যারা কুফরী করেছে, দেশে দেশে তাদের অবাধ বিচরণ যেন কিছুতেই আপনাকে বিভ্রান্ত না করে।
বুখারী শরীফের একটি দীর্ঘ হাদীসে এসেছে,হাদীসটির অংশ বিশেষঃ-
فَقَالَ قَدْ أَذِنَ لَكَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَدَخَلْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا هُوَ مُضْطَجِعٌ عَلَى رِمَالِ حَصِيرٍ، لَيْسَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ فِرَاشٌ، قَدْ أَثَّرَ الرِّمَالُ بِجَنْبِهِ مُتَّكِئًا عَلَى وِسَادَةٍ مِنْ أَدَمٍ حَشْوُهَا لِيفٌ، فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ ثُمَّ قُلْتُ وَأَنَا قَائِمٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَطَلَّقْتَ نِسَاءَكَ. فَرَفَعَ إِلَىَّ بَصَرَهُ فَقَالَ " لاَ ". فَقُلْتُ اللَّهُ أَكْبَرُ. ثُمَّ قُلْتُ وَأَنَا قَائِمٌ أَسْتَأْنِسُ يَا رَسُولَ اللَّهِ لَوْ رَأَيْتَنِي، وَكُنَّا مَعْشَرَ قُرَيْشٍ نَغْلِبُ النِّسَاءَ فَلَمَّا قَدِمْنَا الْمَدِينَةَ إِذَا قَوْمٌ تَغْلِبُهُمْ نِسَاؤُهُمْ، فَتَبَسَّمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ لَوْ رَأَيْتَنِي وَدَخَلْتُ عَلَى حَفْصَةَ فَقُلْتُ لَهَا لاَ يَغُرَّنَّكِ أَنْ كَانَتْ جَارَتُكِ أَوْضَأَ مِنْكِ وَأَحَبَّ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يُرِيدُ عَائِشَةَ فَتَبَسَّمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم تَبَسُّمَةً أُخْرَى، فَجَلَسْتُ حِينَ رَأَيْتُهُ تَبَسَّمَ، فَرَفَعْتُ بَصَرِي فِي بَيْتِهِ، فَوَاللَّهِ مَا رَأَيْتُ فِي بَيْتِهِ شَيْئًا يَرُدُّ الْبَصَرَ غَيْرَ أَهَبَةٍ ثَلاَثَةٍ، فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ ادْعُ اللَّهَ فَلْيُوَسِّعْ عَلَى أُمَّتِكَ، فَإِنَّ فَارِسًا وَالرُّومَ قَدْ وُسِّعَ عَلَيْهِمْ، وَأُعْطُوا الدُّنْيَا وَهُمْ لاَ يَعْبُدُونَ اللَّهَ. فَجَلَسَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَكَانَ مُتَّكِئًا. فَقَالَ " أَوَفِي هَذَا أَنْتَ يَا ابْنَ الْخَطَّابِ، إِنَّ أُولَئِكَ قَوْمٌ عُجِّلُوا طَيِّبَاتِهِمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا "
খাদিমটি আমাকে ডেকে বলল, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনাকে অনুমতি দিয়েছেন। এরপর আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট প্রবেশ করে দেখলাম, তিনি খেজুরের চাটাইর ওপর চাদরবিহীন অবস্থায় খেজুরের পাতা ভর্তি একটি বালিশে ভর দিয়ে শুয়ে আছেন। তাঁর শরীরে পরিষ্কার চাটাইয়ের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। আমি তাঁকে সালাম করলাম এবং দাঁড়ানো অবস্থাতেই জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি আপনার স্ত্রীগণকে তালাক দিয়েছেন? তিনি আমার দিকে চোখ ফিরিয়ে বললেন, না (অর্থাৎ তালাক দেইনি)। আমি বললাম, আল্লাহু আকবার। এরপর কথাবার্তা হালকা করার উদ্দেশে দাঁড়িয়ে থেকেই বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি যদি শোনেন তাহলে বলিঃ আমরা কুরাইশগণ, মহিলাদের ওপর আমাদের প্রতিপত্তি খাটাতাম; কিন্তু আমরা মদিনা্য় এসে দেখলাম, এখানকার পুরুষদের ওপর নারীদের প্রভাব-প্রতিপত্তি বিদ্যমান।
এ কথা শুনে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুচকি হাসলেন। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! যদি আপনি আমার কথার দিকে একটু নজর দেন। আমি হাফ্সার কাছে গেলাম এবং আমি তাকে বললাম, তোমার সতীনের রূপবতী হওয়া ও রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রিয় পাত্রী হওয়া তোমাকে যেন ধোঁকায় না ফেলে। এর দ্বারা ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবার মুচকি হাসলেন। আমি তাঁকে হাসতে দেখে বসে পড়লাম। এরপর আমি তাঁর ঘরের চারদিকে তাকিয়ে দেখলাম। আল্লাহর কসম! কেবল তিনটি চামড়া ব্যতীত আর আমি তাঁর ঘরে উল্লেখ করার মত কিছুই দেখতে পেলাম না। তারপর আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! দু‘আ করুন, আল্লাহ্ তা‘আলা যাতে আপনার উম্মাতদের সচ্ছলতা দান করেন। কেননা, পারসিক ও রোমানদের প্রাচুর্য দান করা হয়েছে এবং তাদের দুনিয়ার আরাম প্রচুর পরিমাণে দান করা হয়েছে; অথচ তারা আল্লাহর ‘ইবাদাত করে না। এ কথা শুনে হেলান দেয়া অবস্থা থেকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সোজা হয়ে বসে বললেন, হে খাত্তাবের পুত্র! তুমি কি এখনো এ ধারণা পোষণ করছ? ওরা ঐ লোক, যারা উত্তম কাজের প্রতিদান এ দুনিয়ায় পাচ্ছে।
(বুখারী ৫১৯১, আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮০৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮১২)