জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
যে মহিলার একাধিক বিয়ে হয়েছে, জান্নাতে তার স্বামী কে হবে? এ বিষয়ে মতভেদ আছে। দু’টি বক্তব্য পাওয়া যায়। যথা-
১-দুনিয়ার সর্বশেষ স্বামী হবে আখেরাতের স্বামী।
২-মহিলাকে ইচ্ছেধীকার দেয়া হবে। দুই বা একাধিক স্বামীর মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছে গ্রহণ করতে পারে।
হাদীস শরীফে এ সম্পর্কে উভয় মতের স্বপক্ষেই বর্ণনা পাওয়া যায়। যারা সর্বশেষ স্বামীর সঙ্গে থাকার মত দিয়েছেন, তারা হযরত মুআবিয়া (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করেছেন। মুআবিয়া (রা.) যখন উম্মে দারদা (রা.) কে বিবাহের প্রস্তাব দিলেন, উম্মে দারদা (রা.) তখন সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে বললেন,
سمعت أبا الدرداء يحدث عن النبي صلى الله عليه وسلم أنه قال: المرأة لآخر زوجيها في الآخرة، وقال إن أردت أن تكوني زوجتي في الآخرة فلا تتزوجي بعدي
“আমি শুনেছি যে, আবু দারদা (রা.) বলছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “আখেরাতে স্ত্রী তার সর্বশেষ স্বামীর সঙ্গে থাকবে”। এরপর আবু দারদা (রা.) বলেন, যদি তুমি আখেরাতে আমার স্ত্রী থাকতে চাও, তাহলে আমার পরে আর বিয়ে করো না।” [বুস্তানু ফকীহি আবিল লাইছ, পৃষ্ঠা ২৪৮]
আর যারা বলেন স্ত্রীকে বেছে নেওয়ার ইচ্ছাধিকার দেওয়া হবে, তাদের স্বপক্ষে দলীল হলো যা রাসুলুল্লাহ (সা.) এর স্ত্রী উম্মুল মুমিনীন হযরত উম্মে হাবীবা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.) কে প্রশ্ন করেন,
يا رسول الله المرأة منا ربما يكون لها زوجان لأيهما تكون في الآخرة؟ قال: تخير فتختار أحسنهما خلقاً معها ثم قال صلى الله عليه وسلم ذهب حسن الخلق بخيري الدنيا والآخرة
“হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের কোনো কোনো নারীর দুটি স্বামী হয়। আখেরাতে সে কোন স্বামীর স্ত্রী হবে?” রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, “তাকে ইচ্ছাধিকার দেওয়া হবে। অতঃপর সে তার সঙ্গে অধিক উত্তম আচরণকারীকে বেছে নিবে। এরপর তিনি আরও বললেন, উত্তম আচরণ দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জাহানেই কল্যাণের কারণ” [বুস্তানু ফকীহি আবিল লাইছ, পৃষ্ঠা ২৪৮]
(قال الفقيه) رحمه الله: اختلف الناس في المرأة إذا كان لها زوجان في الدنيا لأيهما تكون في الآخرة؟ قال بعضهم: تكون لآخرهما، وقال بعضهم: تخير فتختار أيهما شاءت. وقد جاء في الأثر ما يؤيد قول كلا الفريقين: أما من قال هي لآخرهما فقد ذهب إلى ما روي عن معاوية بن أبي سفيان أنه خطب أم الدرداء فأبت وقالت: سمعت أبا الدرداء يحدث عن النبي صلى الله عليه وسلم أنه قال: ((المرأة لآخر زوجيها في الآخرة، وقال إن أردت أن تكوني زوجتي في الآخرة فلا تتزوجي بعدي)) وأما من قال بأنها تخير فذهب إلى ما روي عن أم حبيبة زوج النبي صلى الله تعالى عليه وسلم ((أنها سألت النبي صلى الله عليه وسلم فقالت يا رسول الله المرأة منا ربما يكون لها زوجان لأيهما تكون في الآخرة؟ قال: تخير فتختار أحسنهما خلقاً معها ثم قال صلى الله عليه وسلم ذهب حسن الخلق بخيري الدنيا والآخرة). (بستان العارفين للسمرقندى، الباب السادس والمائة: في المرأة إذا كان لها زوجان في الدنيا،-248، التذكرة، باب اذا ابتكر الرجل امرأة فى الدنيا كانت زوجته فى الآخرة-2/145، مطبوعة دار الكتب العلمية بيروت، الفتاوى الديثة، مطلب ممن تكوت الزوجة فى الجنة اذا كان لها الأزواج، مطبوعة دار المعرفة بيروت-48-49(
,
সারমর্মঃ
এ বিষয়ে মতভেদ আছে। দু’টি বক্তব্য পাওয়া যায়। যথা-
১-দুনিয়ার সর্বশেষ স্বামী হবে আখেরাতের স্বামী।
২-মহিলাকে ইচ্ছেধীকার দেয়া হবে। দুই বা একাধিক স্বামীর মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছে গ্রহণ করতে পারে।
হাদীস শরীফে এ সম্পর্কে উভয় মতের স্বপক্ষেই দলিল পাওয়া যায়।
,
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
জান্নাতে তো সবার সব ইচ্ছায় পূরণ হবে,এক্ষেত্রে উক্ত স্ত্রীর মনের ইচ্ছা ধর্তব্য হবে।
তার ইচ্ছার খেলাফ হবেনা।
এখানে যেহেতু সেই স্ত্রীকে পাওয়া নিয়েই কথা হচ্ছে,সুতরাং উভয় স্বামীই তো চাইবে যে তাকে নিয়ে থাকার।
তাই এক্ষেত্রে তাকেই ইখতিয়ার পূর্ণ ইচ্ছা দেওয়া,সে যাকে ইচ্ছা তাকেই গ্রহন করবে।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
এটি নিয়ে অহেতুক টেনশন করার কোন প্রয়োজন নেই।
কিভাবে জান্নাতে যেতে পারি? সেই আমল করায় মনোনিবেশ করা উচিত। জান্নাতে যাবার পর কী করবো? সেটি জান্নাতে যাবার পরই নিজের স্বচক্ষে দেখতো পাবো ইনশাআল্লাহ।
,