আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
115 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম
আমি হানাফি মাজহাবের অনুসরণ করি
কয়টা বিষয় জানার ছিলো বিষয় জানতে চাচ্ছি কোরআন হাদিস থেকে উত্তর দিবেন ইনশাআল্লাহ
১/ইসলামে নারী নেতৃত্ব কি জায়েজ? অনেকেই কিছু কিছু বিষয়ের উপর ভিত্তি করে নারী নেতৃত্ব প্রমান করতে চায় যদি এদের খন্ডনসহ দেন বেশি উপকৃত হবো।
২/গনতন্ত্র শাসন ব্যবস্থা কি ইসলামে জায়েজ?

৩/নারীরা কি জিহাদে জুদ্ধে অংশ নিতে পারবে?

একটা হাদিস বা ঘটনা দেখলাম নারীরা জিহাদে অংশ নিয়ে জিহাদ করতে পারবে
উম্মে আম্মারা (রা.) উহুদের যুদ্ধে মহানবী (সা.)-এর জন্য প্রাণপণ যুদ্ধ করেন। ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) উহুদের যুদ্ধে উম্মে আম্মারা (রা.)-এর ভূমিকা সম্পর্কে বলেন, ‘আমি যখন ডানে-বাঁয়ে তাকিয়েছি কেবল তাঁকে যুদ্ধ করতে দেখেছি।’ (কানজুল উম্মাল, হাদিস : ৩৭৫৮৯)

উম্মে আম্মারা (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে উহুদ, খাইবার, মক্কা অভিযান, হুনাইন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি হিজরতের আগে বাইয়াতে উকবার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান, হুদাইবিয়ার সন্ধিচুক্তি ও উমরা সফরে মহানবী (সা.)-এর সঙ্গী হন। এ ছাড়া আবু বকর (রা.)-এর নেতৃত্বে ‘রিদ্দাহ’-এর যুদ্ধে এবং ইয়ামামার যুদ্ধেও অংশগ্রহণ করেন। ইয়ামামার যুদ্ধে মুসাইলামাতুল কাজ্জাবের প্রাচীর টপকে ভেতরে প্রবেশ করলে এক অবিশ্বাসীর আঘাতে তিনি তাঁর হাত হারান এবং শরীরে ১২টি আঘাত পান। তাঁর ছেলে আবদুল্লাহ ইবনে জায়েদ (রা.) মুসাইলামাকে হত্যা করেন

এই ঘটনাটা কি সঠিক?বা নারীরা কি সরাসরি জিহাদে অংশ নিতে পারবে?

৪/নারীরা কি নারীদের ইমামতি করতে পারবে?ইমামতির সময় কি উচ্চস্বরে তেলওয়াত করতে পারবে?

৫/নারীরা কি আজান ও ইকামত দিতে পারবে?অনেকেই বলে আয়েশা(রা)আজান ইকামত দিয়েছেন।

৬/ছেলেদের জন্য জামাতে ইকামত দেওয়া কি ওয়াজিব

৭/কেউ কেউ মনে করেন বিবাহের রাতে সহবাস করা ফরজ এটা কি সঠিক?

1 Answer

0 votes
by (573,930 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০৪)
নারীরা নারীদের ইমামতি করতে পারবেনা।
এটা মাকরুহে তাহরিমি। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৫)
নারীরা আযান ও ইকামত দিতে পারবেনা।

الفتاوى الهندية (1/ 53):
وليس على النساء أذان ولا إقامة، فإن صلين بجماعة يصلين بغير أذان وإقامة، وإن صلين بهما جازت صلاتهن مع الإساءة، هكذا في الخلاصة"
সারমর্মঃ-
মহিলাদের উপর আযান ইকামত নেই। তারা যদি জামায়াতের সহিত নামাজ আদায় করে,সেক্ষেত্রে আযান ইকামত ছাড়াই নামাজ আদায় করবে। 


(০৬)
জামাআতের সাথে নামাজ আদায় কারীর জন্যে ইকামত দেওয়া সুন্নাত।
একাকী নামাজ আদায় কারীর জন্য ইকামত দেওয়া মুস্তাহাব।
,
★যদি একাকী নামাজ আদায় কারী ইকামত না দেয়,তাহলে মাকরুহ হবেনা।
নামাজের কোনো সমস্যা হবেনা।   
,
জামায়াতের সহিত নামাজ যদি ইকামত ছাড়া হয়,তাহলে মাকরুহ হবে,সুন্নাতের খেলাফ হবে। 
,
উকবা ইবনু আমির রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ-কে বলতে শুনেছি যে,

يَعْجَبُ رَبُّكَ مِنْ رَاعِي غَنَمٍ فِي رَأْسِ شَظِيَّةِ الْجَبَلِ يُؤَذِّنُ بِالصَّلاَةِ وَيُصَلِّي فَيَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ انْظُرُوا إِلَى عَبْدِي هَذَا يُؤَذِّنُ وَيُقِيمُ الصَّلاَةَ يَخَافُ مِنِّي قَدْ غَفَرْتُ لِعَبْدِي وَأَدْخَلْتُهُ الْجَنَّةَ

তোমার রব সে ব্যক্তির উপর খুশি হন, যে পাহাড়ের উচ্চশৃঙ্গে বকরী চরায় এবং নামাযের জন্য আযান দেয় ও নামায আদায় করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, আমার এই বান্দাকে দেখ! নামাযের জন্য সে আযান ও ইকামত দিচ্ছে। সে আমাকে ভয় করছে। আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করে দিলাম ও জান্নাতে প্রবেশ করালাম। (আবু দাউদ ১২০৩)

 “কোন ব্যক্তি যখন কোন বৃক্ষ-পানিহীন প্রান্তরে থাকে, অতঃপর সেখানে নামাযের সময় উপস্থিত হয়, তখন সে যেন ওযু করে। পানি না পেলে যেন তায়াম্মুম করে। অতঃপর সে যদি শুধু ইকামত দিয়ে নামায পড়ে, তাহলে তার সাথে তার সঙ্গী দুই ফিরিশ্তা নামায পড়েন। কিন্তু সে যদি আযান দিয়ে ও ইকামত দিয়ে নামায পড়ে, তাহলে তার পশ্চাতে আল্লাহর এত ফিরিশ্তা নামায পড়েন, যাদের দুই প্রান্ত নজরে আসে না!” (আব্দুর রাযযাক, মুসান্নাফ, সহিহ তারগিব ২৪১নং)

আর একদা তিনি আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহ্মানকে মরুভূমিতে ছাগপালে থাকাকালে নামাযের জন্য উচ্চশব্দে আযান দিতে আদেশ করেছিলেন। (বুখারী প্রমুখ, মিশকাত ৬৫৬নং)

আরো জানুনঃ 
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,    
ছেলেদের জন্য জামাতে ইকামত দেওয়া  ওয়াজিব নয়৷  এটা সুন্নাত।

(০৭)
এটা সঠিক নয়।
কুরআন সুন্নাহ দ্বারা এর আবশ্যকীয়তা প্রমান হয়না। এটা স্বামী স্ত্রীর মধ্যকার ব্যাপার।

(১.২.৩)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
আবূ হারূন আল-আবদী (রহঃ) থেকে বর্ণিত।
عَنْ أَبِي هَارُونَ الْعَبْدِيِّ، قَالَ كُنَّا إِذَا أَتَيْنَا أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ قَالَ مَرْحَبًا بِوَصِيَّةِ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ . إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ لَنَا " إِنَّ النَّاسَ لَكُمْ تَبَعٌ وَإِنَّهُمْ سَيَأْتُونَكُمْ مِنْ أَقْطَارِ الأَرْضِ يَتَفَقَّهُونَ فِي الدِّينِ فَإِذَا جَاءُوكُمْ فَاسْتَوْصُوا بِهِمْ خَيْرًا "

 তিনি বলেন, আমরা আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) -এর কাছে এলেই তিনি বলতেনঃ তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওসিয়ত অনুযায়ী স্বাগতম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বলতেনঃ লোকেরা অবশ্যই তোমাদের অনুগামী। অচিরেই পৃথিবীর দিকদিগন্ত থেকে লোকেরা তোমাদের নিকট দ্বীনি ইলম অর্জনের জন্য আসবে। তারা যখন তোমাদের নিকট আসবে,তখন তোমরা তাদেরকে ভালো ও উত্তম উপদেশ দিবে।(সুনানু তিরমিযি-২৪৯,তিরমিযী ২৬৫০-৫১, মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৪৭।)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
অতীব জরুরী ও সাধারণ মাস'আলা মাসাঈল আয়ত্বে না থাকার কারণে দৈনন্দিন জীবনে দ্বীন-ইসলাম পালন করতে, যে সমস্ত দ্বীনি ভাই-বোন থমকে দাড়ান,এবং যাদের দ্বীনি ইলম অর্জনের কাছাকাছি কোনো নির্ভরযোগ্য মাধ্যম নেই, মূলত তাদেরকে দিকনির্দেশনা দিতেই আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস .....

মুহতারাম/মুহতারামাহ!
দ্বীনের পরিধি অনেক ব্যাপক, সকল বিষয়ে আলোচনা করা বা দিকনির্দেশনা দেওয়া স্বল্প পরিসরের এই ভার্চুয়ালি মাধ্যম দ্বারা আমাদের পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে। চেষ্টা করলেও প্রশ্নকারীর পিপাসা মিটানো সম্ভব হবে না। প্রত্যেক বিষয়ে আমরা শুধুমাত্র সামান্য আলোকপাত করে থাকি।

উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তরের জন্য আপনার এলাকার সংশ্লিষ্ট উলামায় কেরামের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা আপনার জন্য কল্যাণকর হবে বলেই আমাদের ধারণা।

তাছাড়া ইলম অর্জনের জন্য সফর করা অত্যান্ত  জরুরী। এবং কষ্ট করে ইলম অর্জন করাই আমাদের  আকাবির আসলাফদের রীতি ও নীতি। এদিকেই কুরআনের এই আয়াত ইঙ্গিত দিচ্ছে,
 ۚفَلَوْلَا نَفَرَ مِن كُلِّ فِرْقَةٍ مِّنْهُمْ طَائِفَةٌ لِّيَتَفَقَّهُوا فِي الدِّينِ وَلِيُنذِرُوا قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُوا إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ
তাদের প্রত্যেক দলের একটি অংশ কেন বের হলো না, যাতে দ্বীনের জ্ঞান লাভ করে এবং সংবাদ দান করে স্ব-জাতিকে, যখন তারা তাদের কাছে প্রত্যাবর্তন করবে, যেন তারা বাঁচতে পারে।(সূরা তাওবাহ-১২২)

সুতরাং আপনাকে বলবো, আপনি বিস্তারিত জানতে স্ব-শরীরে কোনো দারুল ইফতায় যোগাযোগ করবেন।
প্রশ্ন করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।আল্লাহ তা'আলা আপনার ইলম অর্জনের স্পৃহাকে আরো বাড়িয়ে দিক, আমীন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...