আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
133 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (8 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম আমার কিছু প্রশ্ন ছিল।

১.নারীদের কন্ঠ কল্পনা করা কি গুণাহ?

২.খারাপ কাজ দেখলে বা শুনলে নাউযুবিল্লাহ বলতে হয় এব্যাপারে হাদিসে বলা আছে?

৩.কেমন আছেন? এর উত্তরে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি বা আলহামদুলিল্লাহ বললে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করার সওয়াব হবে?

৪.আমার জানামতে সুরা নুর ৩০ আয়াত এর মতে পুরুষদের জন্য দৃষ্টি সংযত রাখা ফরজ।

ক.এই দৃষ্টি সংযত বলতে শুধু কুদৃষ্টির কথা বলা হয়েছে নাকি স্বাভাবিক দৃষ্টি?

খ.দৃষ্টি সংযত(স্বাভাবিক ও কুদৃষ্টি) এর বিধান হিসেবে কোন পুরুষ কি শুধু মুসলিম নারীদের থেকে দৃষ্টি সংযত রাখবে নাকি এর সাথে কাফের(হারবীও জীম্মসহ সকল কাফের)  নারীদের সাথেও দৃষ্টি সংযত রাখবে?

গ.এক্ষেত্রে বেপর্দা নারী ও পর্দাশীল উভয় নারী থেকেই দৃষ্টি সংযত রাখতে হবে?

(উত্তরে শুধু হ্যা/না জায়েজ/নাজায়েজ বললে ভালো হয়)

৫.নারীদের সাথে কথা বলা গুণাহ এটি কি পর্দাশীল -বেপরদা, কাফের(হারবী -জিম্মি ) ইত্যাদি ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য?

৬.মেসেঞ্জার,কলে বা সরাসরি দেখার সময় প্রথমে সালাম দিলাম আর পরবর্তীতে তাদের ক্ষেত্রে বিদায় বেলা,চ্যাট/ কল শেষে তাদের সালাম দেওয়া কি সুন্নত?আর শেষে সালাম দেওয়া সুন্নত হলে যদি প্রথমে কথার সময় সালাম দিলাম কিন্তু শেষে সালাম দিলাম না এক্ষেত্রে প্রথম সালাম দেওয়ার সওয়াব পাব?

৭.তাশাহুদের ক্ষেত্রে যদি আশহাদু বলার আগে ইচ্ছাকৃত বা ভুলে আঙ্গুল তুললে সমস্যা হবে?

(উত্তর হ্যা/না হলে এটি সকল সালাত (ফরজ,নফল,সুন্নত, ওয়াজিব) এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য?

৮. ৪ নং প্রশ্ন অতিরিক্ত প্রশ্নের জন্য কি,খ বলে উল্লেখ করায় গুণাহ হয়েছে?

৯.আমি যখন হাটি বা হাত দিয়ে কাজ করি তখন পায়ের তলে ও হাত যেই জায়গায় রাখব সেই জায়গায় ইসলামী শব্দ,কাবা, মসজিদ ইত্যাদি কিছু যদি ওয়াসওয়াসা বশত চলে আসলে গুণাহ হবে?

১০.কোন যিকির করার সময় যদি মযোগ না থাকে তাহলে কা ওই যিকির এর সওয়াব পাব?

(সকাল/সন্ধ্যা/ঘুম সহ সকল যিকির)

1 Answer

0 votes
by (559,530 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
গায়রে মাহরাম নারীদের কন্ঠ কল্পনা করা গুণাহ।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত।

فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُ زِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ

রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}

(০২)
হ্যাঁ, এ সংক্রান্ত হাদীস আছে।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنِي سُمَىٌّ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَتَعَوَّذُ مِنْ جَهْدِ الْبَلاَءِ، وَدَرَكِ الشَّقَاءِ، وَسُوءِ الْقَضَاءِ، وَشَمَاتَةِ الأَعْدَاءِ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বালা মুসীবতের কঠোরতা, দুর্ভাগ্যে পতিত হওয়া, ভাগ্যের অশুভ পরিণতি এবং দুশমনের আনন্দিত হওয়া থেকে আশ্রয় চাইলেন। সুফ্ইয়ান (রহ.)-এর হাদীসে তিনটি বিষয়ের উল্লেখ আছে। একটি আমি বৃদ্ধি করেছি। জানি না তা এগুলোর কোনটি।[বুখারী ৬৩৪৭,৬৬১৬; মুসলিম ৪৮/১৬, হাঃ ২৭০৭] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৯০১ ,ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৯৪)

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «تَعَوَّذُوا بِاللَّهِ مِنْ جَهْدِ الْبَلَاءِ وَدَرَكِ الشَّقَاءِ وَسُوءِ القضاءِ وشَماتة الْأَعْدَاء»

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা বিপদাপদে কষ্ট-ক্লিষ্ট ও দুর্ভাগ্যের আক্রমণ, ভাগ্যের অনিষ্টতা এবং বিপদগ্রস্তে শত্রুর উপহাস থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করো।
(বুখারী ৬৬১৬, মুসলিম ২৭০৭, সহীহ আল জামি‘ ২৯৬৮, সহীহাহ্ ১৫৪১।)

(০৩)
হ্যাঁ, শুকরিয়া আদায়ের ছওয়াব হবে।

(০৪)
ক, গায়রে মাহরামদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক দৃষ্টিও উদ্দেশ্য। 
তবে অনিচ্ছাকৃত দৃষ্টি বা প্রয়োজনে দৃষ্টি দিলে সেটি এর অন্তর্ভুক্ত নয়।

অনিচ্ছাকৃত দৃষ্টি গেলেও সাথে সাথে চোখ ফিরিয়ে নিতে হবে।

খ, কাফের(হারবীও জীম্মসহ সকল কাফের)  নারীদের সাথেও দৃষ্টি সংযত রাখবে।

গ.এক্ষেত্রে বেপর্দা নারী ও পর্দাশীল উভয় নারী থেকেই দৃষ্টি সংযত রাখতে হবে।

(০৫)
এটি পর্দাশীল -বেপর্দা, কাফের(হারবী -জিম্মি ) ইত্যাদি ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

প্রয়োজনে কথা বললে পর্দার আড়ালে থেকে কথা বলতে হবে। সামনে চলে আসলে দৃষ্টি নত রাখতে হবে।

অপ্রয়োজনীয় কথা বলা যাবেনা।
ফিতনার আশংকা থাকা যাবেনা। 

(০৬)
১ম সালাম দেয়ার ছওয়াব পাবেন।

শেষে সালাম দেয়াও সুন্নাত।

(০৭)
এতে নামাজ ভেঙ্গে যাবেনা।
নামাজ হয়ে যাবে।

(০৮)
না,গুনাহ হয়নি।

(০৯)
না,গুনাহ হবেনা।

(১০)
হ্যাঁ, ছওয়াব পাবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...