ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া
বারাকাতুহু
বিসমিল্লাহির
রহমানির রহিম
بسم
الله الرحمن الرحيم
জবাব,
আল-হামদুলিল্লাহ ঈদে মীলাদুন্নবী বা এ
জাতীয় বিদআতি কাজ যারা করে, তাদের আমল ও কর্মকাণ্ডের ভিন্নতার ন্যায় তাদের হুকুমও ভিন্ন, যদিও মীলাদুন্নবী বিদআত।
এ ধরণের মীলাদ আয়োজকদের পাপের ধরণ ও ইসলাম বিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে এরা বিভিন্ন ভাগে
বিভক্ত। কখনো এদের বিষয়গুলো শিরক পর্যন্ত পৌঁছে এবং তাদেরকে দ্বীন থেকে বের করে দেয়,
যদি এসব উৎসবে নির্দিষ্ট কোন কুফরি করা হয়,
যেমন আল্লাহ ব্যতীত কারো নিকট প্রার্থনা করা,
অথবা আল্লাহর রুবুবিয়াতের সিফাত দ্বারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বিশেষিত
করা, অথবা এরূপ কোন শিরকে লিপ্ত হওয়া। আর যদি বিষয়গুলো এ পর্যায়ে না পৌঁছে,
তাহলে এরা ফাসেক,
কাফের নয়। আবার এদের ফাসেকির স্তর বিদআত
ও ইসলামি বিরোধী কর্মকাণ্ড হিসেবে পৃথক ও আলাদা। আর এসব
অনুষ্ঠানে
অংশগ্রহণকারী ব্যক্তির অবস্থার ভিন্নতা হিসেবে তার হুকুমও
ভিন্ন হবে। যদি কুফরিতে লিপ্ত হয়,
তাহলে কোন অবস্থাতেই তার সাথে বিয়ে বৈধ হবে না।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
وَ لَا
تُنۡکِحُوا الۡمُشۡرِکِیۡنَ حَتّٰی یُؤۡمِنُوۡا ؕ وَ لَعَبۡدٌ مُّؤۡمِنٌ خَیۡرٌ
مِّنۡ مُّشۡرِکٍ وَّ لَوۡ اَعۡجَبَکُمۡ
“আর মুশরিক পুরুদের সাথে বিয়ে দিয়ো না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। আর একজন মুমিন দাস একজন মুশরিক পুরুষের চেয়ে
উত্তম, যদিও সে তোমাদেরকে মুগ্ধ করে।” [সূরা বাকারা : ২২১]
এমতাবস্থায় তার সাথে বিয়ের আক্দও
সম্পন্ন হবে না।
এ ব্যাপারে আলেমগণ একমত। আর যদি বিদআতির
বিদআত কুফরি পর্যন্ত না পৌঁছে, তবুও আলেমগণ বিদআতিদের
সাথে বিবাহের সম্পর্ক কায়েম করা থেকে কঠোরভাবে সতর্ক
করেছেন। ইমাম মালেক -রাহিমাহুল্লাহ- বলেছেন : “বিদআতিদের নিকট
মেয়ে বিয়ে দেয়া যাবে না,
আর
না তাদের মেয়ে বিয়ে করা যাবে,
তাদের উপর সালামও দেয়া যাবে।” “আল- মুদাওয়ানাহ” : (১/৮৪)
অনুরূপ কথা ইমাম আহমদ ইবন হাম্বলও বলেছেন। চার ইমামগণ -রাহিমাহুমুল্লাহ- বলেছেন,
বিবাহের ক্ষেত্রে দ্বীনি বিষয়ে কুফু তথা সমতা থাকা জরুরী।
কোন ফাসেক পুরুষ একজন সঠিক দ্বীনদার নারীর কুফু ও সমান হতে পারে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
اَفَمَنۡ
کَانَ مُؤۡمِنًا کَمَنۡ کَانَ فَاسِقًا ؕؔ لَا یَسۡتَوٗنَ
“যে ব্যক্তি মুমিন সে কি ফাসিক ব্যক্তির মত ? তারা সমান নয়।” [সূরা আস-সাজদাহ : ১৮ [
এতে সন্দেহ
নেই যে, দ্বীনের মধ্যে বিদআত কঠিন ফিসক। দ্বীনের ব্যাপারে কুফু ও বরাবরির অর্থ : আক্দ পরিপূর্ণ হওয়ার পর যদি
নারীর নিকট অথবা তার অভিভাবকের নিকট প্রকাশ পায় যে, ছেলে ফাসিক, তাহলে তারা বিয়ে ভঙ্গের
দাবি জানাতে পারবে। হ্যাঁ,
তারা যদি দাবি ত্যাগ করে সন্তুষ্টি প্রকাশ
করে, তাহলে বিয়ে শুদ্ধ। তাই এ জাতিয় বিয়ে থেকে সতর্ক থাকাই
শ্রেয়,
বিশেষ করে কর্তৃত্ব যেহেতু পুরুষের হাতে অনেক সময় সে স্ত্রীকে কোণঠাসা করে
বিদ‘আতে লিপ্ত হতে বাধ্য করতে পারে, অথবা কতক বিষয়ে সুন্নতের খেলাফ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে পারে। আর সন্তানদের বিষয়টি আরও ভয়ানক,
খুব সম্ভব
সে তাদেরকে বিদ‘আতের দীক্ষার উপর অনুশীলন করাবে,
ফলে আহলে সুন্নতের বিরোধী হয়ে তারা বেড়ে
উঠবে। আর এতেই বিপত্তি সঠিক অনুসারীদের জন্য, যারা আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের অনুসরণ করে।
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
সর্বপরি কোন মুসলিম পুরুষের মেয়েকে বিদ‘আতিদের নিকট
বিয়ে দেয়া উলামায়ে কেরামের মধ্যে অনেকে হারাম এবং অনেকে মাকরুহে তাহরিমী বলেন। কারণ এর ফলে অনেক ফ্যাসাদের জন্ম
হয় এবং অনেক স্বার্থে ব্যাঘাত ঘটে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য কোন জিনিস ত্যাগ করে,
আল্লাহ তাকে তার চেয়ে উত্তম জিনিস দান করেন। আল্লাহ
ভাল জানেন। পরিশেষে আমরা দোয়া করি, আল্লাহ আপনার জন্য
উত্তম জীবনসঙ্গীর ব্যবস্থা করে দিন। তবে বিয়ের পরে তার ভ্রান্ত আক্বীদা জানতে
পারলে তার আক্বীদা শুদ্ধ করার জন্য তাকে দাওয়াত দিতে হবে। ও তার হেদায়াতের জন্য দোয়া
ও চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।