আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
184 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (10 points)
আসসালামু আলাইকুম।
আলহামদুলিল্লাহ ।
গত 19 এপ্রিল 2019 সালে আমার বিবাহ সম্পন্ন হয়। আমার আহলিয়া মোহরানা এবং হাদিয়া হিসেবে এক ভরি ছয় আনা 3 রতি 1 পয়েন্ট স্বর্ণ পায়। তার নিকট এ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে সর্বোচ্চ এক থেকে দেড় হাজার নগদ টাকা ছিল আবার কখনও কখনও কোনো টাকা ছিল না। এই এই মুহূর্তে তাঁর নিকট 630 টাকা নগদ আছে ।
প্রশ্ন হল, এই অবস্থায় আমার আহলিয়া  এর উপর কি  যাকাত ফরজ হয়েছিল কিনা এবং সেই সাথে কুরবানী ওয়াজিব হয়েছিল কিনা? হয়ে থাকলে তা কিভাবে আদায় করা যেতে পারে ?
 উল্লেখ্য যে, এই সময়ের মধ্যে একটি কুরবানি ঈদ এ সে আমার সাথে আমার মামার বাড়িতে থাকে।
অবশ্য আমি আমার যাকাত হিসাব করার সময় তার স্বর্ণ আনুমানিক হিসাব করে কিছু টাকা বাড়তি যাকাত হিসেবে দিয়েছিলাম, তবে আমার ভয় হয় যে তাতে কিছু কম-বেশি হয়ে থাকতে পারে।
দয়া করে এখন আমাদের করনীয় কি তা জানাবেন।

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

যাকাত ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রুকন। ঈমানের পর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য ইবাদত হল সালাত ও যাকাত।

আয়াতে ইরশাদ হয়েছে-

وَ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ ؕ وَ مَا تُقَدِّمُوْا لِاَنْفُسِكُمْ مِّنْ خَیْرٍ تَجِدُوْهُ عِنْدَ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِیْرٌ۱۱۰

 ‘তোমরা সালাত আদায় কর এবং যাকাত প্রদান কর। তোমরা যে উত্তম কাজ নিজেদের জন্য অগ্রে প্রেরণ করবে তা আল্লাহর নিকটে পাবে। নিশ্চয়ই তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখছেন। -সূরা বাকারা : ১১০

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে-

وَ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ وَ اَطِیْعُوا الرَّسُوْلَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ۵۶

‘তোমরা সালাত আদায় কর, যাকাত দাও এবং রাসূলের আনুগত্য কর যাতে তোমরা অনুগ্রহভাজন হতে পার।’-সূরা নূর : ৫৬

সূরা নিসার ১৬২ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের জন্য ‘আজরুন আযীম’-এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে-

وَ الْمُقِیْمِیْنَ الصَّلٰوةَ وَ الْمُؤْتُوْنَ الزَّكٰوةَ وَ الْمُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِ ؕ اُولٰٓىِٕكَ سَنُؤْتِیْهِمْ اَجْرًا عَظِیْمًا۠۱۶۲

‘এবং যারা সালাত আদায় করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও পরকালে ঈমান রাখে আমি তাদেরকে মহাপুরস্কার দিব।’
.
★শরীয়তের বিধান হলোঃ  বছরের শুরু ও শেষে নিসাব পূর্ণ থাকলে যাকাত আদায় করতে হবে। মাঝে নিসাব কমে যাওয়া ধর্তব্য নয়। অবশ্য বছরের মাঝে সম্পূর্ণ সম্পদ নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর পুনরায় যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয় তবে ঐ সময় থেকে নতুন করে বছরের হিসাব আরম্ভ হবে এবং এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর যাকাত আদায় করতে হবে। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক  হাদীস ৭০৪২,৭০৪৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩০২

★বর্তমানে রুপার মূল্য ১১০০ টাকা ভড়ি।
সুতরাং সাড়ে বাহান্ন ভড়ি রুপার দাম  ১১০০×৫২.৫= ৫৭৭৫০ টাকা, 

শরীয়তের বিধান অনুপাতে  এই পরিমান টাকা,বা সমমূল্যের রুপা বা সমমূল্যের ব্যবসায়ী পন্য বা কিছু টাকা সহ সমমূল্যের স্বর্ণ কাহারো প্রয়োজন অতিরিক্ত থাকলেই যাকাত ফরজ হবে।     
.
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত স্বর্ণের সাথে মাঝে মাঝে যে তার কাছে অল্প কিছু করে টাকা ছিলো,সেটি যদি এমনিতেই জমানো হয়,প্রয়োজন অতিরিক্ত হয়।
তাহলেই ঐ টাকা হাতে আসার দিন থেকে নিয়ে আরবী সন এর পূর্ণ এক বছর হয়ে যাওয়ার দিনগুলোতেও যদি তার কাছে কিছু প্রয়োজন অতিরিক্ত টাকা থাকে,তাহলে তার উপর যাকাত ফরজ।
 
যাকাত সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ

,
(০২)
কিছু মাসআলা জেনে নেই,
প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

আর নিসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে নিসাব হল এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। আর সোনা বা রূপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না থাকে কিন্তু প্রয়োজন অতিরিক্ত একাধিক বস্ত্ত মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব।-আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪০৫

★কুরবানীর নেসাব পুরো বছর থাকা জরুরি নয়; বরং কুরবানীর তিন দিনের মধ্যে যে কোনো দিন থাকলেই কুরবানী ওয়াজিব হবে।-বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬, রদ্দুল মুহতার ৬/৩১২)
,
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি কুরবানীর তিন দিনের মধ্যে কোনো সময় আপনার স্ত্রীর উক্ত স্বর্ণের সাথে প্রয়োজন অতিরিক্ত কিছু টাকা হলেএ থাকে,তাহলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...