আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
50 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম।
আমার বাবা মা দুইজনই ছোটবেলা থেকে কখনো আমাকে সালাত বা পর্দার জন্য বলেনি। সালাত হুজুর দ্বারা শিখিয়েছে কিন্তু তারা নিয়মিত ছিল না। এমন জুম্মাও গেছে যখন আব্বু জামাতে যায়নি। আমি ক্লাস নাইনে উঠার পর অনেক পরিবর্তন হয়। তবে তা শুধু আব্বুর মাঝেই। আমি ক্যাডেট কলেজে পড়াশুনা করেছি। সেখানে তো পর্দার কোনো বালাই নেই। জানতামও না পর্দা ফরজ। এক্সাম হবে এই জন্য ফরজ রোযা রাখতেও নিষেধ করতো। আস্তে আস্তে দ্বীনের বুঝ আসলো। এখন ফরজ বিধান পালনে খুব প্রশ্ন বাজে ব্যবহার গালাগালির সম্মুখীন হতে হয়। কুরবানি ওয়াজিব তারপরও দিতে মানা করে, যাকাত ফরজ সেটা দিলেও বলে তাদেরকে টাকা দেইনা তাহলে যাকাত দেই কেন? অথচ তাদের নিজস্ব সম্পদ যথেষ্ট রয়েছে। হাসবেন্ডের বাসা থেকে কেন বাপের বাড়ি ঘনঘন আসিনা? হাসবেন্ড তিন মাসের জন্য একজায়গায় পোস্টিং হয়েছে আমাকে সাথে নিয়েছে, সেখানে যাওয়ার আগে অনেক বকাবকি করেছে যে কেন যাচ্ছি? বাবামায়ের দায়িত্ব পালন না করে? পর্দা করি কেন? বোরকা নিকাব করে আমি অসামাজিক হয়ে যাচ্ছি। বাসায় অসুস্থ হাসবেন্ড থাকা সত্ত্বেও গাইরে মাহরাম মেহমানের সামনে কেন যাচ্ছিনা?
আমি তাদেরকে ভালোভাবে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করেছি। ওয়াজ নসিহত শুনিয়েছি। তারা নিজেরা যাকাত আদায় করেনা। বাজেভাবে বদদুয়া দেয়, অভিশাপ দেয়। আমি নাকি তাদের কথা না শুনে তাদের কথার উত্তর দিয়ে কবীরাহ গুনাহ করছি। এক সময় আর ধৈর্য রাখতে পারিনা। চিৎকার করে ফেলি। ভালো আখলাক্ব বজায় রাখতে পারিনা। তাদের সব অসুস্থতায় আমি আমার বেস্টটা দেই। তারপরও সিস্টার আয়ারা তাদের কাছ থেকে দুয়া পায়, আমি পাই না। সারাদিন আফসোস করে যে এমন মেয়ে কেন তাদের ঘরে জন্ম নিলো। তাদের বদদুয়া শুনতে শুনতে আমি ক্লান্ত। আমি কি করতে পারি?

1 Answer

0 votes
by (675,720 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

পিতামাতার জন্য রাগের অবস্থায় সন্তানদের বদ দুয়া,অভিশাপ দেওয়া উচিত নয়। 
কারন কোন সময় যে আল্লাহ তায়ালা সেসব বদ দুয়া কবুল করে নিবেন,তাহা কেহই বলতে পারেনা।
এমনও হতে পারে যে পিতা মাতা বুঝে না বুঝে অযথাই সন্তানের জন্য বদ দুয়া করলো, আল্লাহ তায়ালা তা পুরোপুরি ভাবে কবুল করে নিলো,তখন এটা সন্তানের জন্য শাস্তির কারন হয়ে দাড়াবে।
বিষয়টি পিতামাতাকে বুঝানো দরকার।

উভয় পক্ষ থেকেই চেষ্টা করা দরকার,যে এই অবস্থায় যেনো পৌছাতে না হয়।

পিতা মাতা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে এহেন কথা না বলার,আর সন্তান চেষ্টা করবে,এমন কোনো কাজ না করার,যাতে পিতা মাতা কষ্ট পায়।
(কিতাবুল ফাতওয়া ৬/২১৪)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي جَعْفَرٌ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ هُرْمُزَ، قَالَ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " نَادَتِ امْرَأَةٌ ابْنَهَا، وَهْوَ فِي صَوْمَعَةٍ قَالَتْ يَا جُرَيْجُ. قَالَ اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلاَتِي. قَالَتْ يَا جُرَيْجُ. قَالَ اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلاَتِي. قَالَتْ يَا جُرَيْجُ. قَالَ اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلاَتِي. قَالَتِ اللَّهُمَّ لاَ يَمُوتُ جُرَيْجٌ حَتَّى يَنْظُرَ فِي وَجْهِ الْمَيَامِيسِ. وَكَانَتْ تَأْوِي إِلَى صَوْمَعَتِهِ رَاعِيَةٌ تَرْعَى الْغَنَمَ فَوَلَدَتْ فَقِيلَ لَهَا مِمَّنْ هَذَا الْوَلَدُ قَالَتْ مِنْ جُرَيْجٍ نَزَلَ مِنْ صَوْمَعَتِهِ. قَالَ جُرَيْجٌ أَيْنَ هَذِهِ الَّتِي تَزْعُمُ أَنَّ وَلَدَهَا لِي قَالَ يَا بَابُوسُ مَنْ أَبُوكَ قَالَ رَاعِي الْغَنَمِ ".

আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এক মহিলা তার ছেলেকে ডাকল। তখন তার ছেলে গীর্জায় ছিল। বলল, হে জুরায়জ! ছেলে মনে মনে বলল, হে আল্লাহ্! (এক দিকে) আমার মা (এর ডাক) আর (অন্য দিকে) আমার সালাত! মা আবার ডাকলেন, হে জুরাইজ! ছেলে বলল, হে আল্লাহ্! আমার মা আর আমার সালাত! মা আবার ডাকলেন, হে জুরায়জ! ছেলে বলল, হে আল্লাহ্! আমার মা ও আমার সালাত। মা বললেন, হে আল্লাহ্! পতিতাদের সামনে দেখা না যাওয়া পর্যন্ত যেন জুরায়জের মৃত্যু না হয়। এক রাখালিনী যে বকরী চরাতো, সে জুরায়জের গীর্জায় আসা যাওয়া করত। সে একটি সন্তান প্রসব করল। তাকে জিজ্ঞেস করা হল- এ সন্তান কার ঔরসজাত? সে জবাব দিল, জুরায়জের ঔরসের। জুরায়জ তাঁর গীর্জা হতে নেমে এসে জিজ্ঞেস করলো, কোথায় সে মেয়েটি, যে বলে যে, তার সন্তানটি আমার? (সন্তানসহ মেয়েটিকে উপস্থিত করা হলে) জুরায়জ বলেন, হে বাবূস! তোমার পিতা কে? সে বলল, বকরীর অমুক রাখাল। (বুখারী ১২০৬.২৪৮২, ৩৪৩৬, ৩৪৬৬; মুসলিম ৪৫/২, হাঃ ২৫৫০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১১২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১১৩৩)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে শরীয়তের বিধান মানার কারনে,স্বামীর পূর্ণ আনুগত্যের কারনে যেহেতু আপনার পরিবার আপনাকে মাঝে মাঝেই বদ দুয়া দেয়,সেক্ষেত্রে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখতে পারেন। ঘন ঘন তাদের বাসায় না এসে ৬ মাস বা এক বছর পর পর আসতে পারেন।

বদ দুয়া পাওয়া থেকে দূরত্ব বজায় রাখাই ভালো।

তবে এক্ষেত্রে সালাম ও কুশল বিনিময়ের জন্য মাঝে মাঝে ফোনে যোগাযোগ রাখবেন।
আত্মীয়তা সম্পর্ক যেনো আবার ছিন্ন না হয়,সেদিকেও সজাগ থাকবেন।

ফোন দিয়ে আপনি আপনার মা বাবার কাছে মাফ চেয়ে নিবেন। 

আপনার মা বাবা যেনো আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে ও বদ দুয়া যেনো আর না করে,সেই আহবান জানাবেন।

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...