ যদি এটা ৪ রাকাত নামাজে,দুই রাকাতে ২ টা সিজদাহ দিয়েছি ৯০% সিওর, কিন্তু এটা ৩য় রাকাতে ভাবতেছিলাম আরেকটা সিজদাহ দিব কিনা এটা ভাবতে ভাবতে মেইন সিদ্ধান্তে উপনিত হলাম যে দিব আর সেটা দিলাম শেষ বৈঠকে দুয়া মাসুরা পড়ার পর, এবং তারপর সাহু সিজদাহ দিয়ে নিলাম। নামাজ কি হবে?

২) আমার যদি এরকম সন্দেহ (সিজদাহ একটা দিয়েছি নাকি দুইটা)শুরুতেই হয় আর সাথে সাথে সিজদাহ না দিয়ে আমি শেষ রাকাতে সালাম ফেরানোর আগে একটি সিজদাহ দিয়ে একপাশে সালাম ফিরিয়ে আবার দুইটি সিজদাহ দুয়ে তাশাহুদ,দরুদ,দুয়া মাসুরা পড়ে এক্সুইদিকে সালাম ফিরিয়ে নিই তাহলে কি নামাজ হবে?

৩) সাহু সিজদাহ ওয়াজিব হলে,যদি কেউ একদিকে সালাম ফিরিয়ে ভুলে একটা সিজদাহ দেয় বা এটা নিয়ে সন্দেহ হয় তাহলে করণীয় ক

৫) শেষ বৈঠকে প্রথমে তাশাহুদ,দর‍্যদ,দুয়া মাসুরা শেষ করে একদিকে সালাম ফিরিয়ে আল্লহু আকবার বলে একটি সিজদাহ দিব এবং সিজদাহ তে থাকা অবস্থায় সুব হান রব্বিয়াল আ'লা তিনবার বলে। বসে,আল্লহুম্মাগফিরলী ওয়ারহামনি ওয়াহদিনি ওয়ার‍যুক্কনি ওয়া 'আফিনি, বলে আবার আল্লহু আকবার বলে আরেকটি সিজদাহ দিব তারপর সিজদাহতে থাকা অবস্থা সুব হানা রব্বিয়াল আ'লা তিনবার বলে বসে আত্তাহিয়াতু,আদরুদ,দুয়া মাসুরা পড়ে উভয় দিকে সালাম ফেরাবো তাই না? এটা কি সাহু সিজদাহর সঠিক পদ্ধতি?

৬)যদি ভুলে একটি সিজদাহ কম দিই কোনো রাকাতে, তাহলে যদি স্মরণ হয় সেটা রুকু করার সময়, এবং তখন কেবল রুকুতে গিয়েছি এখনো তাসবিহ পাঠ শুরু করিনি। তাহলে তখন কি সাথে সাথেই সিজদাহ তে চলে যাবো আর সুব হানা রব্বিয়াল 'আলা তিনবার বলব? বলে উঠে দাঁড়িয়ে আবার রুকুতে অবস্থান করে তাসবীহ পাঠ করব? আর লাস্টে সাহু সিজদাহ দেব?
৭) যদি কখনো সালাম ফিরিয়ে সাহু সিজদাহ দিতে ভুলে যাই, তাহলে কোনো দুনিয়াবি কাজ না করি। তখন কি আবার একদিকে সালাম ফিরিয়ে দুইটি সিজদাহ দিয়ে আত্তাহিয়াতু, দরুদ,দুয়া মাসুরা পড়ে নামাজ শেষ করব?
আর এখানে যে বললাম ❝একদিকে সালাম ফিরিয়ে❞ একদিকে সালাম ফিরিয়েই কি করব দুটো সিজদাহ? ভুলে দুই দিকে সালাম ফেরানো শেষে। নাকি একদিকে সালাম না ফিরিয়েই মনে পড়ার সাথে সাথে সিজদাহতে চলে যাবো ১ টা সিজদাহ তারপর তাশাহুদ, দরুদ,দুয়া, মাসুরা পড়ে দুই দিকে সালাম ফিরিয়ে নেব?

৮) কেউ যদি দুয়া না করে শুধু  অনেক বেশি দরুদ পাঠ করে তাহলে কি তার সমস্ত ইচ্ছে পূরণ হবে?

৯) দুয়া কুনুত ভুলে গেলে পড়ার সময়ে করে দুই তিনবার পড়লে কি নামাজ হবে? (সাহু সিজদাহ দিই নি)

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

নামাযে যেকোনো ভুলের কারণে সেজদা সাহু ওয়াজিব হয়ে যায় না। বরং ভুলে নামাযের কোনো ওয়াজিব ছুটে গেলে কিংবা কোনো ফরয বা ওয়াজিব বিলম্বিত হলে ওয়াজিব হয়। আর যদি ভুলে কোনো ফরয ছুটে যায়, তবে সেজদা সাহু করা যথেষ্ট নয়, বরং পুনরায় নামায আদায় করতে হবে। আর কোনো সুন্নত বা মুস্তাহাব ছুটে গেলে সেজদা সাহু করার বিধান নেই। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حدثنا عبد الله بن يوسف، أخبرنا مالك بن أنس، عن ابن شهاب، عن عبد الرحمن الأعرج، عن عبد الله بن بحينة رضي الله عنه، أنه قال: صلى لنا رسول الله صلى الله عليه وسلم ركعتين من بعض الصلوات، ثم قام فلم يجلس، فقام الناس معه، فلما قضى صلاته ونظرنا تسليمه كبر قبل التسليم، فسجد سجدتين وهو جالس، ثم سلم.

আবদুল্লাহ ইবনে বুহায়না রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক নামায আমাদের দুই রাকাত পড়ান। তারপর না বসে দাঁড়িয়ে যান। মুকতাদীরাও তাঁর সাথে দাঁড়িয়ে যায়। যখন তিনি নামায পূর্ণ করলেন এবং আমরা তাঁর সালাম ফিরানোর অপেক্ষা করছিলাম তখন সালাম ফিরানোর আগে তাকবীর দিলেন এবং বসা অবস্থায় দুটি সেজদা করলেন। তারপর সালাম ফিরালেন। 
(সহীহ বুখারী, হাদীস ১২২৪ সহীহ মুসলিম, হাদীস ৫৭০)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার নামাজ হবে। 

(০২)
নামাজ হয়ে যাবে।
তবে এটি নিয়ম নয়।

★যে ব্যক্তির প্রায় সময় সন্দেহ হয় এবং সন্দেহ তার অভ্যাসে পরিণত হয়, ওই ব্যক্তি যেদিকে তার মন বেশি যায় (প্রবল ধারণা হয়), সেটার ওপর আমল করবে। যদি সব বিষয়ে ধারণা সমান হয়, তাহলে অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যার ওপর আমল করবে এবং প্রত্যেক রাকাতকে নামাজের শেষ মনে করে বসবে, শেষে সিজদায়ে সাহু করবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي خَلَفٍ، حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ دَاوُدَ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا شَكَّ أَحَدُكُمْ فِي صَلاَتِهِ فَلَمْ يَدْرِ كَمْ صَلَّى ثَلاَثًا أَمْ أَرْبَعًا فَلْيَطْرَحِ الشَّكَّ وَلْيَبْنِ عَلَى مَا اسْتَيْقَنَ ثُمَّ يَسْجُدُ سَجْدَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ يُسَلِّمَ فَإِنْ كَانَ صَلَّى خَمْسًا شَفَعْنَ لَهُ صَلاَتَهُ وَإِنْ كَانَ صَلَّى إِتْمَامًا لأَرْبَعٍ كَانَتَا تَرْغِيمًا لِلشَّيْطَانِ " .

মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ ইবনু আবূ খালাফ (রহঃ) ..... আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন রাকাআত আদায় করা হলো না চার রাকাআত আদায় করা হলো- সালাতের মধ্যে তোমাদের কারো এরূপ সন্দেহ হলে সে যে কয় রাক’আত আদায় করেছে বলে নিশ্চিত হবে (তিন রাকাআত) সে কয় রাকাআতকে ভিত্তি ধরে অবশিষ্ট করণীয় করবে। এরপর সালাম ফিরানোর পূর্বে দুটি সিজদা করবে। (এখন) সে যদি পাঁচ রাকাআত আদায় করে থাকে তাহলে এ দু' সিজদা দ্বারা তার সালাতের জোড়া পূর্ণ হয়ে যাবে। আর যদি তার সালাত চার রাকাআত হয়ে থাকে তাহলে (এই) সিজদা দুটি শয়তানের মুখে মাটি নিক্ষেপের শামিল হবে। (মুসলিম ১১৫৯.ইসলামী ফাউন্ডেশন ১১৫২, ইসলামীক সেন্টার ১১৬১)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আপনার যখনই এভাবে সেজদাহ নিয়ে সন্দেহ হবে,আপনি সব নামাজেই প্রবল ধারনার উপর আমল করবেন।
যদি কোনোদিকেই প্রবল ধারনা না হয়,সেক্ষেত্রে কমটাকে ধরে  আরো একটি সেজদাহ আদায় করবেন।
ও শেষে সেজদায়ে সাহু আদায় করবেন। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৩)
এক্ষেত্রে সাথে সাথে আরো একটি সেজদাহ দিয়ে তাশাহুদ, দরুদ শরীফ, দোয়ায়ে মাছুড়া পড়ে নামাজ শেষ করবেন।

(০৪)
শেষ বৈঠকে তাশাহুদ পাঠ করা ডান দিকে সালাম ফিরিয়ে ২ টি সেজদাহ আদায় করতে হবে।
অতঃপর তাশাহুদ,দরুদ শরীর,দোয়ায়ে মাছুরা পাঠ করে দুই দিকে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করে দিতে হবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ ثَوْبَانَ، عَنِ النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم قَالَ " لِكُلِّ سَهْوٍ سَجْدَتَانِ بَعْدَ مَا يُسَلِّمُ "

সাওবান (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সালাতের যেকোন ভুলের জন্য সালাম ফিরানোর পর দু‘টি সিজদা্ করতে হয়।
(আবু দাউদ ১০৩৮.ইবনু মাজাহ (অধ্যায় : সালাত ক্বায়িম, অনুঃ সালামের পর সাহু সিজদা করা, হাঃ ১২১৯), আহমাদ (৫/২৮০), বায়হাক্বী (২/৩৩৭)

(০৫)
এটা সাহু সিজদাহর সঠিক পদ্ধতি।

(০৬)
হ্যাঁ, এমনটি করবেন।

(০৭)
না,এক্ষেত্রে উক্ত নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবে।

(০৮)
দরুদ পাঠের সময় মনের মধ্যে সমস্ত বৈধ আশা হাজির রাখতে হবে।
তাহলে ইনশাআল্লাহ তার সমস্ত নেক আশা কবুল হবে।

(০৯)
নামাজ হয়ে যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 384 views
0 votes
1 answer 198 views
...