আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
600 views
in পবিত্রতা (Purity) by (45 points)
আসসালামু আলাইকুম।

১.শায়েখ,হায়েয অবস্থায় বাংলা অনুবাদ পড়া যাবে কি কুরআনের ফোন থেকে?

২. এ অবস্থায় কুরআনের তাফসীর পড়া যাবে কিনা ফোন থেকে।
৩. নন মাহরাম পুরুষদের সাথে কোন কোন ক্ষেত্রে কথা বলা জায়েজ?

জাযাকাল্লাহু খইর।

1 Answer

0 votes
by (671,200 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
মহিলাদের হায়েজ অবস্থায় কুরআন শরিফ স্পর্শ করা, তেলাওয়াত করা জায়েজ নেই। 
,
হায়েজ,নেফাস,গোসল ফরজ থাকা অবস্থায় কুরআনে কারীম পড়া হারাম। 
عن ابن عمر : عن النبي صلى الله عليه و سلم قال لا تقرأ الحائض ولا الجنب شيئا من القرآن (سنن الترمذى، ابواب الطهارات، باب ما جاء في الجنب والحائض : أنهما لا يقرأن القرآن، رقم الحديث-131

অনুবাদ-হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-ঋতুবতী মহিলা এবং গোসল ফরজ হওয়া ব্যক্তি কোরআন পড়বে না।
(সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-১৩১,
সুনানে দারেমী, হাদীস নং-৯৯১,
মুসনাদুর রাবী, হাদীস নং-১১,
মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১০৯০,
মুসন্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-৩৮২৩)
,
শরীয়তের বিধান মতে  কুরআনের তরজমা, তাফসীর  
পড়া বা তা শোনার দ্বারা সেজদায়ে তেলাওয়াত ওয়াজিব হয়না।

সুরা ইউসুফ এর ০২ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা  বলেন 

إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ قُرْآنًا عَرَبِيًّا لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ 

অনুবাদঃ আমি আরবী ভাষায় কুরআন নাজিল করেছি,যাতে করে তোমরা বুঝতে পারো।  

,
★সুতরাং অনুবাদ,তরজমা যেহেতু হুবহু কুরআন নয়,তাই হায়েজ অবস্থায় শুধু কুরআনের তরজমা পড়া জায়েজ আছে।
,
(০২)
তাফসিরের কিতাব যেখানে আয়াতের তুলনায় তাফসীরই বেশি,সেটি পড়া স্পর্শ করা জায়েজ আছে 
তবে তাফসীরের যেই স্থানে আয়াত লেখা আছে,সেই আয়াত স্পর্শ করবেনা।

জামিয়া বিন নুরি পাকিস্তানের 143908201123 নং ফতোয়া দ্রষ্টব্য।

ফাতাওয়ায়ে শামীতে এসেছেঃ   
وقد جوّز أصحابنا مس كتب التفسير للمحدث ولم يفصلوا بين كون الأكثر تفسيراً أو قرآناً، ولو قيل به اعتباراً للغالب لكان حسناً''۔(1/177۔دارالفکر)
সারমর্মঃ
জুনুবি ব্যাক্তির জন্য তাফসীরের কিতাব স্পর্শ করা জায়েজ আছে।    

''مراقی الفلاح''  :
''قوله : ( إلا التفسير ) في الأشباه: وقد جوّز بعض أصحابنا مسّ كتب التفسير للمحدث ولم يفصلوا بين كون الأكثر تفسيراً أو قرآناً، ولو قيل به اعتباراً للغالب لكان حسناً۔ وفي الجوهرة: كتب التفسير وغيرها لا يجوز مس مواضع القرآن منها وله أن يمس غيرها''۔(1/95)
সারমর্মঃ
আমাদের কিছু ফুকাহায়ে কেরামগন  জুনুবি ব্যাক্তির জন্য তাফসীরের কিতাব স্পর্শ করা জায়েজ বলেছেন।  , 
(০৩)
পপরিপূর্ণ শরয়ী পর্দার আড়াল থেকে বিশেষ প্রয়োজনে ফিতনার আশংকা না থাকলে,এবং শরীয়ত বহির্ভূত কোনো কথা না বলে প্রয়োজনীয় কথা বলা জায়েজ আছে।
তবে নরম ভাষায় কথা বলা যাবেনা।
        
কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে,আল্লাহ তা'আলা বলেন,

ﻳَﺎ ﻧِﺴَﺎﺀ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﻟَﺴْﺘُﻦَّ ﻛَﺄَﺣَﺪٍ ﻣِّﻦَ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀ ﺇِﻥِ ﺍﺗَّﻘَﻴْﺘُﻦَّ ﻓَﻠَﺎ ﺗَﺨْﻀَﻌْﻦَ ﺑِﺎﻟْﻘَﻮْﻝِ ﻓَﻴَﻄْﻤَﻊَ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻓِﻲ ﻗَﻠْﺒِﻪِ ﻣَﺮَﺽٌ ﻭَﻗُﻠْﻦَ ﻗَﻮْﻟًﺎ ﻣَّﻌْﺮُﻭﻓًﺎ

(তরজমা) তোমরা (পর পুরুষের সাথে) বাক্যালাপে কোমলতা অবলম্বন কর না। যাতে এরূপ লোকের অন্তরে আকাঙ্ক্ষা (সঞ্চার) হয়, যার অন্তরে কুপ্রবৃত্তি রয়েছে। (সূরা আহযাব : ৩২)

ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﻟَﺎ ﺗَﺪْﺧُﻠُﻮﺍ ﺑُﻴُﻮﺕَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺇِﻟَّﺎ ﺃَﻥ ﻳُﺆْﺫَﻥَ ﻟَﻜُﻢْ ﺇِﻟَﻰ ﻃَﻌَﺎﻡٍ ﻏَﻴْﺮَ ﻧَﺎﻇِﺮِﻳﻦَ ﺇِﻧَﺎﻩُ ﻭَﻟَﻜِﻦْ ﺇِﺫَﺍ ﺩُﻋِﻴﺘُﻢْ ﻓَﺎﺩْﺧُﻠُﻮﺍ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻃَﻌِﻤْﺘُﻢْ ﻓَﺎﻧﺘَﺸِﺮُﻭﺍ ﻭَﻟَﺎ ﻣُﺴْﺘَﺄْﻧِﺴِﻴﻦَ ﻟِﺤَﺪِﻳﺚٍ ﺇِﻥَّ ﺫَﻟِﻜُﻢْ ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺆْﺫِﻱ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﻓَﻴَﺴْﺘَﺤْﻴِﻲ ﻣِﻨﻜُﻢْ ﻭَﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟَﺎ ﻳَﺴْﺘَﺤْﻴِﻲ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺤَﻖِّ ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺳَﺄَﻟْﺘُﻤُﻮﻫُﻦَّ ﻣَﺘَﺎﻋًﺎ ﻓَﺎﺳْﺄَﻟُﻮﻫُﻦَّ ﻣِﻦ ﻭَﺭَﺍﺀ ﺣِﺠَﺎﺏٍ ﺫَﻟِﻜُﻢْ ﺃَﻃْﻬَﺮُ ﻟِﻘُﻠُﻮﺑِﻜُﻢْ ﻭَﻗُﻠُﻮﺑِﻬِﻦَّ ﻭَﻣَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻟَﻜُﻢْ ﺃَﻥ ﺗُﺆْﺫُﻭﺍ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﻟَﺎ ﺃَﻥ ﺗَﻨﻜِﺤُﻮﺍ ﺃَﺯْﻭَﺍﺟَﻪُ ﻣِﻦ ﺑَﻌْﺪِﻩِ ﺃَﺑَﺪًﺍ ﺇِﻥَّ ﺫَﻟِﻜُﻢْ ﻛَﺎﻥَ ﻋِﻨﺪَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﻈِﻴﻤًﺎ

হে মুমিনগণ! তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া না হলে তোমরা খাওয়ার জন্য আহার্য রন্ধনের অপেক্ষা না করে নবীর গৃহে প্রবেশ করো না। তবে তোমরা আহুত হলে প্রবেশ করো, তবে অতঃপর খাওয়া শেষে আপনা আপনি চলে যেয়ো, কথাবার্তায় মশগুল হয়ে যেয়ো না। নিশ্চয় এটা নবীর জন্য কষ্টদায়ক। তিনি তোমাদের কাছে সংকোচ বোধ করেন; কিন্তু আল্লাহ সত্যকথা বলতে সংকোচ করেন না। তোমরা তাঁর পত্নীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্যে এবং তাঁদের অন্তরের জন্যে অধিকতর পবিত্রতার কারণ। আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয়া এবং তাঁর ওফাতের পর তাঁর পত্নীগণকে বিবাহ করা তোমাদের জন্য বৈধ নয়। আল্লাহর কাছে এটা গুরুতর অপরাধ।(সূরা আহযাব-৫৩)

উপরোক্ত আয়াতের ভিত্তিতে বলা যায় যে,
পুরুষের জন্য বিনা প্রয়োজনে কোনো বেগানা নারীর সাথে কথা বলা নিষেধ।তবে গায়রে মাহরাম আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে পর্দার আড়ালে থেকে বলার অনুমোদন দেয়া যেতে পারে।
-সূরা আহযাব : ৩২; তাফসীরে ইবনে কাসীর ৩/৭৬৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস ২০৩৮; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ৩/৩৫৯; রদ্দুল মুহতার ১/৪০৬; ইমদাদুল ফাত্তাহ পৃ. ২৬৯
,
আরো জানুনঃ


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...