ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া
বারাকাতুহু
বিসমিল্লাহির রহমানির
রহিম
بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
https://ifatwa.info/6048/ নং
ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,
শরীয়তের বিধান হলো যদি সরকারের পক্ষ থেকে
নিষেধাজ্ঞা না থাকে,তাহলে প্রয়োজনের ভিত্তিতে
বনাঞ্চলে পশুপাখি শিকার করা যাবে। তবে অযথাই এসব প্রানী হত্যা করা জায়েজ নেই।
এই
প্রানী গুলোর মধ্য থেকে যাদেরকে খাওয়া জায়েয আছে, সেগুলো তো খাবে,ঔষধ ইত্যাদি বানাবে। আর যদি খাওয়া জায়েয না
হয়,তাহলে ঔষধ বানায়তে যদি
চায়,তাহলে দেখতে হবে যে ইহা
ছাড়া সেই রোগের অন্য কোনো হালাল ঔষধ আছে কিনা। যদি অন্য কোনো হালাল ঔষধ
না থাকে,তাহলে সেগুলো ঔষধ বানানো
জায়েজ আছে।
অন্যথায়
জায়েজ নেই।
হালাল
পশুপাখি সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى
عَنْ كُلِّ ذِي نَابٍ مِنَ السِّبَاعِ وَعَنْ كُلِّ ذِي مِخْلَبٍ مِنَ الطَّيْرِ
ইবনে
আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত যে,
রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল প্রকার হিংস্র পশু এবং নখর ধারী পাখি (খেতে) নিষেধ
করেছেন।”
[সহীহ মুসলিম, অধ্যায়: ৩৫/ শিকার ও
জবেহ কৃত জন্তু এবং যে সব পশুর গোশত খাওয়া হালাল]
সুতরাং
যে সব পাখি পাঞ্জা দ্বারা শিকার ধরে খায় তা খাওয়া জায়েজ নয়। যেমন: শকুন, চিল, ঈগল, কাক, বাজ ইত্যাদি।
আর
যে সব পাখী পাঞ্জা দ্বারা শিকার ধরে খায় না তা (জবাই করে) খাওয়া জায়েজ ও হালাল। যেমন:
হাঁস, মুরগি, ময়না, টিয়া, বক, সারস, চড়ুই ইত্যাদি।
এক্ষেত্রে
বন্দুক দ্বারা শিকারের বিষয় স্পষ্ট করছি।
সাধারণত
বন্দুকের বুলেট দুই ধরনের হয়ে থাকে।
১.
এমন বুলেট যা ধারালো বা চোখা নয়। এরকম বুলেট দ্বারা শিকার করা পশু বা পাখি জবেহের আগে
মারা গেলে তা খাওয়া হালাল হবে না।
২.
এমন বুলেট যা ধারালো বা চোখা হয়। এরকম বুলেট দ্বারা বিসমিল্লাহ বলে শিকার করলে তা জবেহের
আগে মারা গেলেও খাওয়া হালাল। কেননা দ্বিতীয় প্রকার বন্দুকের বুলেট তীরের হুকুমে।
হাদীস
শরীফে এসেছেঃ
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ
أَبِي السَّفَرِ عَنْ الشَّعْبِيِّ قَالَ سَمِعْتُ عَدِيَّ بْنَ حَاتِمٍ قَالَ
سَأَلْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْمِعْرَاضِ فَقَالَ إِذَا
أَصَبْتَ بِحَدِّه„ فَكُلْ فَإِذَا أَصَابَ بِعَرْضِه„ فَقَتَلَ فَإِنَّه“ وَقِيذٌ
فَلاَ تَأْكُلْ فَقُلْتُ أُرْسِلُ كَلْبِي قَالَ إِذَا أَرْسَلْتَ كَلْبَكَ
وَسَمَّيْتَ فَكُلْ قُلْتُ فَإِنْ أَكَلَ قَالَ فَلاَ تَأْكُلْ فَإِنَّه“ لَمْ
يُمْسِكْ عَلَيْكَ إِنَّمَا أَمْسَكَ عَلٰى نَفْسِه„ قُلْتُ أُرْسِلُ كَلْبِي
فَأَجِدُ مَعَه“ كَلْبًا آخَرَ قَالَ لاَ تَأْكُلْ فَإِنَّكَ إِنَّمَا سَمَّيْتَ
عَلٰى كَلْبِكَ وَلَمْ تُسَمِّ عَلٰى آخَرَ.
আদী
ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তীরের শিকার সম্পর্কে
জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ যদি তীরের ধারালো অংশ দ্বারা আঘাত করে থাক তাহলে খাও, আর যদি ফলার আঘাত লেগে
থাকে এবং শিকারটি মারা যায়,
তাহলে
খেও না। কেননা,
সেটি
ওয়াকীয বা থেতলে মরার মধ্যে গণ্য। আমি বললামঃ আমি তো শিকারের জন্য কুকুর ছেড়ে দেই।
তিনি উত্তর দিলেনঃ যদি তোমার কুকুরকে তুমি বিসমিল্লাহ পড়ে ছেড়ে থাক, তা হলে খাও। আমি আবার
বললামঃ যদি কুকুরটা কিছু খেয়ে ফেলে? তিনি বললেনঃ তা হলে খেও না, কারণ সে তা তোমার জন্য
ধরে রাখেনি বরং সে ধরেছে নিজের জন্যই। আমি বললামঃ আমি আমার কুকুরকে পাঠিয়ে দেবার জন্য
যদি তার সঙ্গে অন্য কুকুরকেও দেখতে পাই, তখন? তিনি বললেনঃ তাহলে খেও
না। কেননা,
তুমি
তো কেবল তোমার কুকুরের উপর বিসমিল্লাহ বলেছ, অন্য কুকুরের উপর বিসমিল্লাহ বলনি।
(বুখারী শরীফ আধুনিক প্রকাশনী- ৫০৭১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৬৮)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
সাপ
বিষাক্ত ও ক্ষতিকর প্রাণী। হাদিসে সাপ দৃষ্টিগোচর হ’লে মারার জন্য
নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সুতরাং সাধারণভাবে সাপ পালন করা এবং তা দ্বারা খেলা দেখিয়ে অর্থ
উপার্জন করা ফুকাহদের ঐক্যমতে নাজায়েয (আল-আশবাহ ওয়ান নাযায়ের
২৮০ পৃ.,
আল-মাওসূ‘আতুল
ফিক্বহিয়াহ ১৭/২৮০)
বিধায়, আপনার ভাই গুনাহগার হবে না এবং তার দেওয়া
বদদোয়া পতিত হবে না। তবে তার সার্বিক দিক বিবেচনায় সামার্থ্য থাকলে তাকে কিছু টাকা
পয়সা দিয়ে সাহায্য করা উত্তম ছিল।