আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
105 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (24 points)
আস সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকা তুহ্
১) ফরজ নামাজ শেষে দোয়া কবুল হয়,
এখন শেষ বৈঠকে দোয়ায়ে মাসূরা পড়ার পর সালাম ফিরানোর আগে বাংলায় দোয়া করা যাবে? নাকি সালাম ফিরানোর পর মোনাজাতে?

আমি বইয়ে পড়েছিলাম দরুদ পড়ার পরপরই আমাদের সালাত শেষ হয়ে যায় । আর সালাম ফিরানোর আগের সময়ের দোয়া বেশি কবুল হয় ।
এটা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছিলাম ইং শা আল্লহ?


২) পরিষ্কার হাত বা আঙুল অযুর পানিতে ডুবে গেলে, ঐ পানি দিয়ে অযু করা যাবে কিনা?

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

 https://www.ifatwa.info/8646/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ফরজ সালাতের শেষ বৈঠকে তাশাহুদ, দুরুদে ইব্রাহিম, দোয়া মাসুরা পড়ার পড় আরবীতে কুরআনে উল্লেখিত যেকোনো দোয়া পড়া যাবে। এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে মাসনুন দোয়া, কুরআন হাদীসের দোয়া,বা আরবীতে মাসনুন দোয়ার অনুরুপ দোয়া ব্যতিত কোনো দোয়া করা যাবেনা। কোনো দুনিয়াবি দোয়া করা যাবেনা।

শরীয়তের বিধান হলো দুনিয়াবি দোয়া করলে নামাজ ভেঙে যায়। দুনিয়াবি দোয়াঃ যেটা মানুষের কাছে থেকেও পাওয়া যায়, যেমন হে আল্লাহ আমাকে কাপড় দাও, বিবাহ দাও, এক লক্ষ টাকা দাও ইত্যাদি।  (কিতাবুন নাওয়াজেল ৪/১০৫)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন

إِنَّ هَذِهِ الصَّلَاةَ لَا يَصْلُحُ فِيهَا شَيْءٌ مِنْ كَلَامِ النَّاسِ، إِنَّمَا هُوَ التَّسْبِيحُ وَالتَّكْبِيرُ وَقِرَاءَةُ الْقُرْآنِ»

নিশ্চয় এ নামায; এতে মানুষের মুখে প্রচলিত কথা বলা উচিত নয়। নিশ্চয় এটি তাসবীহ, তাকবীর এবং কুরআন তিলাওয়াতের স্থান। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৩৭]

قال العلامۃ التہانوي تحتہ: دل الحدیث علی أنہ لا یجوز في الصلاۃ شيء من کلام الناس، فتفرع علیہ أن الدعاء أیضاً إذا کان یشبہ کلامہم لا یجوز، وہو قول أبي حنیفۃ وأصحابہ وطاؤس وإبراہیم النخعي۔ (کذا في فتح الباري ۲؍۲۶۶، إعلاء السنن ۳؍۱۷۲ رقم: ۸۹۳ دار الکتب العلمیۃ بیروت)

থানবি রহঃ বলেন উক্ত হাদীস দালালত করে যে নামাজের ভিতর দুনিয়াবি কথাবার্তা বলা জায়েজ নেই।সুতরাং দুনিয়াবি দোয়া যেটা মানুষের কথার সাথে সাদৃশ্য রাখে,সেটি বলাও জায়েজ নেই।   

ویفسد ھا التکلم الخ، عمدہ وسہوہ قبل قعودہ قدر التشہد سیان، وسواء کان ناسیا أو نائماً أو جاھلا أو مخطئاً أو مکرھاً ھو المختار۔ (درمختار مع الشامي ۲؍۳۷۰ زکریا، مراقي الفلاح مع الطحطاوي ۱۷۵، بدائع الصنائع ۱؍۵۱۸، شرح الوقایۃ ۱؍۱۶۳، حاشیۃ الطحطاوي ۳۲۱)

সারমর্মঃ ইচ্ছাপূর্বক হোক,বা অনিচ্ছায় হোক,কথা বললে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। 

والدعاء بما یشبہ کلامنا نحو: اللّٰھم ألبسني ثوب کذا أو أطعمني کذا أو أقض دیني أو أرزقني فلانۃ علی الصحیح؛ لأنہ یمکن تحصیلہ من العباد۔ (مراقي الفلاح)

দুনিয়াবি দোয়াঃ যেটা মানুষের কথার সাথে সাদৃশ্য রাখে,যেমন হে আল্লাহ আমাকে উমুক কাপড় দাও,ঐ খাবার দাও,ওই মহিলার সাথে বিবাহ দাও,আমার করজ শোধ করে দাও ইত্যাদি।

وفي الطحطاوي: وذکر في البحر عن المرغیناني ضابطاً: فقال الحاصل أنہ إذا دعا في الصلاۃ بما جاء عن القراٰن أو في الماثور لا تفسد صلا تہ، وإن لم یکن في القراٰن أو الماثور فإن استحال طلبہ من العباد لا یفسد وإلاَّ یفسد۔ (طحطاوي ۱۷۶، درمختار مع الشامي ۲؍۳۷۷ زکریا، شرح الوقایۃ ۱؍۱۶۴، حاشیۃ الطحطاوي ۳۲۱)

সারমর্মঃ কুরআন হাদীসে বর্ণিত দোয়া হলে নামাজের কোনো সমস্যা হবেনা।

কুরআন হাদীসে বর্ণিত দোয়া না হলে যদি সেটি "মানুষের কাছ থেকে চাওয়া সম্ভব হয়" জাতীয় দোয়া হয়, তাহলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। অন্যথায় নামাজ ভেঙ্গে যাবেনা। 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

১. সালাতের শেষ বৈঠকে তাশাহুদ, দুরুদে ইব্রাহিম, দোয়া মাসুরা পড়ার পড় আরবীতে কুরআনে উল্লেখিত যেকোনো দোয়া পড়া যাবে। এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে মাসনুন দোয়া, কুরআন হাদীসের দোয়া বা আরবীতে মাসনুন দোয়ার অনুরুপ দোয়া ব্যতিত কোনো দোয়া করা যাবেনা। ফিক্বহে হানাফিতে বাংলায় দোয়া করা যাবেনা। তবে নফল সালাতে বাংলায় দু'আ সম্পর্কে কোন কোন আলেম রুখসত দিয়ে থাকেন।

আপনি নামাযের বাহিরে বাংলায় দু'আ করবেন, অথবা আপনি আপনার অন্তরে সেই বিশেষ বিষয়কে উপস্থিত রেখে মুজমাল দু'আ যাতে দুনিয়া আখেরাতের সকল প্রকার কল্যাণ রয়েছে,যেমন "রাব্বানা আতিনা ফিদ-দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ" কুরআন-হাদীসে বর্ণিত এমন দু'আ করতে পারবেন।

২. উত্তম হল, ছোট পাত্র কাৎ করে তারপর হাতে পানি ঢেলে উক্ত পানি দ্বারা অজু করা। যদি কেউ পাত্র থেকে হাত প্রবেশ করিয়ে তারপর সেখান থেকে পানি নিয়ে অজু করে, তাহলে অজু হবে।  আরো জানুন: https://ifatwa.info/21472/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...