আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
166 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
ছেলেটা চট্টগ্রামের , বর্তমানে ঢাকায় একটা  প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে,  মেয়ে চট্টগ্রামে থাকে, পড়াশোনা করে চুয়েটে । দুই জনে বিয়ে করতে চাই।
এই ব্যাপারে কিছু ফতোয়া লাগবে

১.একটা মেয়েকে বিয়ের জন্য তার আখলাক কেমন, কুফু মিলে কিনা এসব  উদ্দেশ্যে কত দিন বা কত সময় কথা বলা যাবে!   অর্থাৎ  বিয়ের আগে একটা মেয়ের সাথে কথা বলা যাবে? (সেই যোগাযোগ মাধ্যম যদি হয় ইমেইলে হই তবে সেটি যিনা হবে কিনা?)

২.আমার স্ত্রী  কি পরিপূর্ণ পর্দা করে( কন্ঠের পর্দা হবে না যেহেতু সহশিক্ষার শিক্ষকতা ) নিজেকে সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে( যেমন চুয়েটে মত প্রতিষ্ঠান) শিক্ষকতা করতে পারবে?

৩. ছেলে পরিবার থেকে টাকা নিয়ে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা করছে!  তার নিজের কোনো টাকা কামাই নাই। পড়াশোনা শেষ  করতে আরো ২ বছর লাগবে।সে একটা মেয়েকে বিয়ে করতে চাই। এখন আসলে তার কি করা উচিত? নিচে কিছু উপাই দিলাম উস্তাদ,  যদি এর থেকে ভাল কোনো উপাই থাকে তা জানালে উপকৃত হতাম।

ক)বিয়ে করে ফেলে সম্পর্ক হালাল করে মেয়ের পরিবার মেয়েকে আর ছেলের পরিবার ছেলেকে চালাবে যতদিন না ছেলে সামর্থ্যবান হওয়ার আগ পরযন্ত এই শর্তে বিয়ে কি করা উচিত হবে?

খ) ১-২ বছর প্রস্তুতি মুলুক  সময় নিয়ে ছেলেটা কিছুটা আয় রোজগার ব্যবস্থা করে বিয়ে করলে কেমন হয়?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
শরীয়তের বিধান হলো যদি কেউ কোনো মহিলাকে বিয়ে করার পূর্ণ ইচ্ছা করে নেয়,তাহলে ঐ মহিলাকে দেখতে পারবে।কথা বলতে পারবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ     
হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি থেকে বর্ণিত,

(إِذَا خَطَبَ أَحَدُكُمْ الْمَرْأَةَ ، فَإِنْ اسْتَطَاعَ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى مَا يَدْعُوهُ إِلَى نِكَاحِهَا ، فَلْيَفْعَلْ)

যদি কেউ কোনো মহিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে চায়,তাহলে সে যেন যযথাসম্ভব ঐ মহিলাকে দেখে নেয়।(সুনানু আবি দাউদ-২০৮২)

وَعَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ قَالَ خَطَبْتُ امْرَأَةً فَقَالَ لِىْ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «هَلْ نَظَرْتَ إِلَيْهَا؟» قُلْتُ : لَا قَالَ : «فَانْظُرْ إِلَيْهَا فَإِنَّه أَحْرٰى أَنْ يُؤْدَمَ بَيْنَكُمَا»

মুগীরাহ্ ইবনু শু‘বাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জনৈকা নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলাম, এতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞেস করলেন যে, তুমি কি তাকে দেখেছ? আমি বললাম, না, দেখিনি। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি তাকে দেখে নাও। কেননা, এই দেখা তোমাদের মাঝে (বৈবাহিক সম্পর্ক) প্রণয়-ভালোবাসা জন্ম দিবে। 
(নাসায়ী ৩২৩৫, তিরমিযী ১০৮৭, ইবনু মাজাহ ৮৬৬৫, আহমাদ ১৮১৫৪, সহীহাহ্ ৯৬, সহীহ আল জামি‘ ৮৫৯।)

بَابُ النَّظِرِ إِلَى الْمَخْطُوْبَةِ وَبَيَانِ الْعَوْرَاتِ

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِىِّ ﷺ فَقَالَ : إِنِّىْ تَزَوَّجْتُ امْرَأَةً مِنَ الْأَنْصَارِ قَالَ : «فَانْظُرْ إِلَيْهَا فَإِنَّ فِى اعْيُنِ الْأَنْصَارِ شَيْئًا».

 (বিবাহের প্রস্থাবিত) পাত্রী দেখা ও সতর (পর্দা) প্রসঙ্গে
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলল যে, আমি জনৈকা আনসারী নারীকে বিয়ে করার ইচ্ছা করেছি (আপনার কী অভিমত?)। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, (বিয়ের পূর্বে) তাকে দেখে নাও। কেননা, আনসারী নারীদের চক্ষুতে কিছু দোষ থাকে। 
(মুসলিম ১৪২৪, নাসায়ী ৩২৪৬, আহমাদ ৭৮৪২, সহীহাহ্ ৯৫।)

পাত্র-পাত্রীর পরস্পর দেখা সাক্ষাৎ ও আলাপ চারিতার কয়েকটি মূলনীতি-

(১)খালওয়াত হতে পারবে না।

(২)মুবাহ বিষয় ব্যতীত অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে না

(৩)ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকতে হবে।যদি কামভাব জাগ্রত হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে যায়,অথবা কোনো একজন উপভোগ করতে শুরু করে নেয়,তাহলে তখন সেটা হারাম হয়ে যাবে।

(৪)মহিলা নরম ভাষায় কথা বলতে পারবে না।

(৫)মহিলা পূর্ণ হেজাব তথা কবজা পর্যন্ত হাত,টাখনু পর্যন্ত পা,এবং মুখ ব্যতীত সমস্ত শরীর ঢেকে রাখবে

(৬)প্রয়োজন অতিরিক্ত কথাবর্থা বলা যাবে না।

যখন এই সব শর্ত পাওয়া যাবে, তখনই মূলত পাত্র-পাত্রী পরস্পর আলোচনা ও দেখা সাক্ষাৎ করতে পারবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে বিয়ের আগে তার সাথে কুফু মিলছে কিনা,তার আখলাক ইত্যাদি সম্পর্কে জনতে পাত্রীর সাথে কথা বলা যাবে।
তবে কথাগুলি ফোনে বা ইমেইলে হওয়া যাবেনা। সামনা-সামনি হতে হবে।

যেখানে পাত্রীর মাহরাম কেহ থাকবে, সেক্ষেত্রে উপরোক্ত মূলনীতির আলোকে যদি তারা কথা বলে,সেক্ষেত্রে তারা পরস্পর কথা বলতে পারবে।

হ্যাঁ, যদি পাত্র-পাত্রীকে সরাসরি দেখা সম্ভব না হয়,সরাসরি কথা বলা সম্ভব না হয়,
(যেমন পাত্র-পাত্রী বিদেশে অবস্থানরত) তাহলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাধ্যমে উপরোক্ত শর্তাদির সাথে তারা কথা বলতে পারবে।

তবে মুবাহ তথা বৈধ বিষয় ব্যতীত অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে না
*ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকতে হবে।
*মহিলা নরম ভাষায় কথা বলবে না।
প্রয়োজন অতিরিক্ত একটি কথাও বলা যাবেনা।

(০২)
না,এখানে সে শিক্ষকতা করতে পারবেনা।
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার স্ত্রী পরিপূর্ণ পর্দা করেনা।

(০৩)
ক,খ,দুটি ছুরতই ভালো।
যদি ছেলেটির জন্য বিবাহ বেশ জরুরী হয়,এখন বিবাহ না করলে মেয়েটির সাথে কথা বলা/গুনাহের সম্ভাবনা থাকে, আর "ক" ছুরতটির ব্যপারে মেয়ের পরিবার সন্তুষ্ট চিত্তে রাজী হয়,সেক্ষেত্রে "ক" ছুরতই ভালো বলে মনে করছি।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
reshown
খালওয়াত মানে কি বুঝায়?
by (574,050 points)
একাকিত্ব, যেখানে ঐ ছেলে আর মেয়ে ব্যাতিত আর কেউ উপস্থিত থাকেনা।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...