আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
239 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
closed by
মেয়েদের জন্য রুপ বা সৌন্দর্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কালো বা শ্যামলা মেয়েকে কেউ পছন্দ করে না, সাধারনত সবাই সুন্দর বউ চায়, এর জন্য আল্লাহর কাছে দুয়াও করে, এমতাবস্থায় যে মেয়েটিকে আল্লাহ তালা রুপ সৌন্দর্য দেয় নি সে কি তার এই অপূর্ণতাকে আল্লাহর তরফ থেকে পরীক্ষা হিসেবে ধরবে?

একটা মেয়ে সুন্দর না হলে তার যত গুন ই থাকুক না কেন তাকে।বিয়ের ক্ষেত্রে অনেক ঝামেলায় পড়তে হয়, বউ অসুন্দর হলে স্বামীর পরনারীতে আসক্ত হওয়ার প্রবণতা থাকে, এই যে যাবতীয় কষ্ট একজন মেয়ে শুধুমাত্র অসুন্দর হওয়ার জন্য পেয়ে থাকে এর জন্য কি সে সওয়াব পাবে? মূলত অসুন্দর হওয়া কারও হাতে নাই, আল্লাহ যাকে যেরকম বানিয়েছেন, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ ই মেয়েদেরকে বাজারের পণ্যের মত বিচার করে বিয়ের সময়, এই ধরনের মানসিকতা কি ইসলাম সমর্থন করে? কারন ইসলাম এ সুন্দর মহিলা বিয়ের জন্য অ বলা হয়েছে, এবং কিছু ইসলামিক লেখক ও বলেছেন সুন্দর মেয়ে বিয়ে করলে নজরের হিফাজত হয়, একটা মেয়েকে কি এখানে অবমাননা করা হল না? একজন মানুষ যার চেহারার উপর তার কোনো হাত নেই, তাকে যদি সেই জিনিস টা দিয়েই বিবেচনা করে ছোট করে দেখা হয় তাহলে এট কি অন্যায় না?
closed
by (4 points)
Assalamualaikum ,,apumoni apni ekdom amar moner kotha bolechen,,amio ekoi proshno korte cheyechilam,,,ami emono dekhechi ,,,ordhek din e mufti sahebrao bole rekhechen forsha meye lagbe patri hisebe,,,eta dekhe aro onek kharap legeche...amader islam ki eta somorthon kore..? onek meye opoman soite na pere attohottao kore...abar oneke gayer rong poribortoner jonno koto ki upay obolombon kore nijer khoti kore boshe sudhu matro sundor ruper jonno..!
by (3 points)
+1
ওয়ালাইকুম আসসালাম, আপু অসুন্দর মেয়ের কষ্ট শুধু অসুন্দর মেয়েরাই বুঝে, সব গুন থাকলেও, সবাই একটা ফরসা মেয়েকেই একটা কালো মেয়ের আগে প্রাধান্য দিবে, এটাই আমাদের ভাগ্য, সবচেয়ে কষ্ট লাগে একটা বিষয়ে, যে একজন পুরুষ মানুষের দাম ধরা হয় সে নিজের চেষ্টায় কি অর্জন করল তা দেখে, যেখানে একজন মেয়েও চেষ্টা করলে তা অর্জন করতে পারে কিন্তু মেয়েদের দাম ধরা হয় তার রুপ সৌন্দর্য দেখে যেটাকে পরিবর্তন করার কোনো অধিকার ইসলাম তাকে দেয় না

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
selected by
 
Best answer
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَي النَّاس أكْرم؟ فَقَالَ: «أَكْرَمُهُمْ عِنْدَ اللَّهِ أَتْقَاهُمْ» 

আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করা হলো, কে সবচেয়ে সম্মানিত? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ তা’আলার নিকট সবচেয়ে সম্মানিত সে ব্যক্তি, যে সবচেয়ে আল্লাহভীরু। সাহাবায়ে কিরাম (রাঃ)জিজ্ঞেস করলেনঃ আমরা এ দৃষ্টিকোণ থেকে জিজ্ঞেস করিনি। 
(বুখারী ৪৬৮৯, মুসলিম ১৬৮-(২৩৭৮), ‘নাসায়ী’র কুবরা ১১২৪৯, সহীহুল জামি‘ ৫৫৭৮, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ১৮৪৬, মা‘রিফাতুস্ সুনান ওয়াল আসার ৩৮, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক ২০৬৪১, মুসনাদুশ্ শাফি‘ঈ ১৩৩৭, আহমাদ ১৮৯৪৫, মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ৬০৭০, শু‘আবুল ঈমান ১৭০১, সুনানুদ্ দারিমী ২২৩, আল মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ৩০৫, আল মুসতাদরাক ৫০৬১।)

ব্যাখ্যাঃ (أَي النَّاس أكْرم؟) মানুষের মধ্যে কোন্ মানুষ বেশি মর্যাদার ও সম্মানের অধিকারী? ‘আল্লামা ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এ বাক্যটি দ্বারা বংশের দিকে লক্ষ্য না করে সাধারণভাবে কোন্ মানুষ আল্লাহর নিকট সম্মানের অধিকারী তা বুঝার সম্ভাবনা আছে। একজন কালো-কুৎসিত দাসও আল্লাহর নিকট সম্মানের অধিকারী হতে পারে। আবার বংশ মর্যাদাও বুঝাতে পারে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)

(أَكْرَمُهُمْ عِنْدَ اللهِ أَتْقَاهُمْ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ উত্তর প্রদান করেন মহান আল্লাহর বাণী থেকেই। তা হলো :

يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِنْ ذَكَرٍ وَأُنْثٰى وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللهِ أَتْقَاكُمْ

‘‘হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে এক নারী ও পুরুষ থেকে সৃষ্টি করেছি আর তোমাদের পরিচিতির জন্য বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি। তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সেই অধিক মার্যাদাবান যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়াসম্পন্ন।’’ (সূরাহ্ আল হুজুরাত ৪৯ : ১৩)

★ইসলামের শিক্ষা হলো, মানুষ মানুষকে তার তাকওয়া, খোদাভীতি, নীতি-নৈতিকতা ও সততার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করবে। বাহ্যিক রূপ-সৌন্দর্যের বিবেচনায় নয়। কেননা তা মানুষের অর্জন নয়, তা একান্তই স্রষ্টার দান। অন্যদিকে আল্লাহ যার চেহারা সুন্দর করেছেন, সে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করবে। আল্লাহ যার চেহারা অন্যদের মতো সুন্দর করেননি, সে-ও আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করবে। কেননা আল্লাহ তাকে মানুষ হিসেবে মর্যাদা দিয়েছেন এবং তাকে আরো অসুন্দর করেননি।

মানুষের দৈহিক সৌন্দর্য আল্লাহর দান। এটি মানুষের ইচ্ছা ও নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তাই এই সৌন্দর্য নিয়ে যেমন গর্ব করার সুযোগ নেই, তেমনি অসৌন্দর্যের জন্য কাউকে তাচ্ছিল্য করার অধিকার কারো নেই। কারো চেহারার সৌন্দর্য ও অসৌন্দর্য নিয়ে মন্তব্য করতে ইসলাম নিষেধ করেছে।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা বলোনা, আল্লাহ তার চেহারা কুৎসিত বানিয়েছেন।
’ (আল আদাবুল মুফরাদ,আবূ দাউদ ২১৪৪-২১৪৫)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ উপমা দেয়, সে যেন চেহারা পরিহার করে। সে যেন না বলে, আল্লাহ তোমার চেহারা কুৎসিত করেছেন এবং তোমার মতো যাদের চেহারা তাদেরও। কেননা আদমকে তার আকৃতিতে তৈরি করেছেন।’ হাদিসবিশারদ শায়খ আলবানি (রহ.) এই হাদিসের সনদকে ‘হাসান’ বলেছেন।

(আস-সিলসিলাতুস সাহিহা : ২/৫১৯)

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

‘আমি মানুষকে সবচেয়ে সুন্দরতম গঠনে সৃষ্টি করেছি’। (সূরা তিন, আয়াত: ৪)

একজন শায়েখ লিখেছেন,
পৃথিবীর সবকিছুই সুন্দর। সবই মহান স্রষ্টার অপরুপ অনাবিল সৃষ্টি। আপনিও একজন চমৎকার সুন্দর মানুষ। এই সুন্দর পৃথিবীর প্রতিটা মানুষই সুন্দর। অসুন্দর শুধু শব্দে। আমাদের বিকৃত মানসিকতা, অসুস্থ চিন্তা ও রুচিবোধে। হ্যাঁ মানুষের সেই সৌন্দর্য দেখতে হলে আপনার ভালোবাসাময় দু’টো চোখ লাগবে, উপলব্ধি করার মতো স্বচ্ছ প্রেমময় ও ভালো একটি মন লাগবে, সুন্দর উপলব্ধি করার মতো উন্নত মানসিকতা ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি লাগবে। তবেই আপনি দেখবেন জগতের এক একটি মানুষ মহান স্রষ্টার অপরুপ সৃষ্টির অনুপম সৌন্দর্যের স্বাক্ষর বহন করছে।

সুন্দর অসুন্দরের সুনির্দিষ্ট কোন সংজ্ঞা নেই। এটি একটি সম্পূর্ণ আপেক্ষিক বিষয়। ‘যারদৃষ্টি ভঙ্গি যতো সুন্দর জগত তার কাছে তত সুন্দর’। সবার চোখে সব কিছু সব সময় সুন্দর নাও লাগতে পারে। আবার যদি কেউ কোনো অসুন্দর বস্তু বা বিষয়কে সবসময় দেখতে বা শোনতে থাকে, তবে একসময় সেটার সঙ্গে তার ভালো লাগা ও ভালোবাসা হয়ে যায়। 

বাংলা একাডেমীর বাংলা অভিধানে সুন্দরের সংজ্ঞা কী? সেখানে বলা হয়েছে সৌন্দর্য মানে রূপ, মনোহর, রূপমাধুরী, শোভা। কই কোথাও তো সাদা বা ফর্সা রঙের কথা বলা হয়নি! তাহলে আপনি কেন গায়ের রঙে সৌন্দর্য মাপতে যাবেন?

আমরা মোটা, চিকন, কালো কান্তিময় যাই হই না কেন, এর উপর আমাদের কারো কোনো হাত নেই। আমরা আমাদেরকে সৃষ্টি করিনি। যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনি যাকে যেভাবে সৃষ্টি করা দরকার সেভাবেই সৃষ্টি করেছেন। আমাদের কাছে যেমন আমাদের প্রিয় সন্তান ও প্রিয় মানুষগুলো অনেক অনেক সুন্দর। সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ্র কাছেও তার প্রতিটি বান্দাই অনেক অনেক সুন্দর।

আপনি একবার আয়নার সামনে দাড়িয়েই দেখুন না, আপনার রঙটা কোনভাবেই বাজে নয়, আপনার চেহারাটা কিন্তু অসুন্দর নয়। আপনার আল্লাহ্ কতোইনা চমৎকার রুপে আপনাকে সৃষ্টি করেছেন। আপনার জন্য তিনি নিজে এ রঙ পছন্দ করেছেন। যে রঙ আল্লাহ্র নির্বাচিত সে রঙ কারো পছন্দে অপছনে অসুন্দর হতে পারে না। যে রঙ আপনার আল্লাহ প্রদত্ত সেই রঙ কখনো অশুভ অকল্যাণকর হতে পারে না। কারো সুন্দর অসুন্দরের স্বীকৃতি অস্বীকৃতিতেও কিছু যায় আসে না। মহান আল্লাহ্ নিজেই সাক্ষী দিচ্ছেন আপনি সুন্দর। শুধু সুন্দর নয় তিনি আপনাকে গোটা সৃষ্টি জগতের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর বলেছেন।
(কিছু তথ্য সংগৃহীত)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
সাদা না হওয়াকেই যদি অসুন্দর বলা হয়,সেক্ষেত্রে বিষয়টি ভূল।

তারপরেও কেহ যদি নিজেকে উক্ত কারনে অসুন্দর মনে করে আল্লাহর সৃষ্টির উপর প্রশ্ন উত্থাপন না করে শুকরিয়া আদায় করে,(মনে করে যে আল্লাহ তায়ালা চাইলে তো আমাকে বোবা,অন্ধও বানাতে পারতেন,কিন্তু তিনি ইহসান করে কথা বলার শক্তি দান করেছেন,চক্ষু দান করেছেন) এভাবে  শুকরিয়া আদায়ের দরুন সে এর জাযা পাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...