আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
149 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (12 points)
السلام عليكم و رحمة الله و بركاته

এক বোন এর প্রশ্ন - আমি তাড়াতাড়ি ঘুমানোর চেষ্টা করেও অনেকবার ব্যর্থ হয়েছি। তাড়াতাড়ি ঘুমালেও আমি ফজর এ উঠতে পারি না। এলার্ম শুনি না। আবার ঘুমের পরিমাণ তখন অনেক দীর্ঘ হয়ে যায়। আমি যদি সারারাত কিয়ামুল লাইল এর নিয়তে জেগে থাকি, ফজরের পরে সূর্যোদয় এর পরে ঘুমাই। এটা কি আমার জন্য ক্ষতিকর। আমি সুন্নাহ মানতে চাই, কিন্তু আমি পারি না। এক্ষেত্রে আমার কি করা উচিৎ। অনুগ্রহ করে পরামর্শ দিন।

আল্লাহ আপনাদেরকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।

1 Answer

0 votes
by (574,080 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

কাহারো  যদি শেষ রাত্রিতে জাগ্রত হওয়ার সম্ভাবনা না থাকার দরুন ইশার নামাজের পড়েই তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে নেয়,তবে সেও ছওয়াব পাবে।
তবে শেষ রাতেই তাহাজ্জুদ পড়া উত্তম।  
,
তাহাজ্জুদের মূল ওয়াক্ত হল, রাতের শেষ প্রহর। শেষ প্রহর বলতে রাতের শেষ তৃতীয়াংশ থেকে ফজর নামাযের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগ পর্যন্তকে বোঝানো হয়েছে। হ্যাঁ, ঘুম থেকে না জাগার সম্ভাবনা থাকলে ইশার নামাযের পর দু রাকআত সুন্নত ও বিতরের আগে তাহাজ্জুদ পড়ে নেয়া জায়েয আছে। তবে পরিপূর্ণ তাহাজ্জুদের মর্যাদা পেতে হলে রাতের শেষ প্রহরে উঠে এই নামায আদায় করতে হবে।

আব্দুল্লাহ ইবন ওমর রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, اجْعَلُوا آخِرَ صَلاَتِكُمْ بِاللَّيْلِ وِتْرًا বিতরকে তোমাদের রাতের শেষ নামায করবে। (বুখারি ৯৯৮ মুসলিম ৭৫১)

জাবির রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

مَنْ خَافَ أَنْ لَا يَقُومَ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ فَلْيُوتِرْ أَوَّلَهُ ، وَمَنْ طَمِعَ أَنْ يَقُومَ آخِرَهُ فَلْيُوتِرْ آخِرَ اللَّيْلِ ، فَإِنَّ صَلَاةَ آخِرِ اللَّيْلِ مَشْهُودَةٌ ، وَذَلِكَ أَفْضَلُ

যে ব্যক্তি শেষ রাতে উঠতে না পারার আশংকা করবে, সে যেন শুরু রাতেই বিতির পড়ে নেয়। আর যে ব্যক্তি রাতের শেষ ভাগে উঠে (ইবাদত) করার লালসা রাখে, সে যেন রাতের শেষ ভাগেই বিতির সমাধা করে। কারণ, রাতের শেষ ভাগের নামাযে ফেরেশতারা হাজির হন এবং এটিই উত্তম আমল। (মুসলিম ৭৫৫)

আরো জানুনঃ 

عن أیاس بن معاویة المزني رضي اللّٰہ عنہ أن رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ تعالیٰ علیہ وسلم قال: لا بد من صلاة اللیل، ولو حلب شاة، وما کان بعد صلاة العشاء فہو من اللیل(رواہ الطبراني في الکبیر، کذا في الترغیب والترہیب، کتاب النوافل / الترغیب في قیام اللیل رقم: ۹۳۳)،وروی الطبراني مرفوعاً: لابد من صلاة بلیل ولو حلب شاة، وما کان بعد صلاة العشاء فہو من اللیل، وہٰذا یفید أن ہٰذہ السنة تحصل بالتنفل بعد صلاة العشاء قبل النوم(رد المحتار۲:۴۶۷، ط: مکتبة زکریا دیوبند، تبیین الحقائق ۱:۲۶۲، ط: مکتبة زکریا دیوبند)

সারমর্মঃ রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন যে রাতের (নফল) নামাজ খুবই জরুরি।      
যদিও বকরির দুধ দহনের সময় হোক। ঈশার নামাজের পরে নামাজ পড়া এটা রাত্রিতেই নামাজ পড়ার হুকুমে।
এখান থেকে ঘুমানোর পূর্বে ঈশার পর নফল পড়ার বিধান হাসিল হয়।   

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
ঘুম থেকে না জাগার সম্ভাবনা থাকলে যদি ইশার সালাতের পরে তাহাজ্জুদ সালাত আদায় করা হয়,সেটিও করা যাবে।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ইশার নামাজের পত তাহাজ্জুদ আদায় করে ঘুমানোর পরামর্শ থাকবে। 

তারপরও আপনি যদি নিয়মিত সারারাত কিয়ামুল লাইল এর নিয়তে জেগে থাকেন, ফজরের পরে সূর্যোদয় এর পরে ঘুমান। 
বিজ্ঞ ডাক্তারদের মতে নিয়মিত এমনটি করা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।  

তাই কিছু রাত ঘুমানো আর কিছু রাত তাহাজ্জুদ পড়তে পারেন।
এটিই সুন্নাহ।

তবে শরীরের জন্য ক্ষতিকর না হলে সারা রাত তাহাজ্জুদ পড়লেও শরীয়তের দৃষ্টিকোন হতে সমস্যা নেই।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنِي عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ عَنْ حُمَيْدٍ أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسًا يَقُولُ كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُفْطِرُ مِنْ الشَّهْرِ حَتَّى نَظُنَّ أَنْ لاَ يَصُومَ مِنْهُ وَيَصُومُ حَتَّى نَظُنَّ أَنْ لاَ يُفْطِرَ مِنْهُ شَيْئًا وَكَانَ لاَ تَشَاءُ تَرَاهُ مِنْ اللَّيْلِ مُصَلِّيًا إِلاَّ رَأَيْتَهُ وَلاَ نَائِمًا إِلاَّ رَأَيْتَهُ وَقَالَ سُلَيْمَانُ عَنْ حُمَيْدٍ أَنَّهُ سَأَلَ أَنَسًا فِي الصَّوْمِ

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন মাসে এভাবে সওম ছেড়ে দিতেন যে, আমরা মনে করতাম, তিনি এ মাসে আর সওম পালন করবেন না। আবার কোন মাসে এভাবে সওম পালন করতেন যে, আমরা মনে করতাম তিনি এ মাসে আর সওম ছাড়বেন না। আর তুমি যদি তাঁকে রাতে সালাত আদায়রত অবস্থায় দেখতে চাইতে তবে তা দেখতে পেতে, আবার যদি তুমি তাঁকে ঘুমন্ত দেখতে চাইতে তবে তাও দেখতে পেতে। সুলায়মান (রহ.) হুমাইদ (রহ.) সূত্রে বলেন যে, তিনি আনাস (রাঃ)-কে সওম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছেন। (বুখারী ১১৪১) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৮৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৮৪৫)

حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ، أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، أَخْبَرَنَا حُمَيْدُ بْنُ أَبِي حُمَيْدٍ الطَّوِيلُ، أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ ـ رضى الله عنه ـ يَقُولُ جَاءَ ثَلاَثَةُ رَهْطٍ إِلَى بُيُوتِ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَسْأَلُونَ عَنْ عِبَادَةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا أُخْبِرُوا كَأَنَّهُمْ تَقَالُّوهَا فَقَالُوا وَأَيْنَ نَحْنُ مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَدْ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَا تَأَخَّرَ. قَالَ أَحَدُهُمْ أَمَّا أَنَا فَإِنِّي أُصَلِّي اللَّيْلَ أَبَدًا. وَقَالَ آخَرُ أَنَا أَصُومُ الدَّهْرَ وَلاَ أُفْطِرُ. وَقَالَ آخَرُ أَنَا أَعْتَزِلُ النِّسَاءَ فَلاَ أَتَزَوَّجُ أَبَدًا. فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " أَنْتُمُ الَّذِينَ قُلْتُمْ كَذَا وَكَذَا أَمَا وَاللَّهِ إِنِّي لأَخْشَاكُمْ لِلَّهِ وَأَتْقَاكُمْ لَهُ، لَكِنِّي أَصُومُ وَأُفْطِرُ، وَأُصَلِّي وَأَرْقُدُ وَأَتَزَوَّجُ النِّسَاءَ، فَمَنْ رَغِبَ عَنْ سُنَّتِي فَلَيْسَ مِنِّي ".

সাঈদ ইবনু আবূ মারয়াম (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিন জনের একটি দল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইবাদত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিবিগণের গৃহে আগমন করল। যখন তাঁদেরকে এ সম্পর্কে অবহিত করা হল, তখন তারা এ ইবাদতের পরিমাণ যেন কম মনে করল এবং বলল, আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সমকক্ষ হতে পারি না। কারণ, তার আগে ও পরের সকল গুনাহ্ মাফ করে দেয়া হয়েছে। এমন সময় তাদের মধ্য থেকে একজন বলল, আমি সারা জীবন রাতে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে থাকব। অপর একজন বলল, আমি সারা বছর রোযা পালন করব এবং কখনও বিরতি দিব না। অপরজন বলল, আমি নারী বিবর্জিত থাকব-কখনও শাদী করব না।

এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের নিকট এলেন এবং বললেন, “তোমরা কি ঐ সকল ব্যাক্তি যারা এরূপ কথাবার্তা বলেছ? আল্লাহর কসম! আমি আল্লাহকে তোমাদের চেয়ে বেশী ভয় করি এবং তোমাদের চেয়ে তাঁর প্রতি আমি বেশি আনুগত্যশীল; অথচ আমি রোযা পালন করি, আবার রোযা থেকে বিরতও থাকি। সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করি এবং ঘুমাই ও বিয়ে-শাদী করি। সুতরাং যারা আমার সুন্নাতের প্রতি বিরাগ ভাব পোষণ করবে, তারা আমার দলভুক্ত নয়।
(বুখারী ৪৬৯৩)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
ফজর নিয়ে ছিল শাইখ। ফজর এ উঠতে না পারলে এইক্ষেত্রে ঐভাবে করা যাবে কিনা। উত্তম হবে কিনা
by (574,080 points)
এলার্মে কাজ না হলে 
এক্ষেত্রে বাসার কাউকে ফজরে আপনাকে জাগিয়ে দেয়ার দায়িত্ব দিবেন।
তাহলেই আশা করি সমস্যা থাকবেনা।
by (574,080 points)
তাতেও কাজ না হলে আপনি ঐভাবে করতে পারবেন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 225 views
...