আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
104 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম, হুজুর আমার কিছু প্রশ্ন ছিল।

১.পড়াশোনার ক্ষেত্রে বা কিছু লেখার ক্ষেত্রে কোন পৃষ্ঠায় লিখার পর কিছু পৃষ্ঠায় কিছু স্থান বাকি থাকে। এগুলোতে চাইলে লেখা যায় কিন্তু খাতার সৈন্দর্য্যের জন্য তাতে না লেখলে অন্য পৃষ্ঠায় লিখলে কি গুণাহ হবে?

২.নারীদের কোমল কন্ঠ শোনা গুণাহ কিন্তু অনেক নারী স্বাভাবিক গলায় কথা বলে যা শুনলে ফিতনাহর আশংকা নেই। এক্ষেত্রে প্রয়োজন ব্যাতিত তাদের কন্ঠ শোনা জায়েজ?

বিঃদ্রঃ এক্ষেত্রে তারা আমার সাথে কথা বলছে না বরং নিজেরা কথা বলছে?

৩.কারো  অনুমতি ছাড়া  কিছু চেক করা বাব্যাবহার

করা জায়েজ জায়েজ?যেমন ডায়রি,মোবাইল,বই খাতা আলমারি ইত্যাদি। এক্ষেত্রে তার অনুমতি আছে কি না তা জানা নেই।

৪.কারো বাসায় উঁকি দেওয়া গুণাহ। কিন্তু তা কি শুধু নিজ বাসার ক্ষেত্রে নাকি ভাড়া বাসার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য?

৫.কারো ঘরে কেউ না থাকলে প্রবেশ করা জায়েয? নাজায়েজ হলে তা কি নিজ বাসা হতে হবে নাকি ভাড়া বাসার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

৬.কোন নারীর সাথে প্রয়োজনীয় কথার সময় ঐ নারী যদি কোমল কন্ঠে কথা বলে তাহলে আমার করণীয় কী?

৭.আমার বাসায় পানি না থাকায় আমি অন্যজনের বাসায় গোসল করতে গিয়েছিলাম। গোসল করা কালীন সেখানের একজন নারী জিজ্ঞাসা করে যে,আমার দেরী হবে কি না।আমি বললাম যে না এবং সাথে বললাম যে ২ মিনিট সময় লাগবে।এখন আমার প্রশ্ন তার এই প্রশ্ন করা জায়েয হয়েছে আর আমার উত্তর দেওয়া কি জায়েয হয়েছে?

৮.পরিচিত নারী যদি জিজ্ঞাসা করে কেমন আছি বা জিজ্ঞাসা করে যে কি করো বা জিজ্ঞাসা করে কোথায় যাও,স্কুল কবো খোলা এরকম টাইপ প্রশ্ন করলে যদি আমি ভদ্রতার খাতিরে সংক্ষেপে উত্তর দেই যেমন, ভালো আছি,অমুক কাজটি করি,অমু জায়গায়,অমুক দিনে। তবে কি আমার গুণাহ হবে গুণাহ হবে?

৯.ইসলাম সম্পর্কে খারাপ কিছু ধারণা আসল।যেমন আমার মনে ওয়াসওয়াসা বশত ধারনা আসল যেম:  "আল্লাহর *** " এক্ষেত্রে ওই গালি ***

সরিয়ে দিয়ে এর জায়াগায় সম্মানসূচক শব্দ ব্যাবহার করলাম যেমন: আল্লাহর রহমত।আর ওই গালি কে ভালো অর্থে নিয়ে আসলাম তবে কি গুণাহ হবে?

১০.কেউ কোন পাবলিকলি কারো সাথেই কথা বললে তা শুনলে কি আমার গুণাহ।যেমন অনেক বন্ধুরা বাসে বা রাস্তাঘাটে কথা বললে বা ঘরের মধ্যে বলল ।স্বামী তার স্ত্রীকে পাবলিকলি কথা বলল বা ঘরের মধ্যেই বলল তা আমি শুনতে পেলাম তবে কি গুণাহ হবে?আর ঘরের ক্ষেত্রে তা কি ভাড়া বাসার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে নাকি নিজ ঘর হতে হবে?

১১।এই প্রশ্ন গুলো করতে ১:১০ বেজে গেছে সে হিসেবে আমি যদি ইচ্ছা করে যোহর এর সুন্নত বাদ দিয়ে দিয়ে ফরজ পরে তারপর দুই রাকাত সুন্নত পড়ে চার রাকাত সুন্নত পড়ি তবে কি গুণাহ হবে?

১২। আনমনে করে কারো মোবাইল,ঘড়ির এর দিকে তাকালে আর তাকানোর পর পরই বা হুশ ফিরার পর মোবাইল থেকে চোখ ফিরিয়ে নিলাম এক্ষেত্রে কি গুণা হবে?আর এক্ষেত্রে তার মোবাইলে ভুল করে পার্সোনাল তথ্য যেমন কারো নাম্বার দেখে ফেললাম বা মোবাইল অথবা ঘড়ির সময় দেখে ফেললে তবে কি গুণাহ হবে?

১১.আমি স্যারের সাথে নামাজে যাই। এক্ষেত্রে  নামাজে যাবার আগে নামাজ শুরু করার আর কত সময় বাকি তা দেখার জন্য যদি স্যারের অনুমতি ছাড়া উনার মোবাইলের দিকে তাকাই তবে কি তা জায়েয হবে?

1 Answer

0 votes
by (566,160 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে অন্য পৃষ্ঠায় লিখলে গুণাহ হবেনা
তবে অহেতুক এমনটি করলে অপচয় হবে।

(০২)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে প্রয়োজন ব্যাতিত গায়রে মাহরাম নারীদের কন্ঠ শোনা জায়েজ নয়।

অনিচ্ছাকৃত ভাবে কানে চলে আসলে স্থান ত্যাগ করতে হবে। 

(০৩)
জায়েজ নেই। 

(০৪)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنْهُ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «لَوِ اطَّلَعَ فِي بَيْتِكَ أحدٌ ولمْ تَأذن لَهُ فخذفته بحصاة ففتأت عَيْنَهُ مَا كَانَ عَلَيْكَ مِنْ جُنَاحٍ»

[আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি- কোনো ব্যক্তি যদি অনুমতি ব্যতীত তোমার ঘরে উঁকি মারে যাকে তুমি অনুমতি দাওনি আর তুমি যদি তাকে কোনো কঙ্কর নিক্ষেপ করে তার চক্ষু ফুঁড়ে দাও, এতে তোমার কোনো অপরাধ নেই।
(বুখারী ৬৮৮৮, মুসলিম ২১৫৮, আহমাদ ৭৩১৩।)


حَدَّثَنَا مُوسَى، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبَانُ بْنُ يَزِيدَ قَالَ: حَدَّثَنِي يَحْيَى، أَنَّ إِسْحَاقَ بْنَ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَهُ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ أَعْرَابِيًّا أَتَى بَيْتَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَلْقَمَ عَيْنَهُ خَصَاصَةَ الْبَابِ، فَأَخَذَ سَهْمًا أَوْ عُودًا مُحَدَّدًا، فَتَوَخَّى الأعْرَابِيَّ، لِيَفْقَأَ عَيْنَ الأعْرَابِيِّ، فَذَهَبَ، فَقَالَ: أَمَا إِنَّكَ لَوْ ثَبَتَّ لَفَقَأْتُ عَيْنَكَ.

আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক বেদুইন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাড়িতে এসে দরজার ফাঁক দিয়ে উঁকি মারলো। তিনি একটি তীর বা সুচালো কাঠ তুলে নিলেন এবং বেদুইনের চোখ ফুঁড়ে দেয়ার জন্য তা তার দিকে তাক করলেন। অতএব সে চলে গেলো। তিনি বলেনঃ তুমি যদি স্থির থাকতে তবে আমি তোমার চোখ ফুড়ে দিতাম। (নাসাঈ, হাকিম,আল আদাবুল মুফরাদ ১১০১)

وَعَن سهل بنِ سعد: أَنَّ رَجُلًا اطَّلَعَ فِي جُحْرٍ فِي بَابِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِدْرًى يَحُكُّ بِهِ رَأْسَهُ فَقَالَ: «لَوْ أَعْلَمُ أَنَّكَ تنظُرُني لطَعَنْتُ بهِ فِي عَيْنَيْكَ إِنَّمَا جُعِلَ الِاسْتِئْذَانُ مِنْ أَجْلِ الْبَصَرِ»

সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরজার ছিদ্র দিয়ে উঁকি দিল। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর (হাতে) একটি শলাকা ছিল, যা দিয়ে তিনি মাথা চুলকাচ্ছিলেন। এমতাবস্থায় তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমি যদি নিশ্চিতভাবে জানতাম যে, তুমি (সংগোপনে) আমার দিকে তাকাচ্ছ, তাহলে আমি এর দ্বারা (শলাকা দিয়ে) তোমার চোখ ফুঁড়ে দিতাম। কেননা অনুমতি নেয়ার বিধান এ চোখের কারণেই দেয়া হয়েছে (যাতে কেউ কিছু দেখতে না পায়)।
(বুখারী ৬৯০১, মুসলিম ২১৫৬, নাসায়ী ৪৮৫৯, তিরমিযী ২৭০৯, আহমাদ ২২৮০২, সহীহ আল জামি‘ ২৩৫৪, সহীহ আত্ তারগীব ২৭৩০।)

অনুমতি ছাড়া কারো ঘরে প্রবেশ করলে বা উঁকি দিলে অস্বস্তিকর ও বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এতে ঘরের ব্যক্তি নানা কিছুর সম্মুখীন হওয়া খুবই স্বাভাবিক। তাই ইসলাম অন্যের ঘরে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
ভাড়া বাসার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

(০৫)
কেউ না থাকলে সেক্ষেত্রে নিজ বাসায় প্রবেশ জায়েজ। অন্যের বাসা হলে সেই রুমে এক্ষেত্রে এভাবে প্রবেশের অনুমতি থাকলে প্রবেশ করা যাবে,নতুবা নয়।

(০৬)
দ্রুত কথা শেষ করা। 
তার দিকে যেনো মন আকৃষ্ট না থাকে,সেদিকে সজাগ থাকা।

(০৭)
পর্দার আড়ালে থেকে উক্ত কথপোকথন হয়ে থাকলে সেটি জায়েজ হয়েছে।

(০৮)
পর্দার আড়ালে থেকে প্রশ্ন করলে সেক্ষেত্রে উক্ত উত্তর দিলে গুনাহ হবেনা।
তবে ফিতনার আশংকা থাকা যাবেনা।

গায়রে মাহরাম হলে অপ্রয়োজনীয় হলে উত্তর দেয়া থেকে বাঁচার চেষ্টা করতে হবে।

(০৯)
গুনাহ হবেনা। 

(১০)
ইচ্ছাকৃতভাবে ভাবে শুনলে গুনাহ হবে।
অনিচ্ছায় কানে চলে আসলে গুনাহ হবেনা।
তবে তারপরেও সতর্কতক কাম্য।

সব বাসার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। 

(১১)
ইচ্ছাকৃত হওয়ায় এতে গুনাহ হবে।

অনিচ্ছায় হলে গুনাহ হবেনা।

(১২)
স্যারের অনুমতি ছাড়া তার মোবাইল থেকে সময় দেখা জায়েজ হবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...