আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
125 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
আসসালামু আলাইকুম। সুন্নাতে মুআক্কাদা পড়ার সময়ে যদি মা ডাকেন সেক্ষেত্রে কোনটি করা জরুরী? নামাজ চালিয়ে যাওয়া নাকি নামাজ ছেড়ে মায়ের ডাকে সাড়া দেওয়া?


একই ভাবে ফরজ এবং নফল নামাজের ক্ষেত্রে বিধানগুলো ও জানাবেন দয়া করে।

1 Answer

0 votes
by (57,810 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

এক হাদীসে নবী কারীম সাঃ বনী-ঈসরাইলের এক আবেদ (সূফী-দরবেশ)এর তার মার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা (নফল নামাযে মায়ের ডাকে সারা না দেয়া) বর্ণনা করে বলেন, "যদি তাঁর মাতা তার বিরুদ্ধে অন্য কোন বিপদে পতিত হওয়ার বদ দুআ করত তাহলে অবশ্যই সে সেই বিপদে পতিত হত।"

হাদীসে আছে যে,

، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّهُ قَالَ: كَانَ جُرَيْجٌ يَتَعَبَّدُ فِي صَوْمَعَةٍ، فَجَاءَتْ أُمُّهُ. قَالَ حُمَيْدٌ: فَوَصَفَ لَنَا أَبُو رَافِعٍ صِفَةَ أَبِي هُرَيْرَةَ لِصِفَةِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُمَّهُ حِينَ دَعَتْهُ، كَيْفَ جَعَلَتْ كَفَّهَا فَوْقَ حَاجِبِهَا، ثُمَّ رَفَعَتْ رَأْسَهَا إِلَيْهِ تَدْعُوهُ، فَقَالَتْ: يَا جُرَيْجُ أَنَا أُمُّكَ كَلِّمْنِي فَصَادَفَتْهُ يُصَلِّي، فَقَالَ: اللهُمَّ أُمِّي وَصَلَاتِي، فَاخْتَارَ صَلَاتَهُ، فَرَجَعَتْ، ثُمَّ عَادَتْ فِي الثَّانِيَةِ، فَقَالَتْ: يَا جُرَيْجُ أَنَا أُمُّكَ فَكَلِّمْنِي، قَالَ: اللهُمَّ أُمِّي وَصَلَاتِي، فَاخْتَارَ صَلَاتَهُ، فَقَالَتْ: اللهُمَّ إِنَّ هَذَا جُرَيْجٌ وَهُوَ ابْنِي وَإِنِّي كَلَّمْتُهُ، فَأَبَى أَنْ يُكَلِّمَنِي، اللهُمَّ فَلَا تُمِتْهُ حَتَّى تُرِيَهُ الْمُومِسَاتِ. قَالَ: وَلَوْ دَعَتْ عَلَيْهِ أَنْ يُفْتَنَ لَفُتِنَ

তরজমাঃ- আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, জুরাইজ (বনী ইসরাঈলের এক ব্যক্তি) তাঁর ইবাদতখানায় সর্বদা ইবাদতে মশণ্ডল থাকতেন। (একবার) তাঁর মাতা তাঁর কাছে এলেন। হুমায়দ (রহঃ) বলেনঃ আমাদের কাছে আবূ রা'ফে এমন আকারে ব্যক্ত করেন, যেমন ভাবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মায়ের ডাকের আকার আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর কাছে ব্যক্ত করেছেন। কিরুপ তিনি কপালের নিচে আব্রুর উপর হাত রেখেছিলেন। এরপর তাঁর দিকে মাথা উচু করে তাকে ডাকলেন। বললেন, হে জুরায়জ! আমি -তোমার মা, আমার সাথে কথা বল। এই কথা এমন অবস্থায় বলছিলেন, যখন জুরায়জ সালাতে মশগুল ছিলেন। তখন তিনি মনে মনে বলতে লাগলেন, হে আল্লাহ! (একদিকে) আমার মা আর (অপর দিকে) আমার সালাত (আমি কী করি।)”। রাবী বলেন-অবশেষে তিনি তাঁর সালাতকে অগ্রাধিকার দিলেন। এবং তার মা ফিরে গেলেন। পরে তিনি দ্বিতীয়বার আসলেন এবং বললেন, হে জুরায়জ! আমি তোমার মা, তুমি আমার সংগে কথা বল। তিনি বললেন, ইয়া আল্লাহ! আমার মা, আমার সালাত। তখন তিনি তাঁর সালাতে মশগুল রইলেন। তখন তাঁর মা বললেন, হে আল্লাহ! এই জুরায়জ আমারই ছেলে। আমি তার সংগে কথা বলতে চাচ্ছিলাম। সে আমার সংগে কথা বলতে অস্বীকার করল। হে আল্লাহ! তার মৃত্যূ দিয়ো না, যে পর্যন্ত না তাকে ব্যভিচারিনী দেখাও। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যদি তাঁর মাতা তার বিরুদ্ধে অন্য কোন বিপদে পতিত হওয়ার বদ দুআ করত তাহলে অবশ্যই সে সেই বিপদে পতিত হত। (সহীহ মুসলিম-২৫৫০)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

আপনি যদি ফরয নামাযে থাকেন, এবতাবস্থায় যদি আপনার মা-বাবা আপনাকে ডাকেন, তাহলে আপনি নামায ভঙ্গ করে তাঁদের ডাকে সাড়া দিতে পারবেন না। কেননা নামায পূর্ণ করা হল আল্লাহর হক্ব আর মা বাবার ডাকে সাড়া দেয়া, তাদের নাফরমানি না করা, অবাধ্য না হওয়া এসব হল বান্দার হক্ব। সুতরা এক্ষেত্রে আপনাকে আল্লাহর হক্বকেই প্রাধাণ্য দিতে হবে, তাই নামায ভঙ্গ করতে পারবেন না বরং নামাযের রুকুন সমূহে যাতে কোনোপ্রকার ব্যাঘাত না ঘটে সে দিকে লক্ষ্য রেখে যতদ্রুত সম্ভব নামায থেকে ফারিগ হয়ে মা-বাবার খেদমতে হাজির হবেন। কিন্তু যদি আপনার মা-বাবা বা অন্য কেউ কোনো বিপদে পড়ে আপনার কাছে সাহায্যের আবেদন করে তাহলে এক্ষেত্রে আপনি ফরজ নামাজে থাকলেও সেই আবেদনে সাড়া দিতে পারবেন।

আর যদি আপনি নফল বা সুন্নাত নামাযে থাকেন আর এমতাবস্থায় আপনার মা-বাবা আপনাকে ডাক দেন, তাহলে এমতাবস্থায় নামায ভঙ্গ করে মা বাবার ডাকে সাড়া দেওয়া আপনার জন্য বৈধ এমনকি আপনার জন্য সারা দেয়াটা উচিৎও বটে। কেননা মা-বাবার ডাকে সাড়া দেওয়া উত্তম নেকির কাজ আর এই উত্তম নেকীর কাজ অর্থাৎ-মা-বাবার সাথে সৎদ্ব্যবহার করা নফল ইবাদত অপেক্ষাও উত্তম। এজন্য নফল এবাদত যেমনঃ- নফল নামায অপেক্ষাও মা-বাবাকে খুশি করা উত্তম নেকির কাজ।

তবে কোন কোন আলেম বলেন, মায়ের তেমন কোনো প্রয়োজন দেখা দেয়নি, সন্তানের খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য যদি ডাক দেন, সে ক্ষেত্রে নফল সালাত ভঙ্গ করে সাড়া দিতে হবে না। আপনি নফল সালাত শেষ করে মায়ের প্রয়োজন মেটাতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...