আসসালামু আলাইকুম উস্তায। আমাদের একটা অনলাইন ফেইসবুক পেইজ আছে। যেখানে সারাদেশে পণ্য বিক্রয় করা হয়।
১. এবছর আমরা লিফলেট বিক্রি করেছি, প্রথমবার কিছু সংখ্যক লিফলেট প্রেস থেকে ছাপিয়ে ছবি তুলে বিজ্ঞাপন দিয়েছি। ক্রেতারা আমাদের ইনবক্সে অগ্রিম টাকা পেমেন্ট করেছে, আমরা কুরিয়ারে পাঠিয়ে দিয়েছি। একপর্যায়ে আমাদের স্টকে থাকা লিফলেট ফুরিয়ে যায়। কিন্তু ঐসময়ও আমাদের নিকট অর্ডার আসতে থাকে। আমরা অর্ডার কনফার্ম করি এবং একদিন পরেই প্রেস থেকে ছাপিয়ে এনে কুরিয়ারে পাঠিয়ে দেই। এইযে লিফলেট হাতে না থাকা অবস্থায় টাকা নিলাম, এরপর ছাপিয়ে এনে কুরিয়ারে পাঠালাম এটা কি 'কবজা করার পূর্বেই বিক্রয়ের' অন্তর্ভুক্ত হবে? এটা কি নাজায়েজ হবে?
২. লিফলেটের পিডিএফ যারা চেয়েছে আমরা দিয়েছি। অনেকেই না দেখেই অর্ডার করেছে এটা কি জায়েজ হবে?
৩. আমরা ম্যাসেঞ্জার ও হোয়্যাটসএ্যাপে মোট ৫ জন ছিলাম, কেউ অর্ডার করলে আমরা তাদের নাম, ঠিকানা আরেক ভাইয়ের নিকট দিতাম, যিনিও আমাদের কমিউনিটির, তার কাছেই সব লিফলেট ছিল, উনিই প্যাক করে কুরিয়ারে পাঠাত।
এইযে ক্রেতা টাকা দিল আমাদের কিন্তু হস্তাগত ছিল অন্য ভাইয়ের নিকট এটা কি 'কবজা করার পূর্বেই বিক্রয়' হবে? আমি লিফলেট স্পর্শও করিনি। ক্রেতা টাকা পাঠিয়ে নাম, ঠিকানা দিয়েছে, আমি সেই ভাইকে দিয়েছি, সেই ভাই তদানুসারে কুরিয়ার করেছে।
৪. আমরা সবাই এখানে মালিকপক্ষ বলা যায়, কেউই পারিশ্রমিক নির্ধারণ করিনি কারণ কাজটা দাওয়াহ'র উদ্দেশ্যে ছিল। এখন যদি লভ্যাংশ সবার সন্তুষ্টিচিত্তে বন্টন হয় কোন নির্ধারণ ছাড়া এটা কি জায়েজ হবে?(কারণ শ্রমিকের মূল্য নির্ধারণ ছাড়া কাজে সম্ভবত নিষেধাজ্ঞা আছে)
৫. যদি পণ্যের বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতার থেকে অগ্রিম টাকা নেওয়া হয়, সেই টাকা দিয়েই পাইকারি রেটে বিক্রেতা পণ্য কিনে নিজের হস্তাগত করে ক্রেতার নিকট পাঠিয়ে দেয়, লাভ করেই, এটা কি জায়েজ পদ্ধতি হবে? কোন ক্রুটি থাকলে পণ্য ফেরত নেয়া হয়।
৬. কাঁসা, পিতলের পাত্রে মুসলিমদের খাওয়ায় কোন নিষেধাজ্ঞা আছে কি?
৭. হিন্দুদের পূজার আগে হিন্দুদের নিকট কাঁসা/পিতলের প্লেট/গ্লাস বিক্রয় করা যাবে কি?(মোটামুটি নিশ্চিত যে এগুলো তারা পূজার কাজে ব্যবহার করবে, কারণ কাঁসা পিতল ছাড়া তাদের পূজা হয় না)
৮. পণ্যের স্বচ্ছতা থাকতে হয়, এখন ধরেন আমি একটা কাঁসার প্লেট বাজার থেকে কিনে এনে ছবি তুলে বিজ্ঞাপন দিলাম যে কাঁসার প্লেট কিনতে ইনবক্সে নক দিন। আমার কাছে মাত্র একটাই আছে। সেটার ওজন ধরলাম ৫০০ গ্রাম, মূল্য ২৫০০ টাকা। এখন ক্রেতা আমার নিকট চাইল একটা প্লেট, আমি তার কাছে অগ্রিম ৩০০০ টাকা নিলাম, বললাম যে প্লেট পাঠাব সেটার ওজন কমবেশি হতে পারে, যেহেতু কাঁসার সব প্লেটের ওজন এক হয় না, কিছুটা পার্থক্য হয়। আমি বাজার থেকে ৫১০ গ্রামের একটা প্লেট আনলাম, যেটা দাম ২৬০০ টাকা। বাকি ৪০০ ফেরত দিলাম। এভাবে কি জায়েজ হবে?
৯. কুরিয়ার চার্জ কত নেবে এটা আগে থেকে বোঝা যায় না।প্যাক করে নিয়ে গেলে ওজন করার পর বোঝা যায়। এখন ক্রেতাকে যদি বলি আপাতত ১০০ টাকা কুরিয়ার চার্জ দেন, কম লাগলে পাঠিয়ে দেব, ক্রেতাও দিয়ে দিল, পরে কম যদি ২০ টাকাও লাগে, সেটা রিচার্জ করে পাঠিয়ে দিলাম। এটা কি জায়েজ হবে?
১০. ইসলামি অর্থনীতির ফিকহের জন্য বাংলা ভাষার ভালো একটা কিতাবের নাম জানালে উপকৃত হতাম।