আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+9 votes
289 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
edited by
১. মাহরামদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা যত বড় পাপ তার চেয়ে বড় পাপ তো সুদ গ্রহণ করা। সুদ গ্রহণ করা মায়ের সাথে জিনা করার চেয়ে বড় অপরাধ। এখন যারা সুদ নিচ্ছে তারা তো প্রতিনিয়তই তাদের মায়ের সাথে জিনা করছে। তাদের জন্য কি হুরমত সাব্যস্ত হচ্ছে না? আর জিনার চেয়েও বড় অপরাধ আছে যেমন শিরক, গুম, খুন, ধর্ষন ইত্যাদি। সেই তুলনায় হুরমতে মুসাহারাত তো ছোট পাপ, কেউ এমন কাজ করে ফেললেও তো তার জন্য ক্ষমার দরজা খোলা থাকে।

২. বিধবা মায়ের সাথে অবিবাহিত ছেলের পারস্পরিক সম্মতিতে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠলে এক্ষেত্রে তো মা-বাবার সম্পর্ক হারাম হওয়ার প্রশ্ন আসে না যেহেতু বাবা মৃত ফলে হুরমতে মুসাহারাত এখানে কার্যকর হয় না। একইভাবে বাবা ও মেয়ের মধ্যে অর্থাৎ ইসলামে যাদের সাথে বিবাহ হারাম বা মাহরামদের সাথে কোনো প্রকার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপিত হলে সেক্ষেত্রে কি শুধু জিনার সমতুল্য পাপ হবে নাকি শিরকের মতো ক্ষমার অযোগ্য পাপ হবে?
এটা যদি ক্ষমাযোগ্য পাপ হয় সেক্ষেত্রে তো মানুষ এই ধরনের সম্পর্কে জড়াতে আগ্রহী হবে যেমন এখনকার তরুণরা বিবাহের পূর্বে হারাম সম্পর্ক গড়ে তোলে আবার অনেক বিবাহিতরাও পরকীয়ার মতো হারাম সম্পর্কে জড়ায় যেহেতু তারা জানে এটা শিরকের মতো পাপ না অর্থাৎ তাদের ক্ষমা পাওয়ার একটা সুযোগ আছে।

৩. সরাসরি শারীরিক স্পর্শ ছাড়া কল্পনার দ্বারা হুরমত সাব্যস্ত হুয় না। তাহলে কি বলা যায় কোনো ছেলে যদি তার মায়ের শরীর চিন্তা করে হস্তমৈথূন করে সেক্ষেত্রে সে শুধুই হস্তমৈথূন করার পাপ করছে? একইভাবে বাবা, মেয়ে, ভাই, বোন অর্থাৎ মাহরামদের নিয়ে চিন্তা করে হস্তমৈথুন করলে কি এটা ততটুকুই পাপ হবে যতটুকু অন্য কোনো নারী কিংবা পুরুষকে চিন্তা করে হস্তমৈথুন করা হয়?
এখানে একই ধরনের একটা ঘটনার উল্লেখ আছে: https://ifatwa.info/28677/

৪. শ্বশুর কর্তৃক পুত্রবধূ ধর্ষিত হলে, পিতা কর্তৃক কন্যা যৌণ নির্যাতনের স্বীকার হলে, ঘুমন্ত মায়ের শরীরে ছেলে খারাপ স্পর্শ করলে এগুলোর দায় তো একমাত্র অপরাধীর উপর বর্তায়। অপরাধীর শাস্তি ভুক্তভুগী কেনো পাবে? বিচার কি তাহলে অপরাধীর পক্ষে যাচ্ছে না?

৫. হুরমত বিষয়ক হাদীসগুলোতে বলা হচ্ছে মায়ের সাথে ছেলে যৌন সম্পর্ক করলে মা তার স্বামীর জন্য হারাম, বাবা তার মেয়ের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করলে মেয়ে তার স্বামীর জন্য হারাম, শ্বশুর তার পুত্রবধূর সাথে সম্পর্ক করলে ছেলের জন্য সে বউ হারাম। এটা দ্বারা মূলত কী বোঝানো হচ্ছে?
যে পুরুষ মাহরাম নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক করবে সে নারী একটা বৈধ সম্পর্ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ওই পুরুষের হয়ে যাবে? মানে ছেলের সাথে মায়ের সম্পর্ক হলে সেই মা তখন থেকে বাবার পরিবর্তে ছেলের হয়ে যাবে? বাবার সাথে মেয়ের সম্পর্ক হলে সেই মেয়ে বাবার হয়ে যাবে?

1 Answer

0 votes
by (572,970 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)

https://ifatwa.info/41792/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 

আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
الرِّبَا سَبْعُونَ حُوبًا أَيْسَرُهَا أَنْ يَنْكِحَ 
الرَّجُلُ أُمَّهُ

আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত; নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সুদ (পাপের দিক থেকে) ৭০ প্রকার। এর মধ্যে সবচেয়ে ছোট (পাপের) সুদ হল মায়ের সঙ্গে ব্যভিচার করা! (অর্থাৎ সুদ খাওয়ার গোনাহ মায়ের সাথে ব্যভিচার করার চেয়ে ৭০ গুণ বেশী।)

(ইবনে মাজাহ ২২৭৪ , হাকেম ২/৩৭, বাইহাক্বীর শুআবুল ঈমান ৫৫২০-৫৫২২, ইবনে আবী শাইবাহ ২২০০৫, সহীহ তারগীব ১৮৫৮)

অপর হাদিসে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবন হানযালা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
دِرْهَمٌ رِبًا يَأْكُلُهُ الرَّجُلُ وَهُوَ يَعْلَمُ أَشَدُّ مِنْ سِتَّةٍ وَثَلَاثِينَ زَنْيَةً

জেনে-শুনে এক দিরহাম পরিমাণ সুদ খাওয়া আল্লাহর নিকট ৩৬ জন নারীর সাথে ব্যভিচারের চাইতে অধিক গুনাহের কাজ। (মুসনাদে আহমাদ ২১৪৫০)


★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এখানে উভয়টিই কবিরা গুনাহ।
সুদের গুনাহ যেনার চেয়ে মারাত্মক  বলতে এখানে যেনার থেকে বেশি গুনাহ উদ্দেশ্য নয়।
বরং এখানে উদ্দেশ্য  হলোঃ

মানুষ যেমন যেনাকে অনেক মারাত্মক গুনাহ বলে মনে করে,সুদকেও যেনো মানুষ মারাত্মক গুনাহ বলে মনে করে ছেড়ে দেয়,এই জন্যই সাদৃশ্যতা দেয়া হয়েছে।
এটি কোনো ভাবেই নয় যে যেনা থেকেও সুদ বড় গুনাহ,বা যেনার গুনাহ সুদ থেকে কম।
এগুলো উদ্দেশ্য নয়।
,
এখানে মানুষকে সূদের ভয়াবহতা সম্পর্কে ইঙ্গিত দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
সুদ খেলে তাদের জন্য হুরমত সাব্যস্ত হচ্ছে না। এখানে গুনাহের সাদৃশ্যতা দেয়া হয়েছে,বাস্তবিক গুনাহ উদ্দেশ্য নয়। বাস্তবে স্বশরীরে হুরমতে মুসাহারাত প্রমানিত হওয়ার শর্তাবলী পাওয়া না গেলে সেক্ষেত্রে হুরমতে মুসাহারাত প্রমানিত হবেনা।

(০২)
এতে যেনার গুনাহ হবে।
যেনার শাস্তি অর্থাৎ প্রস্তরাঘাতে মৃত্যুদন্ডের শাস্তি কার্যকর হবে।

(ইসলামের এই শাস্তি কোনো অংশেই হালকা নয়।)

(০৩)
সেক্ষেত্রে সে নারীদের নিয়ে অশ্লিল কল্পনা ও শুধুই হস্তমৈথূন করার পাপ করছে।

(০৪)
শরীয়তের বিধানের উপর প্রশ্ন করা হতে বিরত থাকার পরামর্শ থাকবে। 
আমাদের সীমাবদ্ধ ব্রেন শক্তি দিয়ে শরীয়তের বিধান ও তার রহস্য বুঝা সব সময় সম্ভব নয়।

(০৫)
যে পুরুষ মাহরাম নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক করবে সে নারী একটা বৈধ সম্পর্ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ওই পুরুষের হয়ে যাবেনা।

এমনটি কোনো ভাবেই এখানে উদ্দেশ্য নয়।

মায়ের সাথে ছেলে যৌন সম্পর্ক করলে মা তার বাবার জন্য হারাম হয়ে যাবে।
এতে সেই মা তার ছেলের জন্য হয়ে যাবেনা।
মা ছেলে তো মাহরাম,তারা আবার একে অপরের কিভাবে হবে?

তাদের বাবা মার বৈবাহিক সম্পর্ক আজীবনের জন্য ছিন্ন হয়ে যাবে।
এক্ষেত্রে তারা অন্যত্রে বিবাহ করবে।

বাবা তার মেয়ের সাথে শারীরিক সম্পর্ক 
মা তার বাবার জন্য হারাম হয়ে যাবে।
তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক আজীবনের জন্য ছিন্ন হয়ে যাবে।

এক্ষেত্রে তারা অন্যত্রে বিবাহ করবে।

শ্বশুর তার পুত্রবধূর সাথে সম্পর্ক করলে ছেলের জন্য সে বউ হারাম। 
তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক আজীবনের জন্য ছিন্ন হয়ে যাবে।

এক্ষেত্রে পুত্রবধূ অন্যত্রে বিবাহ করবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...