শরীয়তের বিধান অনুযায়ী বালেগ হওয়ার পর গায়রে মাহরামদের সাথে পর্দা করতে হবে।
অর্থাৎ গায়রে মাহরাম ব্যাক্তি যখন বালেগ হবে,তখন তার সামনে পর্দা করা ফরজ।
,
তবে যদি অবস্থা এমন হয়,তারা যদিও নাবালেগ ,তবে তাদের সামনে গেলে ফেতনার আশংকা আছে,তাহলে নাবালেগ হওয়া সত্ত্বেও তাদের সামনে পর্দা করতে হবে।
,
শরীয়তে ১২ বছর বয়সী পুরুষদের সামনে পর্দার কথা বলা হয়েছে।
দারুল উলুম দেওবন্দ এর 145270 নং ফতোয়া দ্রষ্টব্য
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত আপনার ১৩ বছর বয়সী খালাতো ভাইয়ের সামনে পর্দা করা ছহীহ।
,
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠]
وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١
মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।
ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}
,
তাফসীরে জ্বালালাইনে বলা হয়,
ﺃَﻭْ اﻟﻄِّﻔْﻞ} ﺑِﻤَﻌْﻨَﻰ اﻷَْﻃْﻔَﺎﻝ {اﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻟَﻢْ ﻳَﻈْﻬَﺮُﻭا} ﻳَﻄَّﻠِﻌُﻮا {ﻋَﻠَﻰ ﻋَﻮْﺭَاﺕ اﻟﻨِّﺴَﺎء} ﻟِﻠْﺠِﻤَﺎﻉِ ﻓَﻴَﺠُﻮﺯ ﺃَﻥْ ﻳُﺒْﺪِﻳﻦَ ﻟَﻬُﻢْ ﻣَﺎ ﻋَﺪَا ﻣَﺎ ﺑَﻴْﻦ اﻟﺴُّﺮَّﺓ ﻭَاﻟﺮُّﻛْﺒَﺔ
যে সমস্ত বালকরা নাবালক,এবং স্ত্রী সহবাস সম্পর্কে জ্ঞাত নয়,তাদের সামনে হাটু থেকে নাভী পর্যন্ত ব্যতীত শরীরের অন্যান্য অঙ্গ প্রকাশ করা নাজায়েয নয়।তবে যারা নাবালক হওয়া সত্ত্বেও স্ত্রী সহবাস বুঝে,তারা সাবালক পুরুষেরই মত।সাবালক পুরুষের সামনে যেভাবে পর্দা করতে হয়,ঠিক তেমনি তাদের সামনেও পর্দা করতে হবে।
আরো জানুনঃ
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত আপনার চাচাতো ভাইয়ের বয়স যেহেতু ১৫ বছর। সুতরাং এমতাবস্থায় তার সামনে আপনাকে পর্দা করা ফরজ।
আপনি তার গায়ে কোনোক্রমেই হাত তুলতে পারবেননা। স্বামীর নিষেধাজ্ঞা থাকায় পর্দার আড়ালে থেকেও তাকে পিটুনি দিতে পারবেননা।
আপনার সাথে অন্যায় করলে পর্দার আড়ালে থেকে কর্কশ ভাষায় কথা বলতে পারবেন,তবে গালি দেয়া যাবেনা।
তবে স্বামীর নিষেধাজ্ঞা থাকায় উক্ত কাজ হতেও বিরত থাকবেন।
তাকে শাসন করা,তাকে শোধরানো আপনার উপর আবশ্যক নয়।
এটা আপনার দায়িত্ব নয়।
(০২)
হ্যাঁ, এতে পর্দার কোন সমস্যা হবে।
চেহারা, হাত পা সব ঢেকে রাখতে হবে।
এক্ষেত্রে রুমে অন্য কোনো মাহরামের উপস্থিতি জরুরী।
নতুবা নির্জন ও একাকিত্ব হবে,যাহা জায়েজ নেই।
এভাবে শুধুমাত্র আপনি থাকা অবস্থায় সে আপনার রুমে প্রবেশ করবেনা।
(০৩)
যার বয়স ১৫ বছর,তার সাথে বিনা প্রয়োজনে কথা বললে বা পর্দার আড়ালে না থেকে সামনা-সামনি বিনা পর্দায় কথা বললে কন্ঠের পর্দা লঙ্ঘিত হবে।
এক্ষেত্রে তার সাথে জরুরী কথা ছাড়া কথা বলবেননা।
বিশেষ প্রয়োজনে প্রয়োজনে কথা বলতে হলে পর্দার আড়ালে থেকে কথা বলতে পারবেন।
তবে কন্ঠস্বর শক্ত করার চেষ্টা করবেন,নরম গলায় কথা বলবেননা।
প্রয়োজন অতিরিক্ত কথা বলা যাবেনা।
(০৪)
পর্দার ব্যবস্থা বাসায় না থাকাতে আপনার স্বামী গুনাহগার হবে।
এক্ষেত্রে আপনি পর্দা রক্ষা করে চলতে না পারলে আপনার স্বামী দাইয়্যুস হবে।