আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
53 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (39 points)
আসসালামু আলাইকুম,
হুজুর Ai generative syatem দিয়ে আমি হালাল ডিজাইন যেমন ঘর, বাড়ী, গাছ পালা বানিয়ে অন্য কোনও খাতে বিক্রি করে ইনকাম করছি বহুদিন যাবৎ।
কিন্তু মনে সন্দেহ এসে গেল যে,  একভাই আমাকে বললো যে Ai নাকি অন্য জনের কপিরাইট করা ইমেজ দিয়ে আমাদের prompt অনুসারে ছবি বানিয়ে দেয়, ফলে Ai copyright আইন ভঙ্গ করে, তাই তাকে দিয়ে হালাল ছবি বানিয়ে ইনকাম করাটা জায়েজ হবে না। তার এই কথা শোনার পর আমার অনেক কষ্ট লাগলো যে আমার এত এত হালাল ডিজাইন দিয়ে করা ইনকাম কিভাবে হারাম হয়ে গেলো!!! বিষয়টা বড়ই আজব এবং কষ্টদায়ক!

তারপর এইটা নিয়ে অনেক ঘাটাঘাটি, অনেক জনের সাথে কথা বলার পর
★তাদের একদল বললো যে Ai কে machine learning algorithm দিয়ে আমাদের ওয়েবে থাকা লক্ষ লক্ষ copyright এবং non copyright ছবি দিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় যাতে করে সে বুঝতে পারে যে ঘর বাড়ী গাছপালা কাকে বলে, কোনটার আকার আকৃতি কেমন etc. এর পর সে এসব জানার পর সম্পূর্ণ unique ভাবে ছবি বানিয়ে দেয় যা copyright এর আওতায় পড়ে না। Ai নাকি অন্যর copyright image কে model হিসেবে রেখে সেটাকে modify করে অন্য রকম আলাদা আরেকটা ছবি বানিয়ে দেয়। সম্পূর্ণ ইউনিক তৈরী করে। আমরা যেমন অনেক গুলা ডিজাইন প্র্যাক্টিস করার পর আমাদের ডিজাইন সেন্স শার্প হয় এবং আমরা কোয়ালিটি ইউনিক ডিজাইন তৈরী করতে পারেন। সিমিলারলি এআই মডেলগুলোকেও মেশিন লার্নিং এলগোরিদমের মাধ্যমে অসংখ্য ইমেজ দিয়ে ট্রেইন করানো হয়। ফলে এটা হালাল, সে অন্যর copyright হুবহু নকল করে না, এবং অন্যর হক নষ্ট করেনা, তাই Ai দিয়ে বানানো হালাল ডিজাইন বিক্রি করা জায়েজ।

★আবার আরেকদল বলে যে,  যেহেতু তাকে traine করা হয়েছে copyright ইমেজ দিয়ে, তাই সে যে ইমেজ বানিয়ে দিবে সেটা অন্যর copyright image চুরি করে আপনাকে দেবে, ফলে অন্যর হক নষ্ট করা হচ্ছে তাই এটা দিয়ে বানানো হালাল ডিজাইন ও বানানো হারাম হবে।

এসব কিছু পর আমি একজন কম্পিউটার সাইয়েন্স নিয়ে পড়াশুনা করেন এমন একজন অভিজ্ঞ ভাইকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন যে "
আপনি যখন একদম ইউনিক ডিজাইন করেন, সেটাও শতভাগ ইউনিক না।
সেটা হচ্ছে পুর্ববর্তীতে যত ধরনের ডিজাইন আপনি প্র‍্যাক্টিস করেছেন সেটারই একটা কম্বাইন আইডিয়া। এভাবেই আপনার ব্রেইন বা নিউরোন সিস্টেম কাজ করে, ঠিক আপনার ব্রেইনের মতোই এআই কাজ করে। সে মূলত কাটছাট করেনা, কপিও করেনা। বরং google এ থাকা হাজার হাজার ছবি দিয়ে ট্রেইন করা ইমেজ থেকে আইডিয়া নিতে ইউনিক একটা ইমেজ জেনারেশন করে।
এখন এই জিনিস কিভাবে ঘটে, সেটা বুঝতে হলে, মেশিন লার্নিং এবং নিউরাল নেটওয়ার্ক কিভাবে কাজ করে সেটা জানতে হবে।
সরাসরি কপি করলে সেটাকে আমরা আর Ai বলিনা, এআই ডিরেক্ট কোন কিছু কপি করেনা,কাটছাটও করেনা।

Ai এভাবে কাজ করেনা, এমনকি পারেও না। এআই আপনার মতোই আইডিয়া নিয়েই ইউনিক ডিজাইন জেনারেট করে।
একারনে আপনি খেয়াল করবেন, যখন নতুন নতুন কোন এআই টুলস আসে, সেটা অনেক ভুল করে, কারন তার অভিজ্ঞতার আর ট্রেইনিং এর ঘাটতি থাকে, কিন্তু যত পুরনো হয় তার অভিজ্ঞতাও বাড়ে তার কাজও পার্ফেক্ট হতে থাকে।

সে একদম মানুষের ব্রেইনের মতোই কাজ করে। শুধু পার্থক্য হচ্ছে - এআই এর মধ্যে কোন আবেগ-অনুভূতি নাই।
মেশিন লার্নিং, নিউরাল নেটওয়ার্ক এর মতো এতো কঠিন টপিক ৫ঘন্টা আলোচনা করেও বুঝানো মুশকিল হবে। এগুলা কম্পিউটার সায়েন্সের সবচেয়ে এডভান্স টপিকগুলোর মধ্যে অন্যতম।
তাছাড়া এগুলা বুঝতে হলে আগে আপনাকে প্রোগ্রামিং, ডেটা স্ট্রাকচার, এলগোরিদম, লিনিয়ার আলজেব্রা, স্ট্যাটিস্টিক্স এবং ক্যালকুলাসের মতো হায়ার ম্যাথের বিষয় গুলো কভার করতে হবে।"

তারপর ভাইটিকে আমি শেষ জিজ্ঞাসা করলাম যে " তারমানে এটা নিশ্চিত যে Ai অন্যর images যেগুলোর উপর তাকে train করা হয়েছিলো সেখানে থেকে সে হুবহু কপি করে, মানে Ai ছবি গুলো নিজ থেকে বানায় তাই না?"

তখন ভাইটি বললো যে হ্যাঁ, নিশ্চিত। তবে কন্টেন্ট ( মানে ডিজাইনগুলো প্রাণী বা বেপর্দা) হারাম না হলেই হয়।

এই হলো একজন Ai বিশেষজ্ঞ থেকে জানা তথ্য
১| এখন হুজুর এই ২ দলের মাঝে আপনাদের মতামত কি? আর Ai দিয়ে হালাল ছবি বানিয়ে বিক্রি করা হারাম?

২| হুজুর Ai দিয়ে বানানো সম্পূর্ণ ইসলাম সমর্তিত হালাল ডিজাইন বানিয়ে সেল করা কি জায়েজ আছে?

আমাকে সঠিক উত্তর দিন, যাতে মনের সংকোচ দূর করতে পারি।

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/66897/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
আবিস্কার এবং প্রকাশনা সত্ত্বের ক্রয়-বিক্রয়
আবিস্কার সত্ত্ব এমন একটি সত্ত্বকে বলা হয়, যা প্রচলিত নিয়মানুসারে কিংবা আইনগত দিক দিয়ে ওই ব্যক্তির অনুকূলে থাকে,যে ব্যক্তি নতুন কোনো জিনিষ আবিস্কার করেছে বা কোনো জিনিষের নতুন আকৃতি বা রূপ দান করেছে।আর আবিস্কার সত্ত্বের অর্থ হল,এককভাবে ওই ব্যক্তির জন্যই নিজের আবিস্কৃত জিনিষ বানানোর এবং বাজারজাত করার অধিকার থাকবে।আবার কোনো কোনো সময় আবিস্কারক তার আবিস্কার সত্ত্ব অন্য কারো কাছে বিক্রয় করে দিয়ে থাকে।আর সত্ত্ব ক্রয়কারী তখন আবিস্কারকের মত বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ওই জিনিষ প্রস্তুত করে থাকে।এমনিভাবে কোনো ব্যক্তি যদি কোনো কিতাব, বই লিখে কিংবা সংকলন করে, তাহলে ওই কিতাব-বই, প্রকাশ-প্রচার ব্যবসায়িক ভিত্তিতে বাজারজাত করার অধিকার লেখক বা সংখকলকের জন্য সংরক্ষিত থাকে।আবার কোনো কোনো সময় কিতাবের লেখক ওই সত্ত্ব অন্যের কাছে বিক্রয় করে দিয়ে থাকে।আর ওই সময় ক্রেতা এই কিতাবের প্রকাশ-প্রচার এবং ব্যবসা-বাণিজ্য করার সত্ত্বাধিকারী হয়ে যায়।যে অধিকার পূর্বে লেখকের ছিল,সেই অধিকার চলে আসে ক্রেতার নিয়ন্ত্রণে। 
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1197


https://ifatwa.info/48167/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ
কেহ যদি অন্যের টিশার্ট ডিজাইন দেখে দেখে ডিজাইন করা,বা  তাহা হতে কিছু অংশ কাটসাট করে নিজের ডিজাইনে নিয়ে আসাটা জায়েয হবে না।এবং এভাবে ইনকাম করাটাও জায়েয হবে না।
অর্ধেক ডিজাইন এভাবে ধোকাবাজি. চুরি করলে অর্ধেক ইনকাম হারাম।পূর্ণ ডিজাইন এভাবে ধোকাবাজি, চুরি করলে পূর্ণ ডিজাইন হারাম।

তবে যদি সেই ডিজাইন যে মূলত করেছে,তার থেকে বা কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমতি নিয়ে সে তার ডিজাইন দেখে দেখে এসব করে ইনকাম করে,তাহলে তার একাজ ও ইনকাম জায়েজ হবে।

https://ifatwa.info/52640/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
অন্যায় ভাবে কোনো কিছু ব্যবহার করা শরীয়তে জায়েজ নেই।
কাহারো অনুমতি ছাড়া তার ডিজাইন এভাবে ব্যবহার করে ইনকাম করা তাকে ধোকা দেয়ার শামিল, বিধায় তাহা জায়েজ নেই।
  
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْ أَبِىْ حُرَّةَ الرَّقَّاشِىِّ عَنْ عَمِّه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ». رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ شُعَبِ الْإِيْمَانِ وَالدَّارَقُطْنِىِّ فِى الْمُجْتَبٰى

আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ) তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মাল তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়। (বায়হাক্বী- শু‘আবুল ঈমান, দারাকুত্বনী- মুজতাবা)
সহীহ : আহমাদ ২০৬৯৫, শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫, ইরওয়া ১৪৫৯, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২,মিশকাতুল মাসাবিহ ২৯৪৬।)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে বুঝা গেলো যে Ai copyright আইন ভঙ্গ করেনা।
সুতরাং  Ai দিয়ে হালাল ছবি বানিয়ে বিক্রি করা হালাল হবে।

(০২) 
প্রশ্নের বিবরন মতে Ai দিয়ে বানানো সম্পূর্ণ ইসলাম সমর্থিত হালাল ডিজাইন বানিয়ে সেল করা জায়েজ আছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...