এক বোনের প্রশ্ন,,,
আমি দ্বীনদার ছিলাম না। নামাজ রোজা এগুলোর মধ্যেই আমার দ্বীন সীমাবদ্ধ থাকতো । নামাজও ঠিকমতো পরতাম না।তবে হ্যা ছোট থেকে অনেকটা লাজ্জুক ছিলাম ছেলেদের সাথেও তেমন মিশতাম না কথা বলতাম না। একটা সময় আমি হেদায়েত পাই তখন নামাজ ঠিকমতো পড়ার চেষ্টা করি। তারপর আমি পর্দা সম্পর্কে ওয়াজে কিছুটা জানতে পারি । তখন আমি বোরকা এবং মাস্ক দিয়ে পর্দা শুরু করি। আগে আমি বোরকা পরতাম না। জীবনের প্রথম আমি বোরকা পড়ি।তারপর পর্দার জন্য হাত মুজা পা মুজা পড়া শুরু করেছি। এভাবেই স্কুলে পর্দাটা করতাম । একজন মেয়ে ফ্রেন্ডের মাধ্যমে আমি মোবাইলে ফেইসবুক খুলি। ফেইসবুকে অনেক দ্বীনিবোন ছিল তাদের পোস্টগুলো খুব ভাল্লাগতো। এই ফেইসবুকে হঠাৎ আমার এক স্কুল ক্লাসমিট ছেলের সাথে পরিচয় হয়। তখন সে আমার ফ্রেন্ড হয়ে যাই তারপর একটা সময় সে আমাকে পছন্দ করে সেটা জানায়। তারপর তার সাথে আমার কথা হতে থাকে মেসেনজারে । (আস্তাগফিরুল্লাহ) তখনও আমি হারাম রিলেশন সম্পর্কে তেমন কিছু জানতাম না।এভাবেই তার সাথে মেসেনজারে কথা হতো । দুইতিন মাস যাওয়ার পর মনে হচ্ছিল আমার ইবাদতে আর স্বাদ পাচ্ছি না ইবাদতের প্রতি কোনো মনোযোগ নেই কেনো এইরকম হচ্ছিল বুঝতে পারছিলাম না। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় যেদিন আমার এইরকম হচ্ছিল ইবাদত নিয়ে সেদিন আমি ফেইসবুকে ডুকেই হারাম রিলেশন নিয়ে পোস্ট এবং ইসলামিক ভিডিও শুনি। ফেইসবুক জুরে হারাম রিলেশন নিয়ে পোস্ট ভিডিও ছিল।
তারপর আমি বুঝতে পারি আমাদের এই সম্পর্কটা হারাম এতে আল্লাহ নারাজ। হারাম রিলেশন অবস্থায় মারা গেলে আমার কবরে আজাব হবে। অনেকটা ভয় পাই। আমি তাঁকে বলছি হারাম রিলেশন ছাড়তে চায় বিয়ে করতে চায়। সে বলে আমি এখন কিভাবে বিয়ে করবো? ইত্যাদি। কিন্তু এই দুইতিন মাসে ওই ছেলের প্রতি আমার অনেকটা ফিতনাযুক্ত মায়া সৃষ্টি হয়ে যায়। তারপর ওই ছেলের সাথে কথা বলা অফ করার চেষ্টা করি কিন্তু পারতেছিলাম না।আমার ইমানটাও তখন নড়বরে ছিল। কোনো না কোনোভাবে ওর সাথে কথা হয়ে যেতো। আবার মেসেন্জারে কথা বলা শুরু করতাম।এভাবে অনেকবার তওবা করতাম আবার ওই ছেলের সাথে কথা বলতাম এভাবেই চলছিল আমার জীবন। কোনো ভাবেই যেনো এ হারাম থেকে বের হতে পারছিলাম না। (আমাদের সম্পর্কটা শুধু মেসেনজারেই সীমাবদ্ধ ছিল। আমি নিজের পিকও দিয়ে ফেলছিলাম, তাঁকে বলছি ডিলিট করার জন্য বলছে ডিলিট করেছে। আমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবে এসবও বলছিল কিন্তু আমি অনেক বাহানা দিয়ে এড়িয়ে গেছি। আমার বাবা দেখলে অনেক জামেলা হবে এসব বলে এড়িয়ে গেছি ) তারপর কোনো উপায় না পেয়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই। আল্লাহ আমাকে সাহায্য করেছেন। হারাম রিলেশন থেকেও বের হতে পারছিলাম না। তারপর অনেক কান্না করতাম ওই ছেলের কথা অনেক মনে পরতো। অনেকদিন পর আবারও এই ছেলের সাথে আমার কথা হয় । তওবা করার পরও বার বার ওই ছেলের সাথে কথা হয়ে যেতো। একটা সময় বুঝতে পারি আল্লাহর সাথে আমি ঠাট্টা করছি তখন আবারো তওবা করি আবার চেষ্টা করি হারাম থেকে বাঁচার।আলহামদুলিল্লাহ আমার মনে কি যেনো হলো, ওই ছেলের প্রতি আগের মতন মায়া কাজ করে না কেমন যেন ঘৃণা সৃষ্টি হয় ।
আলহামদুলিল্লাহ শেষমেষ এই হারাম থেকে বেঁচেছি আল্লাহ আমাকে বাচিয়েছেন। আমি এখন খাস পর্দা করার চেষ্টা করি, আমি সহশিক্ষাও ছেড়ে দিছি এবং আইওএম ভর্তি হয়েছি দ্বীন শিক্ষার জন্য পড়তেছি এখানে। নিজেকে শুধরানোর চেষ্টা করি।
আমার এই হারাম রিলেশন এর গুনাহ নিয়ে অনেক ভয় লাগে।আমি জানতে চাচ্ছি,, আল্লাহ আমাকে মাফ করবেন কি না এতবার যে আমি তওবা করার পরও ওই ছেলের সাথে কথা বলেছি? আমি শুনেছি বারবার গুনাহ করলে নাকি আল্লাহ মাফ করেন না। আর আমি কি উত্তম কাউকে পাওয়ার যৌগ্যতা রাখিনা?