আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
61 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ
১. আমি অনার্স ৩য় বর্ষে পড়ি।জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে। এখানে যেই বিষয়গুলো আছে সবগুলোতেই সুদভিত্তিক পড়ালেখা এবং বিভিন্ন জাতীয়তাবাদ + ভ্রান্ত মতবাদের কিছু চ্যাপ্টার হলেও আছে।আর আমাদের ক্লাস হয় ছেলে মেয়ে একসাথে।কিন্তু আমি ক্লাস করি না।তবে পরীক্ষার সময় তো ছেলে মেয়ে একসাথেই সিট পড়ে। তখন একসাথেই বসা লাগে।সামনে পিছনে মেয়ে থাকাটাই স্বাভাবিক।তাছাড়া অনেক সময় ম্যাডামেরও পরীক্ষার হলে ডিউটি পড়ে।আর পরীক্ষা হয় দুপুর ১ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত।শীতকালে পরীক্ষার সময় আসরের নামাজ পরীক্ষার হলেই থাকা লাগে।আর যোহরের নামাজ পরীক্ষার আগে একা পড়তে হয়।এইসবদিক বিবেচনা করে আমার কি অনার্স পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া জায়েজ হবে নাকি হবে না???

২. দ্বীনে ফেরার পর আগের যেই বন্ধুগণ থাকে বেদ্বীন তাদের সাথে কি মেলামেশা করা যাবে ?

৩.আমার ২ বছরের বড় বোন সেক্যুলার এবং বেপর্দাভাবে চলাফেরা করে।আমি বারণ করার পরও আমার কথা শুনে না।এমনকি পর্দার কথা বললে বিরক্ত হয়।এই অবস্থায় আমি কি তার সাথে চলাফেরা করতে পারবো?বাড়িতে কিংবা ঢাকা গেলে দেখা করা যাবে কিনা??যেহেতু বেপর্দাভাবে চলাফেরা করে??

৪.আমার বাবা বেদ্বীন + কওমী আলেম উলামাদের গালিগালাজ করে।কারণ উনি রাজনীতির কোনো একদলের অন্ধভক্ত।আমার হালাল হারাম মেইনটেইন দেখে আমাকে বিভিন্ন কটাক্ষ করে এবং বলে এই যুগে এতো ইসলাম মেনে চলা যাবে নাকি।আরোও বিভিন্ন ধরনের ইসলামের পর্দা,হালাল হারাম ব্যপার নিয়ে কটাক্ষ করে আমাকে।আমি ভালোভাবে অনেক বুঝিয়েছি কিন্তু কিছু বললে আরোও বলে আমি কি কম বুঝি??এইসব ব্যপার নিয়ে আমি উনার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছি প্রায় ৩ মাস ধরে।এজন্য কি আমি গুনাহগার হয়ে যাচ্ছি?

৫. স্কিন কেয়ারের স্ত্রীর নিজের ক্রিম যদি স্বামীকেও ব্যবহার করায় সেইক্ষেত্রে কি গুনাহ হবে?উক্ত ক্রিম চেহারার উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং স্পট দূর করতে সাহায্য করে।সেই ক্রিম কি স্বামীর দেওয়া জায়েজ হবে?

৬.বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে খাবার,পোশাক,থাকার বাসস্থান এবং বিভিন্ন শখের জিনিস কেনা + ব্যবহার করার ক্ষেত্রে কতটুকু পরিমাণ হলে বিলাসিতা হবে না?কতটুকু হলে বিলাসিতার মধ্যে পড়বে এবং হাশরের দিন বিলাসিতার জবাব দিতে হবে একটু জানাবেন


৭.  রাসুলুল্লাহ সাঃ এবং আবু বকর রাঃ এর অবয়োব + সাদা জুব্বা +পাগড়ি পরিধান করে ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছে একটি উপশহরে, চেহারা স্পষ্ট দেখি নাই।কিন্তু সেখানের লোকজন বলছে উনি সত্য নবী না।তখন আমি বলেছিলাম যদি সত্য নবী হয়ে থাকে তাহলে আবু বকর রাঃ এই পানির কুয়াতে ঝাপ দিলেও আল্লাহর ইচ্ছায় উনার কোনো ক্ষতি হবে না।অতঃপর আবু বকর রাঃ উনি ঝাপ দিলেন এবং পানির কুয়ার ভিতর দিয়ে রাস্তায় গিয়ে দাড়িয়ে গেলেন এবং সাথে সাথেই ঘুম ভেঙে গেলো। কুয়ার ভিতরে পানিগুলো শূন্যে ভেসে আছে।পানির নিচে আবার রাস্তা। এমন কিছু স্বপ্নে দেখলে সেটা কি সত্যই রাসুলুল্লাহ সাঃ ছিলেন?নাকি চিন্তাভাবনা থেকে দেখেছি?এই ব্যাপারে জানাবেন ইন শা আল্লাহ.....

1 Answer

+1 vote
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
https://ifatwa.info/26400/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেনঃ-
 
مَنۡ کَفَرَ بِاللّٰہِ مِنۡۢ بَعۡدِ اِیۡمَانِہٖۤ اِلَّا مَنۡ اُکۡرِہَ وَ قَلۡبُہٗ مُطۡمَئِنٌّۢ بِالۡاِیۡمَانِ وَ لٰکِنۡ مَّنۡ شَرَحَ بِالۡکُفۡرِ صَدۡرًا فَعَلَیۡہِمۡ غَضَبٌ مِّنَ اللّٰہِ ۚ وَ لَہُمۡ عَذَابٌ عَظِیۡمٌ ﴿۱۰۶﴾

কেউ বিশ্বাস করার পরে আল্লাহকে অস্বীকার করলে এবং অবিশ্বাসের জন্য হৃদয় উন্মুক্ত রাখলে তার উপর আপতিত হবে আল্লাহর ক্রোধ এবং তার জন্য রয়েছে মহাশাস্তি; তবে তার জন্য নয়, যাকে অবিশ্বাসে বাধ্য করা হয়েছে, অথচ তার চিত্ত বিশ্বাসে অবিচল।
(সুরা নাহল ১০৬ নং আয়াত।)
,
ইমাম নববী রহঃ বলেনঃ
 
قول الإمام النووي رحمه الله: "من نقل الشهادتين حكايةً بأنْ يقول: سمعت فلاناً يقول: لا إله إلا الله، محمد رسول الله، فهذا لا يصير مسلماً بلا خلاف؛ لأنه حاكٍ، كما لا يصير المسلم كافراً بحكايته الكفر" [المجموع 3/ 99].
কোনো কাফের  যদি নকলের ভিত্তিতে শাহাদত কালেমা পাঠ করে,তাহলে সে মুসলিম হবেনা।
কেননা সে শুধু বর্ণনা কারী।
অনুরুপ ভাবে কেহ যদি বর্ণনার জন্য কুফরী কালাম বলে,তাহলেও সে কাফের হয়না। 
,
★সুতরাং পরীক্ষায় বর্ণনার জন্য যেকোনো কুফরী কথা/মিথ্যা গল্প লিখলে ঈমান চলে যাবেনা।
এক্ষেত্রে তাকে তওবা করতে হবে।
,
তবে ইসলাম বিরোধী কোনো আকীদা পোষন করা জায়েজ হবেনা।    

আরো জানুনঃ  

যতদিন পর্যন্ত এই দেশে পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে ,ততদিন প্রয়োজনের তাগিদে নিম্নোক্ত শর্তাদির সাথে উলামায়ে কেরামগন  কলেজ-ভার্সিটিতে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেন।

১/শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে হতে হবে।

২/চোখকে সব সময় নিচু করে রাখতে হবে,প্রয়োজন ব্যতীত কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকার দিকে তাকানো যাবে না।মহিলা/পুরুষ তথা অন্য লিঙ্গের  সহশিক্ষার্থীদের সাথে তো কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা যাবেই না।সর্বদা অন্য লিঙ্গর শিক্ষার্থী থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে।
ফাতাওয়া উসমানী ১/১৬০-১৭১;

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
উপরোক্ত শর্তাবলী পুরোপুরি ভাবে মেনে আপনার জন্য অনার্স পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া জায়েজ হবে।

এক্ষেত্রে পরীক্ষার দিন গুলোতে ওয়াক্তের শুরুতে জোহরের নামাজ আদায় করবেন।
আসরের ওয়াক্তের শেষের দিকে আসরের নামাজ আদায় করবেন । 

(০২)
তাদের সাথে মেশা যাবে।
তবে এক্ষেত্রে বেদ্বীনের দিকে ফিরে যাওয়ার বা গুনাহে জড়িয়ে পড়ার আশংকা থাকলে তাদের সাথে মিশবেননা।
তবে দেখা হলে সালাম ও কুশল বিনিময় করবেন।
তাদেরকে দ্বীনের পথে দাওয়াত দিবেন।

(০৩)
তার সাথে দেখা করা যাবে।
প্রয়োজনে চলাফেরা করা যাবে।
তবে বিনা প্রয়োজনে বাহিরে তার সাথে এভাবে চলাফেরা না করারই পরামর্শ থাকবে। 

(০৪)
আপনার গুনাহগার হচ্ছেন।
এক্ষেত্রে ২/১ দিন পর পর হলেও কমপক্ষে সালাম বিনিময় করতে হবে।
সম্পর্ক ছিন্ন করা যাবেনা।

মাঝে মাঝে ফোনে তার স্বাস্থ্যের খবর নিতে হবে। তার ভালোমন্দ জিজ্ঞাসা করতে হবে। 

(০৫)
তাতে হারাম উপাদান না থাকলে তাহা কখনো কখনো ব্যবহার করা যাবে,এটি নাজায়েজ নয়।
তবে নারীদের মতো সাজসজ্জা করা যাবেনা।

(০৬)
প্রয়োজন থেকে অতিরিক্ত হলে ও প্রয়োজন থেকে অতিরিক্ত বেশি মূল্যের হলে তাহা বিলাসিতার অন্তর্ভুক্ত হবে।

(০৭)
আপনার স্বপ্ন খুবই মুবারক স্বপ্ন। রাসূল সাঃ কে দেখেছেন মানে আপনার আমল সুন্দর। আপনি আরো বেশি বেশি সুন্নতের পাবন্দ হতে চেষ্টা করুন। বেশি বেশি দরূদ শরীফ পাঠ করুন। আল্লাহ তাআলা আপনাকে রাসূল সাঃ এর একজন সাচ্চা উম্মত ও প্রিয়ভাজনদের কাতারে শামিল করেই ইনশাআল্লাহ হাশর করাবেন।

বেশি বেশি দরূদ পাঠ এবং সুন্নতের পাবন্দি রক্ষা করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যান। কোন সুন্নতের প্রতি যেন অবহেলা না হয়। আল্লাহ তাআলা আপনার মঙ্গল করুন।
,
রাসূল সাঃ এর আকৃতি শয়তান ধারণ করতে পারে না। তাই স্বপ্নে রাসূল সাঃ দৃষ্টিগোচর হয়েছে বলে প্রবল ধারনা হলে, বুঝতে হবে রাসূল সাঃ কেই দেখছে। অন্য কাউকে নয়।

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...