আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
78 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)

মুসলিম ও অমুলিমের ঋণ আদায়ের পদ্ধতি 

১. পাওনাদার কে খুঁজে না পাওয়া গেলে  কিংবা পাওনাদারকে না চিনলে  তার ঋণ কিভাবে আদায় করা যায় ? পাওনাদারকে না পাওয়া গেলে তার টাকা গরিব মিসকিন  কে দিয়ে দিলে কি ঋণ আদায় হবে ? এভাবে কি অমুসলিমের ঋণ আদায় হবে?


২. কারো গাছের ফল না বলে খেলে /কিংবা কারো সম্পদ না বলে খরচ করলে - তাকে না বলে  এ সম্পদ /টাকা দিয়ে দিলে কি ঋণ আদায় হবে ?
এমন পাওনাদার যদি  জাকাত আদায় না করে তাহলে কি তাকে না  বলে তার পক্ষ থেকে জাকাত আদায় করলে কি ঋণ আদায় হবে ? 
যদি টাকা দেয়ার কারণ বলতে লজ্জাবোধ হয় তাহলে গোপনে টাকা দেয়া যাবে? যেমন তাকে না বলে বিকাশে টাকা পাঠিয়ে দিলাম। 
যদি পাওনাদার মারা যায় তাহলে কি তার ছেলে কে না বলে টাকা দেওয়া যাবে ? যদি যায় - সে যদি টাকা একাই খেয়ে ফেলে , তার অন্য ভাই বোন কে না দেয় ?

৩. সরকারি ঋণ কিভাবে আদায় করা যায় ?
সরকারি ঋণ আদায়ের সহজ পদ্ধতি গুলো কি কি ?
যেকোনো সরকারি ঋণ যেকোনো সরকারি তহবিলে দিলে কি ঋণ আদায় হবে ?

"প্রাইস বন্ড(বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত একটি কাগজ যা লটারির মতো - তবে প্রাইস বন্ড ফেরত  দিলে টাকা ফেরত নেয়া যায়।  আমার জানা মতে এটি হারাম ) " কিনে নষ্ট করে ফেললে কি সরকারি ঋণ আদায় হবে?
যদি যায় - "প্রাইস বন্ড" কি শুধু বাংলাদেশ ব্যাংক এর শাখা গুলো থেকেই  নিতে হবে নাকি যেকোনো ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক এর "প্রাইস বন্ড"  নিলেই হবে?

1 Answer

0 votes
by (684,920 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ جَحْشٍ قَالَ: كُنَّا جُلُوسًا بِفِنَاءِ الْمَسْجِدِ حَيْثُ يُوضَعُ الْجَنَائِز وَرَسُول الله جَالِسٌ بَيْنَ ظَهْرَيْنَا فَرَفَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَصَره قبل السَّمَاء فَنظر ثُمَّ طَأْطَأَ بَصَرَهُ وَوَضَعَ يَدَهُ عَلَى جَبْهَتِهِ قَالَ: «سُبْحَانَ الله سُبْحَانَ الله مَا نَزَلَ مِنَ التَّشْدِيدِ؟» قَالَ: فَسَكَتْنَا يَوْمَنَا وَلَيْلَتَنَا فَلَمْ نَرَ إِلَّا خَيْرًا حَتَّى أَصْبَحْنَا قَالَ مُحَمَّدٌ: فَسَأَلْتُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَا التَّشْدِيدُ الَّذِي نَزَلَ؟ قَالَ: «فِي الدَّيْنِ وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَوْ أَنَّ رَجُلًا قُتِلَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ثُمَّ عَاشَ ثُمَّ قُتِلَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ثُمَّ عَاشَ ثُمَّ قُتِلَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ثُمَّ عَاشَ وَعَلَيْهِ دَيْنٌ مَا دَخَلَ الْجَنَّةَ حَتَّى يُقْضَى دَيْنُهُ» 

মুহাম্মাদ ইবনু ’আব্দুল্লাহ ইবনু জাহশ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমরা মসজিদের সামনে খোলা জায়গায় বসাছিলাম, যেখানে জানাযা রাখা হতো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মধ্যে বসে ছিলেন। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আকাশের দিকে চোখ উঠিয়ে তাকালেন, অতঃপর দৃষ্টিকে অবনত করে কপালের উপর হাত রেখে বললেন, সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! কী কঠোরতম (আয়াত) অবতীর্ণ হলো!

বর্ণনাকারী বলেন, আমরা একদিন একরাত নিশ্চুপই রইলাম; এ সময়ের মধ্যে সব ভালোই দেখলাম। মুহাম্মাদ বলেন, পরবর্তী দিন ভোর হলে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে জিজ্ঞেস করলাম, কি কঠোরতা অবতীর্ণ হয়েছে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ঋণের বিষয়ে কঠোরতা অবতীর্ণ হয়েছে। ঐ আল্লাহর কসম, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! কোনো লোক আল্লাহর পথে শহীদ হয়ে পুনরায় জীবন লাভ করেছে, আবার শহীদ হয়ে পুনরায় জীবন লাভ করেছে, আবার শহীদ হয়ে পুনরুজ্জীবিত হয়েছে এবং তার ওপর ঋণ থাকায় সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত না তার ঋণ পরিশোধ করা হয়।
(নাসায়ী ৪৬৮৪, আহমাদ ২২৪৯৩, সহীহ আল জামি‘ ৩৬০০, সহীহ আত্ তারগীব ১৮০৪,মিশকাত ২৯২৯)

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের আত্মা তার ঋণের কারণে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকবে, অর্থাৎ জান্নাতে যেতে পারবে না, যতক্ষণ তার ঋণ পরিশোধ করা না হয়। (তিরমিজি, হাদিস : ১০৭৮; মুসনাদ আহমাদ)

حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ كَانَتْ لَهُ مَظْلَمَةٌ لأَخِيهِ مِنْ عِرْضِهِ أَوْ شَيْءٍ فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهُ الْيَوْمَ قَبْلَ أَنْ لاَ يَكُونَ دِينَارٌ وَلاَ دِرْهَمٌ إِنْ كَانَ لَهُ عَمَلٌ صَالِحٌ أُخِذَ مِنْهُ بِقَدْرِ مَظْلَمَتِهِ وَإِنْ لَمْ تَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ سَيِّئَاتِ صَاحِبِهِ فَحُمِلَ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি বা অন্য কোন বিষয়ে যুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ হতে মাফ করিয়ে নেয়, সে দিন আসার পূর্বে যে দিন তার কোন দ্বীনার বা দিরহাম থাকবে না। সে দিন তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার যুলুমের পরিমাণ তা তার নিকট হতে নেয়া হবে আর তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপ হতে নিয়ে তা তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে।
(বুখারী শরীফ ২৪৪৯.৬৫৩৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২২৮৭)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে পাওনাদার চাই মুসলিম হোক বা অমুসলিম হোক, যথাসম্ভব উক্ত পাওনাদারকে খুজে বের করার আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে।শত চেষ্টা করেও যদি না পাওয়া যায় তবে উক্ত টাকা কোনো গরীব/মিসকিন দেখে সদকাহ করে দিতে হবে।

হ্যাঁ,  যদি পরবর্তীতে কখনো কোনো মাধ্যমে পাওনাদারকে খুজে পাওয়া যায়,তখন তার নিকট থেকে সদকাহ বিষয়ের সম্মতি/অনুমতি নিতে হবে,বা তার থেকে ক্ষমা করে নিতে হবে।নতুবা তার প্রাপ্য তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে।

(০২)
কারো গাছের ফল না বলে খেলে /কিংবা কারো সম্পদ না বলে খরচ করলে - তাকে না বলে  এ সম্পদ /টাকা তাকে দিয়ে দিলে ঋণ আদায় হবে।

এমন পাওনাদার যদি  জাকাত আদায় না করে তাহলে তাকে না  বলে তার পক্ষ থেকে জাকাত আদায় করলে ঋণ আদায় হবেনা।

যদি টাকা দেয়ার কারণ বলতে লজ্জাবোধ হয় তাহলে গোপনে (বিকাশ ইত্যাদি মাধ্যমে) টাকা দেয়া যাবে।

যদি পাওনাদার মারা যায় তাহলে তার ছেলেকে মূল বিষয়টি না বলে এমনিতেই ঋনের বিষয় বলে টাকা দেওয়া যাবে।

এক্ষেত্রে সে যদি টাকা একাই খেয়ে ফেলে , তার অন্য ভাই বোন কে না দেয়,সেটি তার ব্যাপার। 
এক্ষেত্রে আপনার কোনো দায়ভার নেই।

(০৩)
এক্ষেত্রে সরকারের তহবিলে টাকা জমা দিতে হবে।
সরকারের তহবিলে টাকা জমা দেওয়ার অনেক মাধ্যম রয়েছে।
আপনি ডাকটিকেট ক্রয় করে সেটাকে কোনো কাজে না লাগিয়ে নষ্ট করে দিতে পারেন।বা সোনালি ব্যাংকে টাকা জমা দিতে পারেন।

প্রাইস বন্ড কিনে নষ্ট করে ফেললে সরকারি ঋণ আদায় হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 89 views
...