আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
156 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (18 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ শায়েখ,

*আমরা কয়েকজন মিলে ( মেয়েরা) একজন বৃদ্ধাকে রাস্তা থেকে উদ্ধার করি।তিনি স্ট্রোক করেছিলেন।অজ্ঞাত ছিলেন,রাস্তায় পরেছিলেন। উনাকে হাসপাতালে ভর্তি করি আমরা,তারপর আমাদের ভার্সিটি এবং ভার্সিটির হল থেকে উনার জন্য চাঁদা তুলি। আমরা যারা উনার সাথে ছিলাম তারাও উনার জন্য চাঁদাতে সাদকা করি।পরে উনি সুস্থ হলে উনার পরিবারের খোঁজ পেয়েছিলাম আমরা, আলহামদুলিল্লাহ।উনাকে উনার পরিবারের কাছে তুলে দিয়েছিলাম, আলহামদুলিল্লাহ।আমরা ভেবেছিলাম তার পরিবার তাকে রাস্তায় ফেলে গিয়েছে।তাই উনি সুস্থ হলে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসতে চেয়েছিলাম।

১/ উনার জন্য তোলা চাঁদার সব টাকা খরচ হয়নি।কিছু টাকা বেঁচে গিয়েছিল।যেহেতু উনার পরিবারের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল তাই বাকি টাকা আমরা তাকে দেয় নি।সেই টাকা আমরা কি করতে পারি? কোন মাদ্রাসায় সাদকা করে দিব বা মসজিদে?

২/ আমরা ৪ জন মেয়ে অনেক বেশি দৌড়াদৌড়ি করেছিলাম উনাকে নিয়ে।ফলে আমরা শারীরিক ভাবে দূর্বল হয়ে পরি।যেহেতু চাঁদা তোলার আগে উনার খরচ আমরাই কিছু দিয়েছিলাম।পরে যখন আর শক্তি পাচ্ছিলাম না।আমরা ঐ চাঁদার টাকা থেকে ৬০ টাকা রিক্সা ভাড়া নিয়েছিলাম।ঐ ৬০ টাকা কি ফেরত দিতে হবে?তখন আমাদেরও অনেক টাকা খরচ হয়েছিল,আমরা ছাত্রীও বটে।

৩/ হায়েজ অবস্থায় জ্বীন,শয়তান ,বদনজর থেকে বেঁচে থাকতে ,শুধু হেফাজতের নিয়তে ৩ কুল এবং আয়াতুল কুরসি পড়তে পারব?

৪/ ফজরের আযানের সময়,মুয়াজ্জিন যখন বলেন,,"আসসালাতু খইরুম মিনান্নাউম" তখন কি  "স্বদাক্বতা ও বাররতা" বলতে হবে?

৫/ আমার এক অমুসলিম বান্ধবী জিজ্ঞেস করেছে,হায়েজের সময় যখন অনেক বেশি ব্যাথা বেদনা হয়।এর উপশমে কোন কুরআনী ট্রীটমেন্ট আছে?  বা হাদিছে কোন নিরাময় ঔষধ আছে কিনা?

৬/ কোন আমল যদি ফজিলতের নিয়তে করি।হয়ত আমলটি কোন হাদিস দ্বারা প্রমাণিত না।কিন্তু কোন বুযুর্গের করা আমল।হাদিস মনে না করে শুধু ফজিলতের নিয়তে করা যাবে?করলে কি বিদআত হবে?

৭/ বিতর না পড়ে যদি তাহাজ্জুদের জন্য রেখে দিই।যদি ঘুম এমন সময় ভাঙ্গে যখন ফজরের নামাজ আদায়ের সম পরিমাণ সময় থাকে।তাহলে সুন্নাহ পড়ব নাকি বিতরের কাজা পড়ব? আবার যদি এমন  হয়, তাহাজ্জুদ পড়ে বিতর পড়ার পর দেখি তাহাজ্জুদের সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। তাহলে কি বিতর আবার কাজা করতে হবে?

আফওয়ান,অনেক প্রশ্ন করেছি।আমাকে মাফ করবেন ।

জাযাকাল্লাহু তা'আলা খইর ফিদ দ্বারাইন শায়েখ।
by (18 points)
reshown by
জাযাকাল্লাহু তা'আলা খইর ফিদ দ্বারাইন শায়েখ।
শায়েখ, টাকা তো পুরো হল থেকে তোলা ।আর এ সংক্রান্ত একটা পোস্টও ভার্সিটির বিভিন্ন গ্রুপে করা হয়েছিল।তাই কে কে টাকা দিয়েছে সেটা বের করা তো অনেক মুশকিল! এক্ষেত্রে কি করণীয়?

1 Answer

0 votes
by (561,180 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
যারা চাঁদা দিয়েছে,তাদের থেকে অনুমতি নিয়ে
এই টাকা মসজিদ/মাদ্রাসায় দান করতে পারবেন।
চাইলে সকলের অনুমক্রমে কোনো গরিব মিসকিনকেও দান করতে পারবেন।

(০২)
এই ৬০ টাকা রিক্সা ভাড়া যদি সেই বৃদ্ধার সহায়তা সংক্রান্ত যাতায়াত বাবদ খরচ হয়,তাহলে ঐ ৬০ টাকা ফেরত দিতে হবেনা।

আর যদি এই ৬০ টাকা রিক্সা ভাড়া আপনাদের ব্যাক্তিগত যাতায়াত বাবদ খরচ হয়ে থাকে,ঐ ৬০ টাকা ক্যাশ-এ ফেরত দিতে হবে।

(০৩)
শরীয়তের বিধান হলো মহিলাদের হায়েজ অবস্থায় কুরআন শরিফ স্পর্শ করা, তেলাওয়াত করা জায়েজ নেই। 
,
হায়েজ,নেফাস,গোসল ফরজ থাকা অবস্থায় কুরআনে কারীম পড়া হারাম। 
তবে যিকির,দোয়া সম্বলিত আয়াত,দ্বীনি কিতাব সমুহ পড়তে কোনো সমস্যা নেই।   
(কিতাবুন নাওয়াজেল ৩/১১০) 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ   
عن ابن عمر : عن النبي صلى الله عليه و سلم قال لا تقرأ الحائض ولا الجنب شيئا من القرآن (سنن الترمذى، ابواب الطهارات، باب ما جاء في الجنب والحائض : أنهما لا يقرأن القرآن، رقم الحديث-131

অনুবাদ-হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-ঋতুবতী মহিলা এবং গোসল ফরজ হওয়া ব্যক্তি কোরআন পড়বে না।
(সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-১৩১,
সুনানে দারেমী, হাদীস নং-৯৯১,
মুসনাদুর রাবী, হাদীস নং-১১,
মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১০৯০,
মুসন্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-৩৮২৩)

ولا بأس لحائض وجنب بقراء ۃ أدعیۃ ومسہا وحملہا وذکر اللّٰہ عز وجل وتسبیح۔ (درمختار ۱؍۲۹۳ کراچی، ۱؍۴۸۸ زکریا، الفتاویٰ التاتارخانیۃ ۱؍۴۸۱ زکریا) 
হায়েজাহ মহিলার জন্য কুরআনের দোয়ার আয়াত তেলাওয়াত করা,সেটা স্পর্শ করা,উঠানো,আল্লাহর যিকির তাসবিহ জপা জায়েজ।
এতে কোনো সমস্যা নেই। 
,

আয়াতুল কুরসি দোয়া মূলক, তিন কুল দোয়া মূলক ,আমানার রসুল দোয়া মূলক, মঞ্জিল এর ৩৩ আয়াত দোয়া, মোনাজাত মূলক আয়াতসমূহ -এসবও পড়া যাবে।
এগুলোও দোয়া মূলক আয়াত।

فتاوی شامی 

" فلو قرأت الفاتحة على وجه الدعاء أو شيئاً من الآيات التي فيها معنى الدعاء ولم ترد القراءة لا بأس به، كما قدمناه عن العيون لأبي الليث، وأن مفهومه أن ما ليس فيه معنى الدعاء كسورة أبي لهب لا يؤثر فيه قصد غير القرآنية".(1/293)
সারমর্মঃ-
যদি সুরা ফাতেহা দোয়ার উদ্দেশ্যে পড়ে,অথবা অন্য কোনো আয়াত পড়ে,যে আয়াতের মধ্যে দোয়ার অর্থ আছে,সেক্ষেত্রে কিরাআত (তিলাওয়াত) উদ্দেশ্য না হয়,তাহলে কোনো সমস্যা নেই। তবে যে আয়াতের মধ্যে দোয়ার অর্থ নেই,যেমন সুরা লাহাব,সেক্ষেত্রে কুরআন থেকে তিলাওয়াত না করার উদ্দেশ্যটি প্রতিক্রিয়াশীল হবেনা। {অর্থাৎ সেক্ষেত্রে কুরআন থেকে কিরাআত (তিলাওয়াত) উদ্দেশ্য হিসেবেই ধরা হবে।}
(ফাতাওয়ায়ে শামি ১/২৯৩)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
হায়েজ অবস্থায় জ্বীন,শয়তান ,বদনজর থেকে বেঁচে থাকতে ,হেফাজতের নিয়তে ৩ কুল এবং আয়াতুল কুরসি পড়তে পারবেন।

(০৪)
হ্যাঁ, আযানের জবাব দিলে তখন "স্বদাক্বতা ও বাররতা" বলতে হবে।

(০৫)
বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।

(০৬)
দ্বীনের অংশ,আবশ্যকীয় মনে না করে এবং ছওয়াবের বিষয় মনে না করে করলে তাহা বিদ'আত হবেনা।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ফজিলতের বিষয় মনে করা যাবেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৭)
ক, এক্ষেত্রে আগে বিতরের কাজা আদায় করবেন।

খ, তাহাজ্জুদ পড়ে বিতর পড়ার পর যদি দেখেন যে তাহাজ্জুদের সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। তাহলে বিতর আবার কাজা করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...