আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
177 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (14 points)
আমানতের খিয়ানত ও বান্দার হক ফেরত দেয়ার মাসআলা জানতে চাই
-------------------------------------------------
৭ বছর আগে  আমি সহ ২ জন একটি ফলের  বাগান পাহারা নেই.
তখন ৮ম শ্রেণীতে পড়ি।  আমার বয়স কম ছিল এবং আমানতের খিয়ানত সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না।
রাতে বাগানে চোর আসে, গাছ থেকে ফল চুরি করে।
আমরা তাদের কে ধরার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই।
আমরা নিজেরাও ফল ছিড়ে খাইতাম।
এসব মালিক দেখে নাই, আমরাও তাকে জানাই  নাই।
বর্তমানে আমি বুঝতে  পারি যে,
আমি আমানতের খিয়ানত করে বান্দার হক নষ্ট করেছি।
আমি মালিকের হক ফিরিয়ে দিতে চাই।
প্রশ্ন-১.১  কিভাবে হিসাব করবো যে মালিক আমার কাছে কত টাকা পাবে ?
---
উল্লেখ্য যে মালিক কে আমরা চিনি না এবং তার সাথে যোগাযোগ করার কোনো ব্যবস্থা নেই।
লাভের হিসাব করলে মালিক আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
মূলধনের চেয়ে আনুমানিক ৬-৭ গুন্ লাভ হয়েছে।
আমার সাথে যে আরেক জন পাহারাদার ছিল -
সে এসব বিষয়ে অজ্ঞ এবং দিন আনে দিন খায়।
প্রশ্ন-১.২  যেহেতু মালিক এর সাথে যোগাযোগ নেই সেক্ষেত্রে মালিকের পক্ষে কোন কোন খাতে টাকা দিতে পারবো ?
প্রশ্ন-১.৩ আরেক পাহারাদার এর শরীয় বিধান কি ? যেখানে সে এসব বিষয়ে অজ্ঞ এবং দিন আনে দিন খায়।
যথাসম্ভব কুরআন , হাদিসের রেফারেন্স দিবেন

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

অন্যের মাল অন্যায়ভাবে গ্রহণ করা জায়েজ নেই।


আল্লাহ তায়ালা বলেন-


وَلَا تَأْكُلُوا أَمْوَالَكُم بَيْنَكُم بِالْبَاطِلِ وَتُدْلُوا بِهَا إِلَى الْحُكَّامِ لِتَأْكُلُوا فَرِيقًا مِّنْ أَمْوَالِالنَّاسِ  بِالْإِثْمِ وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ [٢:١٨٨]


তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভোগ করো না। এবং জনগণের সম্পদের কিয়দংশ জেনে-শুনে পাপ পন্থায় আত্নসাৎ করার উদ্দেশে শাসন কতৃপক্ষের হাতেও তুলে দিও না। [সূরা বাকারা-১৮৮]

 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

وَعَنْ أَبِىْ حُرَّةَ الرَّقَّاشِىِّ عَنْ عَمِّه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ»

 

আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ) তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মাল তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়।

(আহমাদ ২০৬৯৫শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫ইরওয়া ১৪৫৯সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২। মিশকাতুল মাসাবিহ ২৯৪৬)

 

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ  

فى الدر المختار- لا يجوز التصرف فى مال غيره بلا اذنه ولا ولايته ( الدر المختار مع الشامى -9/291

 

অন্যের সম্পদ অনুমতি ব্যাতিত ব্যবহার জায়েজ নেই।  

وفى شرح المجلة- لا يجوز لأحد ان يتصرف فى ملك غيره بلا اذنه او وكالته او ولايته عليه وان فعل كان ضامنا( شرح المجلة-1/262)

অন্যের সম্পদ অনুমতি ব্যাতিত ব্যবহার জায়েজ নেই। তবে অনুমতি স্বাপেক্ষে হলে তা জায়েজ আছে।  


আরো জানুন - https://ifatwa.info/5346/

 

কোনো অভাবগ্রস্ত ব্যাক্তি এমন ফল খেতে পারবে কিনা এ সংক্রান্ত হাদীস শরীফে এসেছেঃ   

عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّه عَنْ رَسُوْلِ اللّٰهِ ﷺ أَنَّه سُئِلَ عَنِ الثَّمَرِ الْمُعَلَّقِ فَقَالَ : «مَنْ أَصَابَ مِنْهُ مِنْ ذِىْ حَاجَةٍ غَيْرَ مُتَّخِذٍ خُبْنَةً فَلَا شَيْءَ عَلَيْهِ وَمَنْ خَرَجَ بِشَيْءٍ مِنْهُ فَعَلَيْهِ غَرَامَةُ مِثْلَيْهِ وَالْعُقُوبَةُ وَمَنْ سَرَقَ مِنْهُ شَيْئًا بَعْدَ أَنْ يُؤْوِيَهُ الْجَرِيْنُ فَبَلَغَ ثَمَنَ الْمِجَنِّ فَعَلَيْهِ الْقَطْعُ» وَذَكَرَ فِىْ ضَالَّة الْإِبِل وَالْغَنَمِ كَمَا ذَكَرَ غَيْرُه قَالَ : وَسُئِلَ عَنِ اللُّقَطَةِ فَقَالَ : «مَا كَانَ مِنْهَا فِى الطَّرِيقِ الْمِيتَاءِ وَالْقَرْيَةِ الْجَامِعَةِ فَعَرِّفْهَا سَنَةً فَإِنْ جَاءَ صَاحِبُهَا فَادْفَعْهَا إِلَيْهِ وَإِنْ لَمْ يَأْتِ فَهُوَ لَكَ وَمَا كَانَ فِى الْخَرَابِ الْعَادِىِّ فَفِيهِ وَفِى الرِّكَازِ الْخُمُسُ». رَوَاهُ النَّسَائِىُّ

‘আমর ইবনু শু‘আয়ব তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে গাছে ঝুলন্ত ফলের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলো। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যদি কোনো অভাবগ্রস্ত তা হতে কিছু খায় তাতে কিছুই নেই, যদি আঁচলে ভরে কিছু না নিয়ে যায়। হ্যাঁ, যদি তার কিছু নিয়ে যায়, তবে তার ওপর দুই গুণ দণ্ড বর্তাবে, তারপর শাস্তিও হবে। আর যে তার কিছু চুরি করবে শস্য মাড়াইয়ের স্থানে বা শস্য শুকানোর ওঠানে আশ্রয় দেয়ার পর, যার মূল্য একটি ঢাল পরিমাণ, তার হাত কাটা যাবে। উল্লেখ্য যে, ‘আমর (রাঃ)-এর দাদা হারানো উট ও ছাগলের বর্ণনা করেন যেভাবে অন্যরা উল্লেখ করেছেন।
তিনি আরো বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে হারানো জিনিস সম্পর্কেও জিজ্ঞেস করা হলো। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যা চলমান পথে-ঘাটে অথবা ঘনবসতি এলাকায় পাওয়া যায়, তবে তার জন্য সে এক বছর প্রচার করবে, তারপর যদি তার মালিক আসে, তবে তো তা তাকে দিয়ে দেবে, আর যদি এর মালিক না আসে, তবে তা তোমার (অধিকার) হবে। আর যা জনমানবহীন জায়গায় পাওয়া যায় তাতে এবং মাটিতে প্রোথিত গুপ্তধনের এক-পঞ্চমাংশ বায়তুল মালে (সরকারী কোষাগারে) দিতে হবে (আর অবশিষ্টটা তোমার হবে)।

(হাসান : আবূ দাঊদ ১৭১০, সহীহ আল জামি‘ ৫৬৫৮, নাসায়ী ৪৯৫৮।)
,
আম কুড়িয়ে নিতে যদি মালিকের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার বাধা বা নিষেধ করা না হয়, তাহলে আপনার জন্য উক্ত গাছের নিচে পড়ে থাকা ফল কুড়িয়ে খাওয়া জায়েয হয়েছে। অবশ্য কখনো যদি এ ব্যাপারে মালিকের অসম্মতি বা অসন্তুষ্টি বুঝা যায় তখন পড়ে থাকা ফলও কুড়িয়ে নেওয়া জায়েয হবে না।
(আদ্দুররুল মুখতার ৪/২৮৪; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৯১; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৫৪; আননাহরুল ফায়েক ৩/২৮৪)

গাছের নিচে পড়ে থাকা ফল মালিকের অনুমতি ছাড়া কাওয়া বৈধ হবে না। যদি অনুমতি থাকে তাহলে খাওয়া বৈধ। চাই অনুমতি প্রত্যক্ষভাবে থাকুক বা পরোক্ষভাবে।-রদ্দুল মুহতার : ৬/৪৪৪, ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ৫/৩৯৩, ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া মাজমাউল আনহুর : ২/২৫৬, ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া : ২৩/৩৭৯
,
আরো জানুনঃ- 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১.১ 
বিষয়টি আপনি মালিকের সাথে আলোচনা করে উভয়ে মিলে নির্ধারন করবেন। যদি মালিক বলে ক্ষতিপূরণ দিতে হবেনা,তাহলে কিছুই দিতে হবেনা।

আর যদি তিনি টাকা নিতে চান,সেক্ষেত্রে পরস্পরের সম্মতিতে টাকা ধার্য সেটি তাকে দিবেন।

১.২
মালিকের সাথে যেভাবেই হোক,যোগাযোগ করতেই হবে।অনেক চেষ্টার পরেও যোগাযোগ কোনোভাবেই সম্ভব না হলে সেক্ষেত্রে মালিকের ব্যাংকের একাউন্টে,বা চিঠিত মাধ্যমে তার বাসায় বা মোবাইলে ফ্লাক্সিলোডে,বা তার বিকাশ নগদ ইত্যাদিতে টাকা পাঠাতে পারেন।  

১.৩
তার জন্যও বিষয়টি নিয়ে মালিকের সাথে আলোচনা করে নিতে হবে। মালিক থেকে সে ক্ষমা চেয়ে নিবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (14 points)
মালিক কে আমি চিনি না। 
মালিকের ব্যাংকের একাউন্ট বা চিঠির ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার, বিকাশ নগদ কিছুই আমার কাছে নেই। 
তার সাথে যোগাযোগ করার কোনো ব্যবস্থা নেই। 
এক্ষেত্রে আমি কি করবো? 
by (574,050 points)
চেষ্টা করে জোগাড় করতে হবে।

যদি হাজারো চেষ্টার পরেও কোনো কিছুই পাওয়া না যায়,সেক্ষেত্রে তার নামে গরিব মিসকিনকে দান করে দিবেন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...