জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
★আরাফাত এর দিনের রোযা।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ مَنْصُورٍ ، عَنْ مُجَاهِدٍ ، عَنْ حَرْمَلَةَ بْنِ إِيَاسٍ ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " صَوْمُ يَوْمِ عَرَفَةَ يُكَفِّرُ سَنَتَيْنِ : مَاضِيَةً وَمُسْتَقْبَلَةً، وَصَوْمُ عَاشُورَاءَ يُكَفِّرُ سَنَةً مَاضِيَةً ".
আবূ কাতাদাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-বলেন , আশুরার দিনে রোযা “ বিগত এক বছর এবং সামনের এক বছরের গুনাহ মোচন করে দেয়,,,,,,, ।”
(মুসলিম শরীফ 22535)
আবু কাতাদা রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
صِيَامُ يَوْمِ عَرَفَةَ، إِنِّي أَحْتَسِبُ عَلَى اللهِ أَنْ يُكَفِّرَ السّنَةَ الّتِي قَبْلَهُ وَالسّنَةَ الّتِي بَعْدَهُ.
আরাফার দিনের রোযার বিষয়ে আমি আল্লাহর কাছে প্রত্যাশা করি যে, (এর দ্বারা) বিগত বছরের এবং তার পরের বছরের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৭৪৯
আরো জানুনঃ
★আশুরার দুইটি রোযা।
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
أَفْضَلُ الصِّيَامِ، بَعْدَ رَمَضَانَ، شَهْرُ اللهِ الْمُحَرّمُ، وَأَفْضَلُ الصّلَاةِ، بَعْدَ الْفَرِيضَةِ، صَلَاةُ اللّيْلِ.
রমযানের পর উত্তম রোযা হচ্ছে আল্লাহর মাস মুহাররমের রোযা। আর ফরয নামাযের পর উত্তম নামায হচ্ছে রাতের নামায। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৬৩
হাদীসে এসেছে,
قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” صُومُوا يَوْمَ عَاشُورَاءَ، وَخَالِفُوا فِيهِ الْيَهُودَ، صُومُوا قَبْلَهُ يَوْمًا، أَوْ بَعْدَهُ يَوْمًا
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমরা আশুরার রোযা রাখ ইহুদীদের সাদৃশ্য পরিত্যাগ করে; আশুরার আগে বা পরে আরো একদিন রোযা রাখ। [মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২১৫৪, ১/২৪১]
আরো জানুনঃ
,
★প্রতি সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখা সুন্নাত।
عن أبي هريرة : أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال تعرض الأعمال يوم الإثنين والخميس فأحب أن يعرض عملي وأنا صائم
হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ সোমবার ও বৃহস্পতিবার আমল উপস্থাপন করা হয় [আল্লাহর কাছে]। আর আমার আমল উপস্থাপন করার সময় রোযারত থাকাকে পছন্দ করছি। {সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-৭৪৭, সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-২৬৬৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২১৭৫৩, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-২৬১৭, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৩৫৪১, কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-২৪১৯১}
আরো জানুনঃ
,
★শা‘বান মাসে নফল রোযা
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. বলেন-
كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ يَصُومُ حَتّى نَقُولَ: لاَ يُفْطِرُ، وَيُفْطِرُ حَتّى نَقُولَ: لاَ يَصُومُ، فَمَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ اسْتَكْمَلَ صِيَامَ شَهْرٍ إِلّا رَمَضَانَ، وَمَا رَأَيْتُهُ أَكْثَرَ صِيَامًا مِنْهُ فِي شَعْبَانَ.
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (অবিরাম) রোযা রাখতেন, যার কারণে আমরা বলতাম, আর বাদ দিবেন না। আবার (অবিরাম) রোযাহীনও থাকতেন, যার কারণে আমরা বলতাম, আর রাখবেন না। আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রমযান ছাড়া অন্য কোনো মাসে পুরো মাস রোযা রাখতে দেখিনি। তেমনি দেখিনি শা‘বানের চেয়ে বেশি অন্য কোনো মাসে রোযা রাখতে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৯৬৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৫৬
★শাওয়ালের ছয় রোযা।
হযরত আবু আইয়ূব আনসারী রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
مَنْ صَامَ رَمَضَانَ ثُمّ أَتْبَعَهُ سِتّا مِنْ شَوّالٍ، كَانَ كَصِيَامِ الدّهْرِ.
যে মাহে রমযানের রোযা রাখল এরপর শাওয়ালে ছয়টি রোযা রাখল এটি তার জন্য সারা বছর রোযা রাখার সমতুল্য হবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৬৪
,
★আইয়ামে বিজের তিনটি রোযা।
প্রত্যেক আরবী মানে তিনটি রোযা রাখা সুন্নত।সুন্নতে গায়রে মু'আক্কাদা।রাখলে অনেক সওয়াব।না রাখলে কোনো গেনাহ নাই।
মানের যে কোনো সময় রাখা যায়।তবে উত্তম হল,আরবী মাসের ১৩,১৪,১৫তারিখ রোযা রাখা।
কোনো অসুবিধে থাকলে অন্য যেকোনো সময়ও রাখা যাবে।
ক্বাতাদাহ ইবনে মিলহান (রা.) হতে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে শুক্লপক্ষের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে সিয়াম পালনের জন্য আদেশ করতেন (আবু দাউদঃ ২৪৪৯, নাসায়ীঃ ২৪৩২)
হযরত আবু যর গিফারী রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
إِذَا صُمْتَ مِنْ شَهْرٍ ثَلَاثًا، فَصُمْ ثَلَاثَ عَشْرَةَ، وَأَرْبَعَ عَشْرَةَ، وَخَمْسَ عَشْرَة.
তুমি যদি মাসে তিন দিন রোযা রাখ তাহলে তের তারিখ, চৌদ্দ তারিখ ও পনের তারিখ রোযা রেখো। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২১৪৩৭; জামে তিরমিযী, হাদীস ৭৬১; সুনানে নাসায়ী, হাদীস ২৪২৪
,
★এক দিন পর পর রোযা
এই সওমকে হাদীস শরীফে ‘সওমে দাউদ’ বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা.-এর একটি চমৎকার ঘটনা হাদীসের কিতাবে বর্ণিত হয়েছে। ঘটনাটি একদিকে যেমন ইসলামী শিক্ষার ব্যাপ্তি, সহজতা ও স্বাভাবিকতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, তেমনি সাহাবায়ে কেরামের ইবাদত-প্রিয়তা ও আখিরাত বিমুখিতারও এক অনুপম নমুনা।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা. তাঁর নিজের ঘটনা বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে এলেন এবং বললেন, আমি কি শুনিনি যে, তুমি রাতভর নামায পড় আর দিনে রোযা রাখ? আমি বললাম, জী হাঁ! তিনি বললেন, এমনটা করো না। (নামাযে) দাঁড়াবে এবং ঘুমাবে, রোযা রাখবে এবং রোযা ছাড়াও থাকবে। কারণ তোমার শরীরেরও তোমার উপর হক আছে, তোমার চোখেরও তোমার উপর হক আছে, তোমার অভ্যাগতেরও তোমার উপর হক আছে এবং তোমার স্ত্রীরও তোমার উপর হক আছে। আর সম্ভবত তোমার আয়ু দীর্ঘ হবে। তোমার পক্ষে এ-ই যথেষ্ট যে, প্রতি মাসে তিন দিন রোযা রাখবে, কারণ প্রত্যেক নেক আমলের পরিবর্তে আছে তার দশ গুণ। ফলে এটিই সারা বছরের রোযা হবে। তিনি বলেন, কিন্তু আমি কাঠিন্য অন্বেষণ করলাম, ফলে আমার উপরও কাঠিন্য বর্তাল। আমি বললাম, আমি তো এতদ্ভিন্নেরও সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, তাহলে প্রতি সপ্তাহে তিন রোযা রাখ। আমি আরো কাঠিন্য অন্বেষণ করলাম, ফলে আমার উপর আরো কাঠিন্য বর্তাল। আমি বললাম, আমি তো এতদ্ভিন্নের সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, তাহলে আল্লাহর নবী দাউদের (আলাইহি ওয়া আলা নাবিয়্যিনাস সালাতু ওয়াস সালাম) রোযা রাখ। আমি বললাম, আল্লাহর নবী দাউদের রোযা কী? তিনি বললেন, ‘নিসফুদ দাহর’। (অর্থাৎ একদিন পর একদিন রোযা রাখা।) -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬১৩৪
বিস্তারিত জানুনঃ
,
(০২)
না,একসাথে দুই প্রকার রোযার নিয়ত করা যাবে না।যেকোনো একটি নিয়তে একটি রোযাই রাখতে হবে।সুতরাং দুইটির নিয়ত করলে একটি তথা শুধুমাত্র কা'যা রোযাই আদায় হবে।
আরো জানুনঃ
,