ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া
বারাকাতুহু
بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
ইবাদতে ও দুআ
কবুল হওয়ার ব্যাপারে হালাল খাদ্যের অনেক প্রভাব রয়েছে। খাদ্য হালাল না হলে ইবাদত ও
দুআ কবুল হওয়ার যোগ্য হয় না। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত,
রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
«
أيها الناس إن الله طيب لا يقبل إلا طيبا وإن الله أمر
المؤمنين بما أمر به المرسلين فقال ( يا أيها الرسل كلوا من الطيبات واعملوا صالحا
إنى بما تعملون عليم) وقال (يا أيها الذين آمنوا كلوا من طيبات ما رزقناكم) ». ثم
ذكر الرجل يطيل السفر أشعث أغبر يمد يديه إلى السماء يا رب يا رب ومطعمه حرام
ومشربه حرام وملبسه حرام وغذى بالحرام فأنى يستجاب لذلك
».
তরজামা: হে
লোক সকল! আল্লাহ তাআলা হলেন পবিত্র। আর তিনি পবিত্রতা ছাড়া কবুলই করেন না। আল্লাহ তাআলা
মুমিনদেরকে তাই নির্দেশ দিয়েছেন যা রাসূলগণকে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন “হে রাসূলগণ পবিত্র বস্তু আহার করুন
এবং সৎকাজ করুন। আপনারা যা করেন সে বিষয়ে আমি পরিজ্ঞাত”। (সূরা মুমিনুন-৫২)
তিনি অন্যত্র
ইরশাদ করেন “হে ঈমানদারগণ, তোমরা পবিত্র বস্তু-সামগ্রী আহার কর, যেগুলো আমি তোমাদেরকে রুযী হিসাবে দান করেছি। (সূরা
বাকারাহ -১৭২)
রাসুলুল্লাহ সাঃ এক লোকের কথা বললেন যে দীর্ঘ সফর
করে আসে। এবং অত্যন্ত ব্যাকুলভাবে দু‘ হাত তুলে আল্লাহর দরবারে বলতে থাকে,
ইয়া পরওয়ারদেগার! ইয়া রব! । কিন্তু
যেহেতু সে ব্যক্তির পানাহার সামগ্রী হারাম উপার্জনের,
পরিধেয় পোষাক- পরিচ্ছদ হারাম পয়সায়
সংগৃহীত, এমতাবস্থায় তার দেয়া কি করে কবুল হতে পারে?। (মুসলিম
শরীফ, হাদীস নং ২৩৯৩)
সূরা মুমিনুন-(৫২)
এর উক্ত আয়াত
বিশেষভাবে লক্ষ্যযোগ্য। আল্লাহ তাআলা পয়গম্বরগণকে
নিস্পাপ রেখেছিলেন। তঁদেরকেই যখন হালাল ও পবিত্র বস্তু আহার করার এবং সৎকর্ম করার নির্দেশ
দেওয়া হয়েছে তখন উম্মতের জন্য এই আদেশ আরো পালনীয়।
হাদীসটি নিয়ে
গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করলে বুঝা যায় যে, কিছু কিছু শুভ মুহূর্ত রয়েছে যে সময়কার দুআ আল্লাহ
তাআলা ফেরত দেন না। দীর্ঘ সফর করে আসা ক্লান্ত শ্রান্ত আলোচ্য ব্যক্তির মধ্যে দুআ কবুল
হওয়ার অনেক সবব ও উপকরণ বিদ্যমান থাকলেও যেহেতু তার
পানাহার সামগ্রী হারাম উপার্জনের, পরিধেয় পোষাক-পরিচ্ছদ হারাম পয়সায় সংগৃহীত,
এমতাবস্থায় তার দুআ কবুল হওয়া সুদূর
পরাহত।
হাদীসটির একটি
ব্যাখ্যা
এ হাদীসের
ব্যাখ্যায় আল্লামা ইবনে আব্দুল বার রহ. তাঁর বিখ্যাত ‘জামিউল উলুমি ওয়াল হিকাম’ গ্রন্থে
বলেন-
* وفي هذا الحديث إشارةٌ إلى أنَّه لا يقبل العملُ ولا
يزكو إلاَّ بأكل الحلال ، وإنَّ أكل الحرام يفسد العمل ، ويمنع قبولَه ، فإنَّه
قال بعد تقريره : (( إنَّ الله لا يقبلُ إلاَّ طيباً )) إنَّ الله أمر المؤمنين
بما أمر به المرسلين ، فقال : { يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ
وَاعْمَلُوا صَالِحاً } ، وقال : { يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ
طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ } .
অর্থাৎ এ হাদীসে
এ দিকে ইঙ্গিত রয়েছে যে, হালাল ভক্ষণ ব্যতীত আমল গৃহীত হয়না এবং তা পরিশুদ্ধি লাভ করে না। হারাম ভক্ষণ আমলকে
বিনষ্ট করে দেয় এবং তা আল্লাহর দরবারে গৃহীত হতে বাধা প্রদান করে। …
ইবন আব্বাস
রা.বর্ণিত হাদীসে রাসূল সা. বলেছেনঃ
«كل جسد نبت من سحت فالنار أولى به
»
‘‘আর যে দেহ
হারাম খাদ্য দ্বারা গড়ে উঠে তার জন্য দোযখের আগুনই উত্তম।’’(তাবারানী)
কাব ইবন উজরাহ
রা. রাসূলে কারীম সা. থেকে বর্ণনা করেন:
«لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ جَسَدٌ غُذِّيَ بِحَرَامٍ»
‘‘যে শরীর
হারাম পেয়ে হ্রষ্ট পুষ্ট হয়েছে, তা জান্নাতে যাবে না।’’ ( মুসনাদ আবী ইয়া‘লা,
খ.১ পৃ. ৮৪)
বিস্তারিত
জানুনঃ https://ifatwa.info/19554/
সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত
ছুরতে আপনার বোন জামাইয়ের যদি আর কোনো হালাল ইনকাম না থাকে,
বা অন্য কোনো পন্থা থাকলেও বেশির ভাগ
উপার্জিত টাকা যদি এই ব্যাংকের বেতন থেকেই আসে, সেক্ষেত্রে তার বাসায় দাওয়াত খাওয়া যাবেনা। আর যদি তার অন্য হালাল ইনকামের ব্যবস্থা থাকে এবং উক্ত হালাল ইনকামই বেশি হলে তার বাসায় খাবার খাওয়া যাবে।
তবে যদি তার বাসায় দাওয়াত না খেলে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন হওয়া বা অন্য কোনো ভয় থাকলে খানা যৎসামান্য প্রয়োজনীয়
পরিমাণ খানা ইস্তেগফারের সাথে খাবেন উক্ত খানার সমপরিমান টাকা ছওয়াবের
নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।
আপনি আপনার বোনের ব্যাগে
টাকা দিলে সেই টাকা তো আপনার বোন পাচ্ছেন। কিন্তু খাবার ক্রয় করা হয়েছে আপনার বোন জামাইয়ের
টাকায়। সুতরাং আপনি যদি কোন ভাবে বোন জামাইকে টাকা দিতে পারেন তাহলে তা জায়েয হতে পারে।
সর্বপরি তাক্বওয়ার দাবি যেকোন উপায় অবলম্বন করে উক্ত খানা পরিহার করা এবং আত্বীয়তার
বন্ধন রক্ষা করা।