ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ: كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُعْجِبُهُ التَّيَمُّنُ فِي تَنَعُّلِهِ وَتَرَجُّلِهِ، وَطُهُورِهِ، وَفِي شَأْنِهِ كُلِّهِ. متفق عليه.
মাথা চিরুণী দেওয়া এবং জুতা পরিধান করা এবং পবিত্রতা অর্জন করা এমনকি সমস্ত বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পছন্দ ডান দিক ছিলো।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
স্থান-কাল-পাত্র বেধে সময়ের প্রয়োজনে ফুকাহায়ে কিরামগন সহজতার স্বার্থে আসল হুকুম থেকে সরে এসে তার বিপরীত সাময়িক হুকুম মাঝেমধ্যে প্রয়োগ করে থাকেন।একেই পরিভাষায় জরুরত বলে। জরুরত বা সময়ের চাহিদায় অনেক বিধিত সিদ্বান্তকে শর্তসাপেক্ষে সাময়িক পরিবর্তন করে দেয়।এরকম কিছু ফিকহী মূলনীতি 'উসূলে ফিকহ' এর কিতাবাদিতে সবিস্তারে বর্ণিত আছে,তন্মধ্যে কিছু মূলনীতি হল।যথাক্রমেঃ-
(১) ﺍﻟﻀﺮﻭﺭﺍﺕ ﺗﺒﻴﺢ ﺍﻟﻤﺤﻈﻮﺭﺍﺕ
(প্রয়োজন অনেক নিষিদ্ধ জিনিষকে বৈধ করে দেয়)
সুতরাং উক্ত মূলনীতির আলোকে আমরা বলবো যে, রাস্তার ডান দিকে চলা সুন্নত।তবে প্রয়োজনে বাম দিকে চলা যাবে।প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী রাস্তার বাম দিকে চলা যেতে পারে।
(২)কবর যিয়ারত করতে গেলে তিলাওয়াত ও দোয়া করা অবস্থায় কবরবাসীরা আমাদেরকে দেখে না এবং শুনেও না। তবে আল্লাহ তাদেরকে বুঝিয়ে দেন। জীবিতদের জন্য কবরবাসীর দু’আকে আল্লাহ কবুল করেন ও জীবিতদের নিকট পৌছে দেন।
(৩)ঢাকায় বাড়ি আছে কোনো ভাই আন্তরিকতার দিক থেকে অন্য কোনো ভাইকে নিজ বাসায় ব্যবসা করার জন্য অংশদারীত্বের প্রস্তার দেয়ার পর তার নিজ বাসায় থাকার ভাড়া মওকুফ ২য় ব্যক্তির প্রতি দয়া হবে না। তবে এটা এহসান হবে, এবং সদয় ও উত্তম আচরণ হবে।
=স্বনির্ভরতার দু'আ=
আল্লাহুম্মা ইকফিনি বি হালালিকা আন হারামিকা
এই দু'আ নিয়মিত পড়লে আত্মনির্ভর্শীল থাকা যাবে।ইনশাআল্লাহ।
(৪)জ্বী, তারা এমনটা করতেন। মূলকথা হল,দৃষ্টিকে অবনত রাখার সকল প্রকার চেষ্টাপ্রচেষ্টাই তারা করতেন।
(৫)শেখ সাদি(রহঃ) এর কবিতা "বালাগাল উলা বিকামালিহি......)
এটা কুরআন সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত কোনো কবিতা বা দু'আ নয়।তবে এই কবিতার মর্মার্থ খুবই সুন্দর ও ভালো।তাই আকিদা বিশুদ্ধ রেখে এটাকে পড়া যেতে পারে।তথা এমন আকিদা রাখতে হবে যে,হুবহু এই দু'আ কুরআনেও আসেনি এবং হাদীসেও আসেনি।সুতরাং এটাকে সুন্নত আ'মল মনে করা যাবে না।যেহেতু হাদীস দ্বারা বর্ণিত অন্যান্য দুরুদের অর্থ তাতে বিদ্যমান রয়েছে।তাই এই কবিতা পড়লে সওয়াবের আশা রাখা যাবে। আল্লাহ চাহে তো সওয়াব দিয়ে দিতেও পারেন।
(৬)উদ্দেশ্য যদি এমন হয় যে, হে জ্বীন! কুরআনি তজ্বল্লীর পাওয়ার দ্বারা তর খারাবিকে জাবালিয়ে দেবো,নষ্ট করে দেবো,তকে তাড়িয়ে দেবো তাহলে এমনটা বলা যেতে পারে। এরকম বক্তব্য দ্বারা কসম হয়ে যাবে। যদি সে তাড়াতে না পারে,তাহলে তাকে কাফফারা দিতে হবে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন-
https://www.ifatwa.info/1808
(৭)
শাহাদতের নসীব হওয়ার জন্য উমর রাযি এর মত দু'আ করতে হবে। উমর রাযি শাহাদতের দু'আ করে বলতেন,
"আল্লাহুম্মার-রুযক্বনি শাহাদাতান ফি সাবিলিকা ওয়াল মাওতা ফি বালাদি হাবিবিকা"
ইমাম নববী রাহ বলেন,
قَالَ الْعُلَمَاءُ الْمُرَادُ بِشَهَادَةِ هَؤُلَاءِ كُلِّهِمْ غَيْرِ الْمَقْتُولِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَنَّهُمْ يَكُونُ لَهُمْ فِي الْآخِرَةِ ثَوَابُ الشُّهَدَاءِ وَأَمَّا فِي الدُّنْيَا فَيُغَسَّلُونَ وَيُصَلَّى عَلَيْهِمْ وَقَدْ سَبَقَ فِي كِتَابِ الْإِيمَانِ بَيَانُ هَذَا وَأَنَّ الشُّهَدَاءَ ثَلَاثَةُ أَقْسَامٍ شَهِيدٌ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَهُوَ الْمَقْتُولُ فِي حَرْبِ الْكُفَّارِ وَشَهِيدٌ فِي الْآخِرَةِ دُونَ أَحْكَامِ الدُّنْيَا وَهُمْ هَؤُلَاءِ الْمَذْكُورُونَ هُنَا وَشَهِيدٌ فِي الدُّنْيَا دُونَ الْآخِرَةِ وَهُوَ مَنْ غَلَّ فِي الْغَنِيمَةِ أَوْ قُتِلَ مُدْبِرًا قَوْلُهُ
আল্লাহ রাস্তায় জিহাদ করে শাহাদত বরণ কারী ব্যতীত হাদীসে বর্ণিত অন্য সবের শাহাদত বরণের অর্থ হলো যে,তারা আখেরাতে শহীদের মর্যাদা পাবে।কিন্তু দুনিয়াতে তাদের উপর শহীদের মর্যাদা প্রয়োগ হবে না বরং নিয়মতান্ত্রিক তাদেরকে গোসল দিয়ে জানাযা পড়ে তারপর তাদেরকে দাফন করা হবে।
শহীদ মূলত তিন প্রকার।যথাঃ-
(১)দুনিয়া-আখেরাতে শহীদের মর্যাদা পাবে।ঐ ব্যক্তি যে কাফেরের সাথে যুদ্ধ করে করে যুদ্ধক্ষেত্রে মারা গেছে।
(২)আখেরাত হিসেবে শহীদ।তথা আখেরাতে শহীদের মর্যাদা পাবে।কিন্তু দুনিয়া হিসেবে শহীদ হকে না তথা তাকে শহীদ বলে ডাকা যাবে না।বরং তাকে গোসল দিয়ে তার জানাযা পড়ে তাকে দাপন করা হবে।এরাই হল তারা যাদের আলোচনা বিভিন্ন হাদীসে এসেছে যে,যারা ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা যাবে বা আগুনে জ্বলে কিংবা পানিতে ডুবে মারা যাবে।
(৩)দুনিয়া হিসেবে শহীদ।অর্থাৎ যাদের ব্যাপারে শহীদের মর্যাদা পেশ করা হবে কিন্তু আখেরাতে তারা শহীদের মর্যাদা পাবে না।এরা হল,তারা যারা জিহাদ পরবর্তী গণিমতের মালকে আত্মস্বাৎ করেছে।বা জিহাদের ময়দার থেকে পলায়নপর অবস্থায় যার মৃত্যু হয়েছে।(আল-মিনহাজ্ব শরহে মিশকাত-১৩/৬৩) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/1093
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ! ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কাফিরের সাথে যুদ্ধ ব্যতীত যাদেরকে হাদীসে শহীদ বলা হয়েছে,তারা জান্নাতে শহীদের মর্যাদা পাবে। তারা জান্নাতে প্রথমেই বিনা হিসাবে প্রবেশ করবে।
(৮)এমনটা করা জায়েয হবে না।কুরআন সুন্নাহে হেটে হেটে চাঁদা করার কোনো নযির বা প্রমাণ নেই।
(৯)খুশু খুযুর জন্য আল্লাহ আমার সামনে আছেন,এমন কল্পনা না করে বরং আমি আল্লাহর সামনে আছি, এমনটাই কল্পনা করতে হবে।