وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نَکَحۡتُمُ الۡمُؤۡمِنٰتِ ثُمَّ طَلَّقۡتُمُوۡہُنَّ مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ تَمَسُّوۡہُنَّ فَمَا لَکُمۡ عَلَیۡہِنَّ مِنۡ عِدَّۃٍ تَعۡتَدُّوۡنَہَا ۚ فَمَتِّعُوۡہُنَّ وَ سَرِّحُوۡہُنَّ سَرَاحًا جَمِیۡلًا ﴿۴۹﴾
হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা মুমিন নারীদেরকে বিয়ে করবে, তারপর তাদেরকে স্পর্শ করার আগে তালাক দিবে, তখন তোমাদের জন্য তাদের পালনীয় কোন ইদ্দত নেই যা তোমরা গুণবে। সুতরাং তোমরা তাদেরকে কিছু সামগ্ৰী দেবে এবং সৌজন্যের সাথে তাদেরকে বিদায় করবে।
(সুরা আহযাব ৪৯)
إذا طلق الرجل امرأته ثلاثا قبل الدخول بها وقعن عليها فإن فرق الطلاق بانت بالأولى ولم تقع الثانية والثالثة
যদি কেউ তার স্ত্রীকে সহবাসের পূর্বে তিন তালাক দিয়ে দেয়,তাহলে তিন তালাকই তার উপর পতিত হবে।আর যদি বিচ্ছিন্ন ভাবে এক এক করে তিন তালাক দেয়,তাহলে প্রথম তালাক দ্বারাই স্ত্রী বায়েন হয়ে যাবে।দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তালাক তার উপর পতিত হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৩)
কেহ যদি তার স্ত্রীকে সহবাসের পূর্বে খালওয়াতে সহীহাহ এর পরে এক বাক্যে নয়,বরং ভিন্ন ভিন্ন শব্দে তিন তালাক দিলে (যেমন তালাক,তালাক,তালাক বা এক তালাক,দুই তালাক,তিন তালাক)
ফুকাহায়ে কেরামগন বলেছেন যে এক্ষেত্রে সতর্কতামূলক তিন তালাক ধরে নিবে, সুতরাং উক্ত ব্যাক্তির জন্য সেই মহিলাকে শরয়ী হালালাহ ব্যাতিত বিবাহ করা উচিত নয়।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
روى البيهقي في سننه عن سعيد بن المسيب أن عمر بن الخطاب رضى الله عنه (قضى في المرأة يتزوجها الرجل: أنه إذا أرخيت الستور فقد وجب الصداق) .
সারমর্মঃ
হযরত ওমর রাঃ এক মহিলা যাকে কোনো পুরুষ বিবাহ করেছিলো, ব্যাপারে ফায়সালা দিয়েছিলেন,
যখন তুমি সতর ছেড়ে দিয়েছিলে (খুলেছিলে) তখনই মোহর ওয়াজিব হয়েছে।
وعن الأحنف بن قيس أن عمر وعليا رضى الله عنهما قالا : (إذا أغلق بابا ، وأرخى سترا: فلها الصداق كاملا ، وعليها العدة) . قال الألباني في "إرواء الغليل" (1937) : "رجاله ثقات" .
সারমর্মঃ
যখন কেহ দরজা বন্ধ করে,সতর ছেড়ে দেয় (খুলে) তার জন্য পূর্ণ মোহর দিতে হবে।
وروى ابن المنذر في الأوسط (7273) عن الوليد بن أبي مالك قال: جمع عمر رضي الله عنه نفرا من أصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم فيهم معاذ بن جبل، فأجمع رأيهم: أنه إذا أغلق بابا، أو أرخى سترا، فقد وجب المهر.
সারমর্মঃ
যখন কেহ দরজা বন্ধ করে,সতর ছেড়ে দেয় (খুলে) তার জন্য মোহর ওয়াজিব হবে।
ফাতওয়ার কিতাব গুলোতে আছেঃ-
قوله: وكذا في وقوع طلاق بائن آخر إلخ) في البزازية: والمختار أنه يقع عليها طلاق آخر في عدة الخلوة، وقيل: لا اهـ وفي الذخيرة: وأما وقوع طلاق آخر في هذه العدة، فقدقيل: لايقع، وقيل: يقع، وهو أقرب إلى الصواب؛ لأن الأحكام لما اختلفت يجب القول بالوقوع احتياطاً، ثم هذا الطلاق يكون رجعياً أو بائناً ذكر شيخ الإسلام أنه يكون بائناً اهـ ومثله في الوهبانية وشرحها".
সারমর্মঃ
খালওয়াতে সহীহাহ এর পর ইদ্দতের মধ্যে আরেকটি তালাক প্রদান করলে সেটি পতিত হবে কিনা,সেই ব্যাপারে মতবিরোধ রয়েছে।
কেহ কেহ বলেছেন যে এই তালাক পতিত হবেনা।
কেহ কেহ বলেছেন যে তালাক পতিত হবে।
এটিই সঠিকতার বেশি নিকটতম মত।
কেননা শরয়ী আহকাম সংক্রান্ত যদি মতবিরোধ হয়,সেক্ষেত্রে সতর্কতামূলক পতিত হওয়ার হুকুমই ওয়াজিব হয়।
ফাতাওয়ায়ে শামী ৩/১১৯
বিস্তারিত জানুনঃ-
খালওয়াতে সহীহাহ বলা হয়,এমন নির্জন বাস বা এমন কক্ষে অবস্থান করা,যেখানে সহবাস হওয়া থেকে কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকেনা।
,
আরো জানুনঃ
খালওয়াতে ফাসেদাহ হলো,এমন নির্জন বাস যেখানে সহবাস হওয়া থেকে কোনো প্রতিবন্ধকতা আছে।
এর জন্য মূলত তালাক হয়না।
এক্ষেত্রে স্বামী যদি তালাক দেয়,তবেই তালাক হয়।
স্বামী যদি খালওয়াতে সহীহাহ এর পর তালাক দেয়,তাহলে যে কয় তালাক দিবে,সব তালাকই পতিত হবে।
আর স্বামী যদি সহবাস বা খালওয়াতে সহীহাহ এর আগের স্ত্রীকে তালাক দেয়,সেক্ষেত্রে এক বাক্যে তিন তালাক দিলে তিন তালাকই পতিত হবে।
একাধিক বাক্যে তিন তালাক দিলে শুধু প্রথমবারের তালাকই পতিত হবে। পরবর্তী তালাক গুলি পতিত হবেনা।
খালওয়াতে সহীহাহ ও খালওয়াতে ফাসেদাহ এগুলো তো তালাকের কোনো শব্দ নয়,এগুলোর দরুন কোনো তালাক হয়না।
স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তালাকের স্পষ্ট বাক্য বা তালাকের নিয়তে কেনায়া বাক্য বললে তবেই তালাক হবে।
বিস্তারিত জানার জন্য নিকটতম কোনো দারুল ইফতায় স্বশরীরে যোগাযোগ করার পরামর্শ রইলো।