আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
135 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (34 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ
জীবনের অনেক জটিল একটা মুহূর্তে দাড়িয়ে আছি। বুঝতে পারছিনা কি সিদ্ধান্ত নিবো, কোনটা ঠিক হবে।

আমার বিয়ে হয়েছে এক বছর পার হলো আলহামদুলিল্লাহ।

আমি একটা ভুল করেছিলাম, যেটা আমার স্বামীর কাছে ধরা পড়ে। ধরা পড়ার আগেই সেই ভুলের জন্য অনুতপ্ত ছিলাম। ধরা পড়ার পর বার বার উনার কাছে ক্ষমা চেয়েছি, কান্নাকাটি, পায়ে ধরা কোনোটাই বাদ যায় নি। এবং এখনো পর্যন্ত ক্ষমা চেয়ে ই যাচ্ছি। কিন্তু কোনো কিছুতে কোনো কাজ হচ্ছে না। এইসব নিয়ে তিনি উনার পরিবার এবং আমার পরিবারের সবাইকেই বিশ্লেষণ করে এমন ভাবে বুঝিয়েছে যেনো কত বড় অপরাধ করে ফেলেছি, কিন্তু কি করেছি সেটা বলে নাই। এখন সবাই কি কি ভাবছে আল্লাহ্ ভালো জানেন।

স্বামীর আচার আচরণে আমি এখন ভুলেই গেছি আমার যে বিয়ে হয়েছে বা আমার স্বামী আছে! আমার ভুল টা করার আগেও উনার মধ্যে আমার জন্য ভালোবাসা দেখি নাই, সকালে খেয়ে বের হয় তারপর আবার দুপুরে খেয়ে আবার বের হয় রাত ৯/১০ টায় ফিরে। একরাত খেলা দেখার জন্য সারারাত বাহিরেই ছিলো ফজরের পর ঘরে ফিরে। (ঢাকায় থাকে পড়ার জন্য, এখনো ছাত্র)।। আর এখন তো তিনি কাজের মেয়ের মতো ব্যাবহার করে। স্পষ্ট বলে দিয়েছে আমাকে আর চায় না, আমার থেকে কোনো সন্তান ও চায় না। আমার জন্য নাকি উনার জীবন জাহান্নাম হয়ে গেছে, আরো অনেক কিছুই শুনতে হয়েছে,শুধু ছাড়তে চায়। আর তার পরিবারের সদস্য রা ও প্রচুর খারাপ ব্যাবহার করে (স্বামীর ৬ বোন, ৪ জনের বিয়ে হয়েছে। সবাই বেশিরভাগ বাপের বাড়িতেই থাকে, আর ৪ নাম্বার জন এখনো বিয়ের পর ১০ দিনের জন্য বেড়াতে গিয়েছেন শ্বশুর বাড়ি, উনার বিয়ে হয়েছিলো আমার বিয়ের ২ মাস আগে)। ৬ বোন মা মিলে সারাক্ষণ এটা সেটা নিয়ে খোটা দেয়া এবং খাওয়ার খোটা ও। এগুলা শুরু থেকেই করে আসছে। দিন দিন বাড়ছে। উঠতে বসতে কথা শোনায় সবাই, সামান্য সামান্য বিষয় নিয়ে।

এখন স্বামীর কাছে এবং ওই পরিবারের কোথাও আমি এতটুকু শান্তি খুঁজে পাই না। জাহান্নামের মতো লাগে। ।

স্বামীকে বলেছিলাম যেহেতু আমাকে চায় না, তো আমি বাবার বাড়ি থেকে হেফজ টা কমপ্লিট করি। কিন্তু তিনি সেটাতেও নারাজ।

"আমাকে আর চায় না" এই কথা টা ৩-৪ বার বলেছে মুখে, আবার মেসেজ এ ও বলেছেন ২ বার হয়ত।'ছেড়ে দিবো ' এটা বলেছে অনেকবার। আমি বললাম, "আপনাকে ছাড়া থাকবো কিভাবে।" উনি আমাকে বলে, " উনার থেকে ভালো একজন কে নিয়ে সুখে থাকবো"।

উনি বলে আর কোনো কিছু করেই আমি উনার মন গলাতে পারবো না, আমাকে চায় না এটা ১০০% শিউর করে বলেছে।Kazi Anika:

'ছেড়ে দিবো ' এটা বলেছে অনেকবার। আমি বললাম, "আপনাকে ছাড়া থাকবো কিভাবে।" উনি আমাকে বলে, " উনার থেকে ভালো একজন কে নিয়ে সুখে থাকবো"।

উনি বলে আর কোনো কিছু করেই আমি উনার মন গলাতে পারবো না, আমাকে চায় না এটা ১০০% শিউর করে বলেছে।

আমি বলি ছাড়ছেন না কেনো। উনি বলে, আমার পরিবারের কাছে কারণ উপস্থাপন করতে পারছে না এইজন্য।

আমাকে ঐখানে রাখলেই ওদের লাভ, আমাকে একটা কাজের মেয়ের মতোই ওরা ওখানে রেখেছে। কিন্তু নিজের শারীরিক অবস্থা যদি ভালো হতো এটাও করতে পারতাম (কোমর, ঘাড় থেকে পিঠের শেষ ভাগ পর্যন্ত প্রচুর ব্যাথা করে প্রতিদিন) সারাদিন এই ব্যাথা নিয়ে কাজ করার পর রাতে যখন বিছানায় যাই , ব্যাথায় সারারাত ছটফট করি। এমন ও অনেক রাত গিয়েছে যে সারারাত ব্যাথায় কান্না করেছিলাম, ঘুম হয়নি। অনেক ডক্টর ও দেখিয়েছে আমার আম্মু আব্বু। কিন্তু কাজ হচ্ছে না।

শ্বশুর বাড়িতে আমি আর যেতে চাই না একদিন এর জন্য ও।

এখন আপাতত বাবার বাসায় আছি। স্বামী আমাকে আর কোনো ভাবেই চায় না, কোনো বাচ্চা চায় না (এইসব যেনো কখনো না শুনে এভাবে কঠোর ভাবে বলেছে)।

এগুলোর জন্য কিছু হবে না? তাকে কল দিলেও রিসিভ করে না, সব জায়গায় আমাকে ব্লক করে রেখেছে, অন্য কোথাও থেকে মেসেজ দিলে সেটা দেখে আর কিছু বলে না।

এই মুহূর্তে কি করা উচিত আমার?

এক বোনের প্রশ্ন

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
ﺫﻫﺐ ﻓﻘﻬﺎﺀ ﺍﻟﺤﻨﻔﻴّﺔ ﻭﺍﻟﺤﻨﺎﺑﻠﺔ ﺇﻟﻰ ﺃﻥ ﺍﻟﻄﻼﻕ ﺑﻼ ﺳﺒﺐ ﻣﺤﺮّﻡٌ ﺷﺮﻋﺎً ﻭﻳﺄﺛﻢ ﻓﺎﻋﻠﻪ، ﻭﺫﻟﻚ ﻟﻘﻮﻟﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ( ﻟﻌﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﻛﻞ ﺫﻭﺍﻕ، ﻣﻄﻼﻕ ) ﻭﻷﻥ ﻓﻲ ﺍﻟﻄﻼﻕ ﻛﻔﺮﺍً ﻟﻨﻌﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﺳﺒﺤﺎﻧﻪ ﻭﺗﻌﺎﻟﻰ ، ﺣﻴﺚ ﺇﻥّ ﺍﻟﺰﻭﺍﺝ ﻧﻌﻤﺔ ﻣﻦ ﻧﻌﻢ ﺍﻟﻠﻪ، ﻭﺍﻟﻄﻼﻕ ﺑﻼ ﺳﺒﺐٍ ﻛﻔﺮٌ ﻟﻨﻌﻤﺔ ﺍﻟﺰﻭﺍﺝ؛ ﻭﻛﻔﺮﺍﻥ ﺍﻟﻨﻌﻤﺔ ﺣﺮﺍﻡ، ﻓﻼ ﻳﺤﻞّ ﺍﻟﻄﻼﻕ ﺇﻻ ﻟﻀﺮﻭﺭﺓ .
فقه السنة (الطبعة الثالثة)، بيروت: دار الكتاب العربي، صفحة 242، جزء 2
ভাবার্থ-হানাফি এবং হাম্বলী ফুকাহায়ে কেরামগণ মনে করেন যে,বিনা কারণে তালাক প্রদাণ শরীয়তের দৃষ্টিকোণে হারাম।এবং তালাক প্রদাণকারী গোনাহগার। কেননা রাসূলুল্লাহ সাঃ আমভাবে বলেছেন,আল্লাহ তা'আলা প্রত্যেক স্বাদ আস্বাদনকারীদের উপর লা'নত প্রদাণ করেন।কেননা তালাক প্রদাণ দ্বারা আল্লাহ তা'আলা র নিয়ামতকে অস্বীকার করা হয়। বিবাহ আল্লাহর নিয়ামত সমূহের মধ্যে অন্যতম একটি নিয়ামত।আর বিনা কারণে তালাক প্রদাণ মানে বিবাহ নামক নিয়ামতকে পরিত্যাগ, অস্বীকার এবং অবহেলা করা। আর নিয়ামতকে অস্বীকার বা পরিত্যাগ করা হারাম।সুতরাং প্রয়োজন ব্যতীত তালাক হালাল হবে না।(ফেকহুস সুন্নাহ-২/২৪২) এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/468


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বিনা কারণে তালাক দেয়ার কারণে স্বামী অবশ্যই গেনাহগার হবে। স্ত্রীর প্রতি স্বামী ও স্বামীর পরিবারের এমন মনোভাব ও ব্যবহারের জন্য পরকালে অবশ্যই জবাবদিহিতা করতে হবে। যেহেতু স্বামী ঐ নারীকে স্ত্রী হিসেবে আর চায় না, তাই তার কাছ থেকে তালাক নেয়াই সমুচিত হবে। আল্লাহর জমিন অনেক প্রশস্ত। একটা বিহিত ব্যবস্থা অবশ্যই হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...