আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
41 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমায়ুল্লাহ

মুহতারাম শাইখ,
আমি গত একমাস যাবত (১ ডিসেম্বর থেকে চলমান) একটি গোল্ড হলমার্কিং ল্যাবে(গোল্ড টেস্টিং ল্যাব) রিসিভশনে কাজ করছি। আমার কাজ হলো কাস্টমার থেকে পণ্য গ্রহণ করে এন্ট্রি করে জমা রাখা। “পরবর্তীতে কাজ শিখে ল্যাবের মধ্যে কাজ করব”- এই পরিকল্পনা। তো গত কিছুদিন যাবত ল্যাবের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সন্দেহের ফলে মনে হচ্ছে আমি হারামের মধ্যে জড়িয়ে যাচ্ছি। সন্দেহের বিষয় গুলো হলো-
  ১. ল্যাবের ডকুমেন্টস দিয়ে ব্যাংক থেকে সিসি লোন নেওয়া আছে।

  ২. অধিকাংশ ক্ষেত্রে দূর্নীতির আশ্রয় নিতে হয়। যেমন- আমাদের কাস্টমার হলো জুয়েলার্সের মালিকপক্ষ। তারা তাদের তৈরিকৃত জিনিস সম্পূর্ণ ২১ ক্যারেট বা ২২ ক্যারেট আছে তার সত্যতা কাস্টমারকে বুঝানোর জন্য আমাদের থেকে হলমার্ক করে নেয়। ৮৭.৫ পয়েন্ট হলে ২১ ক্যারেট হবে আর ৯১.৬ হলে ২২ ক্যারেট হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, কাস্টমারের কাছে যে জিনিস ২১ ক্যারেট বা ২২ ক্যারেট বলে বিক্রি করা হয় তা পরিপূর্ণ ২১ ক্যারেট বা ২২ ক্যারেট থাকে না। আংশিক কম থাকে(যেমন- ২/১ পয়েন্ট)। যা নিয়মানুযায়ী হলমার্কে ফেইল দেওয়া হবে। তো যিনি ল্যাবে কাজ করেন তার সাথে জুয়েলার্সের মালিক বা কারিগরদের সাথে পরিচয় বা ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তিনি সেই জিনিস গুলোর হলমার্কে ফেইল না দিয়ে ২১ ক্যারেট বা ২২ ক্যারেটের সিল দিয়ে দেন (যা ল্যাবের মালিকপক্ষ অবগত)। এটার কারন হলো, এই সামান্যতম ২/১ পয়েন্টের কারনে যদি ফেইল দেওয়া হয় তাহলে আবারও পূনরায় এই জিনসটি গলিয়ে নতুন করে বানাতে হবে। তাতে জুয়েলার্সের মালিক বা কারিগর ক্ষতির মধ্যে পরে। একারণে তারা এটা ছাড় দিয়ে দেন। বলতে গেলে এটা করতে বাধ্য। যার ফলে কাস্টমার ঠকে।

  ৩. প্রতিদিন কিছু না কিছু মিথ্যা কথা বলা লাগে। যেমন- আমাদের টনস করার মেশিন নষ্ট। যখন কাস্টমার আসে তাদেরকে বুঝতে দেওয়া যাবে না যে মেশিন নষ্ট। একারণে মিথ্যার আশ্রয় নিতে হয় এই কথা বলে যে-
  ক. সকাল থেকে বিকালের মধ্যে আসলে বলা হয় মেশিনের সফটওয়্যারে সমস্যা। সফটওয়্যারে সমস্যা থাকার কারণে এখন কাজ করা যাবে না। আপনি পরে আইসেন বা ঠিক হলে আমি আপনাকে ফোন দিব।
  খ. রাতে আসলে বলা হয় এখন তো মেশিন বন্ধ করে রেখেছি। আজকে তো আর কাজ করা যাবে না। কালকে বা অন্যদিন আইসেন।

  ৪. নিয়ম হচ্ছে যে জিনিস গুলো জোড়া ব্যতীত তৈরি করা হয় না সেগুলোর ক্ষেত্রে ঐ দুটি জিনিস-ই হলমার্ক করতে হবে। যেমন- কানের রিং। তো এখানে একটা ঘটনা হলো, হলমার্ক মালিক পক্ষের পরিচিত এক জুয়েলার ব্যবসায়ীর ক্ষেত্রে এই জিনিস গুলো এক পিস হলমার্ক করা হয়। দ্বিতীয়টি না করার কারণ হলো ওইটায় ভেজাল থাকে। ঐ এক পিসের হলমার্কের সিল দেখিয়ে কাস্টমারকে বলা হয় যে দ্বিতীয়টিও হলমার্ক করা। কাস্টমার এই দূর্নীতি বুঝতে না পেরে মেনে নেন। এখানে কাস্টমারকে ঠকানোর ক্ষেত্রে হলমার্ক কর্তৃপক্ষও জড়িত।(বিঃদ্রঃ এই সুযোগ অন্য ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে নেই।)

মুহতারাম শাইখ
এই জব করা কি আমার জন্য ঠিক হবে? আমি গতমাসের যে বেতন পেয়েছি সেটা কি আমার জন্য হালাল হবে?(যদিও তখন আমি এইসব বিষয় গুলো ভালোভাবে জানতাম না।) আমি বেতন পেয়ে খরচ করে ফেলছি। যদি হালাল না হয় তাহলে এখন আমার করনীয় কী?

1 Answer

0 votes
by (712,400 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
ধোকা এবং প্রতারণা সম্পর্কে হাদীসে ধমকি বর্ণিত হয়েছে,
হযরত আবু-হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : ( مَنْ حَمَلَ عَلَيْنَا السِّلَاحَ ، فَلَيْسَ مِنَّا ، وَمَنْ غَشَّنَا ، فَلَيْسَ مِنَّا ) 
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন-যে ব্যক্তি আমরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে অস্র ধরলো, সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।এবং যে কাউকে ধোকা দিলো সেও আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।(সহীহ মুসলিম-১৪৬)

হযরত আবু-হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
عن أبي هريرة رضي الله عنه – أيضاً - ، وفيه : مَنْ غَشَّ ، فَلَيْسَ مِنِّي
ভাবার্থঃ যে কাউকে ধোকা দিলো সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।(সহীহ মুসলিম-১৪৭)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রশ্নেন বিবরণ অনুযায়ী এরকম ধোকা ও প্রতারণা মূলক প্রতিষ্টানে চাকুরী করা আপনার জন্য জায়েয হবে না। যদি আপনি সরাসরি প্রতারণায় অংশ নিয়ে থাকেন, তাহলে যেই পরিমাণ অংশ নিয়েছেন, সেই পরিমাণ বেতন আপনার জন্য হারাম হিসেবে বিবেচিত হবে।
ﻭَﻻَ ﺗَﻌَﺎﻭَﻧُﻮﺍْ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻹِﺛْﻢِ ﻭَﺍﻟْﻌُﺪْﻭَﺍﻥِ ﻭَﺍﺗَّﻘُﻮﺍْ ﺍﻟﻠّﻪَ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﺷَﺪِﻳﺪُ ﺍﻟْﻌِﻘَﺎﺏِ
সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা।(সূরা-মায়েদা-২)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...