আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
165 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (1 point)
আস সালামু আলাইকুম। আমি শারীরিক ও মানসিক ভাবে অনেক সমস্যায় আছি। আমার ফলে আমার পরিবারকে অনেক কষ্ট করতে হয়। আমার এখন মনে হচ্ছে আমি মারা গেলে তা আমার পরিবারের জন্য কল্যাণকর হবে। এর ফলে তাদের কষ্ট দূর হবে। এখন আমার জন্য আত্মহত্যা করা জায়েজ হবে কিনা? দ্রুত মৃত্যু বরণ করার জন্য কোনো দোয়া কুরআন হাদিসে আছে কিনা?

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

রাসূল সাঃ আত্মহত্যা করার ভয়াবহ শাস্তির কথা উল্লেখ করে ইরশাদ করেছেন-

عَنْ أبي هريرة , عَن النبي – صلى الله عليه وسلم – قال : من تردى من جبل , فقتل نفسه , فهو في نار جهنم يتردى فيها خالدا مخلدا فيها أبدا , ومن تحسى سما , فقتل نفسه , فسمه في يده يتحساه في نار جهنم خالدا مخلدا فيها أبدا , ومن قتل نفسه بحديدة , ثم انقطع علي شيء , يعني خالدا , كانت حديدته في يده يجأ بها في بطنه في نار جهنم خالدا مخلدا فيها أبدا

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ব্যক্তি পাহাড়ের উপর থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে, সে জাহান্নামের আগুনে পুড়বে, চিরদিন সে জাহান্নামের মধ্যে অনুরূপভাবে লাফিয়ে পড়তে থাকবে। যে ব্যক্তি বিষপান করে আত্মহত্যা করবে, তার বিষ জাহান্নামের আগুনের মধ্যে তার হাতে থাকবে, চিরকাল সে জাহান্নামের মধ্যে তা পান করতে থাকবে, যে ব্যক্তি লোহার আঘাতে আত্মহত্যা করবে, সে জাহান্নামের মধ্যে লোহা তার হাতে থাকবে, চিরকাল সে তার দ্বারা নিজের পেটে আঘাত করতে থাকবে। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৪৪২, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-১৯৬৪}

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আত্মহত্যা এটি কোনো সমাধানের বিষয় নয়।
এর জন্য নিজের দুনিয়াবী জীবন ও  আখেরাতের অনন্তকালর জীবনকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিবেননা।
এর আখেরাতে চিরস্থায়ী জাহান্নামে যেতে হবে।

কেহ যদি দুনিয়ায় যেনা করে,সেও তো তওবা করলে মাফ পাবে।
কিন্তু আত্মহত্যা করলে চিরস্থায়ী জাহান্নাম।
সুতরাং এটি কোনোভাবেই বুদ্ধিমান ব্যাক্তির কাজ হতেই পারেনা।
,
অহেতুক পেরেশানী করে নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত করবেন না। আপনি কিছুদিন বাহিরে থাকুন।
তাবলিগে গিয়ে ৪০ দিন সময় লাগান,চিল্লায় চলে যান, মনের তীব্র কনফিউশন থেকে নিজেকে মুক্ত করে নিন। 
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
এই দুনিয়ার কেহই আমাদের আপন নয়,শুধুমাত্র এক আল্লাহই আমাদের আপন।
মায়ের পেটে থাকা অবস্থাতেও তিনি আমাদের দেখাশোনা করেছেন,কবর জগতেও তিনিই একমাত্র আপন থাকবেন।

তিনি ছাড়া কেহই আমাদের আপন নন।
সুতরাং একমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনায়,তার আদেশ পালনার্থে আত্মহত্যা করবেননা।
,
দুনিয়ার জিন্দেগী দাঁতে দাঁত চেপে হলেও সহ্য করুন,আখেরাতের অনন্তকাল জিন্দেগীর শান্তি কামনায়,,,।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
দ্রুত মৃত্যু কামনার বিধান,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، - يَعْنِي ابْنَ عُلَيَّةَ - عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ يَتَمَنَّيَنَّ أَحَدُكُمُ الْمَوْتَ لِضُرٍّ نَزَلَ بِهِ فَإِنْ كَانَ لاَ بُدَّ مُتَمَنِّيًا فَلْيَقُلِ اللَّهُمَّ أَحْيِنِي مَا كَانَتِ الْحَيَاةُ خَيْرًا لِي وَتَوَفَّنِي إِذَا كَانَتِ الْوَفَاةُ خَيْرًا لِي " .
যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ..... আনাস (রাযিঃ) এর সানাদে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ যেন বিপদে পড়ার কারণে মৃত্যু আকাঙ্খা না করে। তবে মৃত্যু তার কামনা হয় তাহলে সে যেন বলে- "হে আল্লাহ! আপনি আমাকে জীবিত রাখুন যতক্ষণ পর্যন্ত আমার হায়াত আমার জন্য কল্যাণকর হয়। আর যদি আমার জন্য মৃত্যু কল্যাণকর হয়, তবে আমাকে মৃত্যু দিয়ে দিন।" (মুসলিম ৬৭০৭.ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৫৭০, ইসলামিক সেন্টার ৬৬২৪)

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، قَالَ هَذَا مَا حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ أَحَادِيثَ مِنْهَا وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ يَتَمَنَّى أَحَدُكُمُ الْمَوْتَ وَلاَ يَدْعُ بِهِ مِنْ قَبْلِ أَنْ يَأْتِيَهُ إِنَّهُ إِذَا مَاتَ أَحَدُكُمُ انْقَطَعَ عَمَلُهُ وَإِنَّهُ لاَ يَزِيدُ الْمُؤْمِنَ عُمْرُهُ إِلاَّ خَيْرًا "
মুহাম্মাদ ইবনু রাফি’ (রহঃ) ..... হাম্মাম ইবনু মুনব্বিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) এর সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে আমাদের নিকট যা বর্ণনা করেছেন, অতঃপর তিনি কয়েকটি হাদীস বর্ণনা করলেন। তার অন্যতম একটি এই যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন মৃত্যু কামনা না করে এবং মৃত্যু আসার আগে যেন মৃত্যুর জন্য দুআ না করে। কেননা তোমাদের মধ্যে কেউ মারা গেলে তার আমাল বন্ধ হয়ে যায়। আর মুমিন লোকের বয়স তার কল্যাণই বাড়িয়ে থাকে। (মুসলিম ৬৭১২.ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৫৭৫, ইসলামিক সেন্টার ৬৬২৯)

★ইসলামী শরিয়ত মতে, মৃত্যু কামনা করা বৈধ নয়।
মৃত্যু হলে গুনাহ থেকে বেঁচে যেতাম,এমন চিন্তা থেকে মৃত্যু কামনা অবৈধ নয়। (মা’আরেফুল কোরআন) 
তবে এক্ষেত্রে উপরোক্ত হাদীসে বর্ণিত পদ্ধতিতে দোয়া করা যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (6 points)
আব্দুল্লাহ ভাই আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। 
ভাই প্লিজ এসব কাজের চিন্তা মাথা থেকে একদম ঝেড়ে ফেলেন।যদি পারেন প্লিজ চিল্লায় চলে যান।ইং-শা-আল্লাহ অনেক ফায়দা হবে।প্রয়োজনে পরিবারের সাথে যোগাযোগ বন্ধ রাখেন মন মেজাজ ঠিক হওয়া পর্যন্ত।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...