আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
779 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (9 points)
closed by
a)সরকারী চাকুরী, সেনাবাহিনীতে, কাস্টমস, bcs exam এর চাকুরী কি হারাম?  বা ১০০% শরীয়ত সম্মত?

b) আর কোন কোন চাকুরী আছে হারাম, যা মানুষ অনেক করছে?

c)স্কলারশিপ এ বিদেশে কি পড়াশোনা জায়েয? আমি শুনেছিলাম স্কলারশিপ এ ব্যাংকের সুদ ব্যবহার হয়।মুসলিম দেশও কি এইভাবে স্কলারশিপ দেয়?

d)মানুষকে মজা করে অনেকেই ছোট করে, এইটা কি ঠিক? একটা হাদিস আছে, যিকির ও সৎ কাজে আদেশ, অসৎ কাজে নিষেধ বাদে বাকি কথাই মানুষের জন্য বোঝাস্বরূপ।
e) এইক্ষেত্রে যদি যাকে নিয়ে মজা করা হচ্ছে তাঁর যদি মনে কষ্ট না লাগে তাহলে কি আমার গুনাহ হবে, যেহেতু আমি অহেতুক কথা বলছি? এইটা তো আমার আশেপাশের অনেক দ্বীনদার মানুষও করে।
f) আর যদি একজন আমাকে নিয়ে মজা করলো আর আমিও উত্তর দিলাম মজা করে। মানে তাকেও ছোট করলাম কিন্তু পুরোটাই মজা করে। তাহলে কি গুনাহ হচ্ছে? কিন্তু কেউই মনে কষ্ট পাচ্ছে না।

g) জামাতে নামায পড়লাম।  এরপর সব মুক্তাদি বললো 3 রাকাত পড়া হয়েছে। কিন্তু ইমাম বলছেন 4রাকাত।  এরপর শরিয়তের নিয়ম অনুযায়ী নামায হয়ে যাবে।কিন্তু ভিডিও ফুটেজে যদি দেখা যায় 3রাকাত আদায় হয়েছে। তাহলে কি করবো?

 h) আমি একসাথে যদি লাহেক ও মাসবূক হই।  তাহলে কিভাবে বাকি নামায,  ইমামের সাহূ সিজদাহ ইত্যাদি আদায় করবো?
closed

1 Answer

+1 vote
by (590,550 points)
edited by
 
Best answer
জবাবঃ-
মুহতরাম/মুহতারামাহ্!
আপনি অনেকগুলি প্রশ্ন একসাথে করেছেন,
তাই ধারাবাহিক আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে চেষ্টা করবো, ইনশা'আল্লাহ।


(a)
সাধারণত সরকারী চাকুরী জায়েয।তবে কুরআন হাদীস বিরোধী কোনো কিছু বাস্তবায়ন করার কাজ হলে,বা এমন কোনো চাকুরী যেখানে গেলে কুরআন-হাদীসকে সঠিকভাবে অনুসরণ করা যায় না।তাহলে এমন চাকুরী কখনো বৈধ হবে না।(কিতাবুন নাওয়াজেল ১৭/৫০৪) আরো জানুন-১৭৪৫

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি সরকারী হালাল চাকুরীতে জয়েন্ট হতে পারবেন।সর্বদা হারাম ও নাজায়েয জিনিষ হতে বেঁচে থাকবেন।নামায সহ যাবতীয় ইবাদত আন্তরিকভাবে পালন করবেন।

হযরত ইবনে মাসউদ রাযি থেকে বর্ণিত
 عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «طَلَبُ كَسْبِ الْحَلَالِ فَرِيضَةٌ بَعْدَ الْفَرِيضَةِ» " رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي " شُعَبِ الْإِيمَانِ.
রাসুলাল্লাহ সাঃ বলেন,হালাল রিযিক তালাশ করা অন্যন্য ফরয বিধানের পরই ফরয।(মিশকাতুল মাসাবিহ-২৭৮১)

নিজে উপার্জন করা নিয়ে হাদীসে এসেছে,
হযরত মিক্বদাম ইবনে মা'দি কারুবা রাযি থেকে বর্ণিত
 ﻋَﻦِ اﻟْﻤِﻘْﺪَاﻡِ ﺑْﻦِ ﻣَﻌْﺪِﻱ ﻛَﺮِﺏَ - ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ: ﻗَﺎﻝَ: ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ اﻟﻠَّﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - " «ﻣَﺎ ﺃَﻛَﻞَ ﺃَﺣَﺪٌ ﻃَﻌَﺎﻣًﺎ ﻗَﻂُّ ﺧَﻴْﺮًا ﻣِﻦْ ﺃَﻥْ ﻳَﺄْﻛُﻞَ ﻣِﻦْ ﻋَﻤَﻞِ ﻳَﺪَﻳْﻪِ، ﻭَﺇِﻥَّ ﻧَﺒِﻲَّ اﻟﻠَّﻪِ ﺩَاﻭُﺩَ - ﻋَﻠَﻴْﻪِ اﻟﺴَّﻼَﻡُ - ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺄْﻛُﻞُ ﻣِﻦْ ﻋَﻤَﻞِ ﻳَﺪَﻳْﻪِ» "
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,নিজ হাতের উপার্জন হতে অধিক উত্তম রিজিক কেউ কখনো আহার করেনি।আর আল্লাহর নবী হযরত দাউদ আঃ নিজ হাতের উপার্জন দ্বারাই দিনাতিপাত করতেন।(মিশকাত-২৭৫৯)

হারাম থেকে বেঁচে থেকে বৈধ বিষয়ের যেকোনো প্রকার চাকুরী করা জায়েয ও বৈধ রয়েছে।সে হিসেবে সরকারী চাকুরী, সেনাবাহিনীতে, কাস্টমস, bcs exam  চাকুরী করা জায়েয।
তবে মহিলাদের জন্য শরয়ী জরুরত ব্যতীত চাকুরী করার অনুমোদন নেই।বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/632

(b)ব্যাংকের সুদী সেক্টরে চাকুরী হারাম এবং মদের দোকানে চাকুরী করা হারাম,ইত্যাদি।

(c)স্কলারশিপে ব্যংকের সুদ কিভাবে ব্যবহার হয়।বিষয় ব্যখ্যা করে কমেন্টে উল্লেখ করবেন।

(d)মানুষকে মজা করে ছোট করা যাবে না।কাউকে ছোট করে কথা বলা নাজায়েয ও হারাম।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
"মুমিনগণ, কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই যালেম।"(সূরা হুজুরাত-১১)
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-

(e)
কারো অন্তরে কষ্ট দেয়া নাজায়েয ও কবিরা গোনাহ।যেহেতু ঐ ব্যক্তি এক্ষেত্রে কষ্ট পাচ্ছে না,তাই গোনাহ হবে না।তবে এমনটা করা সর্বদাই অনুচিত বিবেচিত হবে।

(f)মু'মিন হিসেবে আপনার জন্য উচিৎ,কারো মজা করে ছোট করার জবাবে তাকে ছোট না করা।বরং তাকে উৎসাহমূলক উত্তম ও ভালো কথা শুনানো।

(g)তাহলে নামাযকে আবার দোহড়িয়ে পড়তে হবে।যতজন দেখবেন,এবং ভিডিওর কথা জানবেন,তারা সবাই তাদের উক্ত নামাযকে দোহড়িয়ে পড়বেন।

(h)

যদি কোনো  কোনো মাসবুকের অজু ছুটে যায়, তাহলে সে অজু করে এসে প্রথমে বিনা কিরাতে লাহেকের মত নামায আদায় করে তার পর ইমামের সাথে নামাযে শরীক হয়ে পরবর্তীতে মাসবুকের নামায তথা কিরাত সহ নামায আদায় করবে। 
«رَجُلٌ سُبِقَ بِرَكْعَةٍ فِي صَلَاةٍ هِيَ مِنْ ذَوَاتِ الْأَرْبَعِ وَنَامَ خَلْفَ الْإِمَامِ فِي الثَّلَاثِ الْبَاقِيَةِ ثُمَّ انْتَبَهَ يَأْتِي بِمَا عَلَيْهِ فِي حَالِ نَوْمِهِ وَلَا يَقْرَأُ فِيهَا ثُمَّ يَقْعُدُ مُتَابَعَةً لِلْإِمَامِ ثُمَّ يَقُومُ وَيُصَلِّي رَكْعَةً بِقِرَاءَةٍ وَيَقْعُدُ وَيُتِمُّ صَلَاتَهُ.» - «الفتاوى الهندية» (1/ 93)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (590,550 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।
by (590,550 points)
মাসবুক ও লাহেক অবস্থার একটা সূরত পেশ করেন।জাযাকাল্লাহ। 
by
উস্তাদ আমি প্রথম রাকাতে পড়তে পারলাম না জামাতে।দ্বিতীয় রাকাতে জুড়লাম জামাতে। আবার তৃতীয় রাকাতের কেরাত পড়ে রুকুতে উযু ভাঙ্গলো। আবার চতুর্থ রাকাতের শেষ বৈঠকে আমি উযু করে যোগ দিলাম জামাতে আবার। জাযাকাল্লাহ খাইরান 
by (9 points)
আর উস্তাদ যেকোনো দেশের সরকার বা অন্য প্রতিষ্ঠান আমাদের যে বৃত্তি বা স্বলারশীপে পড়াশোনা বা থাকার ব্যবস্থা করছে তা তো হচ্ছে ব্যাংকের সুদে আমার জানা মতে। এইটা কি উস্তাদ জায়েয হচ্ছে তাহলে? একটু নিশ্চিত জানাতে পারবেন? 
by (590,550 points)
edited by
যদি কেউ প্রথম রাকাতে জামাতে শরীক হতে না পারে,  বরং দ্বিতীয় রাকাতে এসে জামাতে শরীক হয়, আবার তৃতীয় রাকাতের কেরাত পড়ে রুকুতে উযু ভাঙ্গে। তাহলে সে অজু করে এসে প্রথমে একা একা বিনা কিরাতে ছুটে যাওয়া নামাযকে রুকু সিজদার সাথে আদায় করবে, ছুটে যাওয়া নামাযকে পূর্ণ করার পর যদি সে ইমাম সাহেবকে নামাযে পায়, তাহলে ইমাম সাহেবের সাথে নামাযে শরীক হবে । ইমাম সাহেবের সালামের পর প্রথমদিকে ছুটে যাওয়া নামায তথা মাসবুকের নামায কে কিরাত সহ আদায় করবে।  আর ইমাম সাহেবকে নামাযে না পেলেও সে তার মাসবুকের নামাযকে পড়ে নিবে। 
by (590,550 points)
সরকার বা অন্য প্রতিষ্ঠান যে বৃত্তি বা স্বলারশীপে পড়াশোনা বা থাকার ব্যবস্থা করছে তা যদি ব্যাংকের সুদে হয়, তাহলে ধনবান ছাত্রদের জন্য তা জয়েয হবে না। আর যাকাত ্ গ্রহণের উপযোগী ছাত্রর জন্য তা জায়েয হবে। 
by
এক্ষেত্রে কি অজু করে এসে রুকু থেকেই নামাজ শুরু করবে? আমরা ইমামকে যেভাবে রুকুতে পেলে দুইবার তাকবীর দিয়ে রুকুতে যাই? নাকি ঐ রাকাত সে শুরু থেকে শুরু করবে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...