ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُم وَرَحْمَةُ ٱللَّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ
ওস্তাদ,
আমি এডমিশন পরীক্ষার্থী। মেডিকেল কোচিং এ মা বাবা ভর্তি করে দেয় ২০০০০ টাকা দিয়ে। কিন্তু আমার মেডিকেলে পড়ার ইচ্ছে বা আত্মবিশ্বাস আগে থেকেও ছিলোনা। আলহামদুলিল্লাহ আমার রেজাল্ট একটু খারাপ আসে যে আমি মেডিকেলে পরীক্ষা দিতে পারবোনা। পরে মা বাবা আবার ১৬০০০ টাকা দিয়ে ভার্সিটি কোচিং এ ভর্তি করে দেন। আলহামদুলিল্লাহ আমার পরিবারের অবস্থা ভালো। মা শা আল্লাহ।
আমি অনেকদিন চেষ্টা করলাম,,কিন্তা অনলাইনে আমার কোরআন সুন্নাহর ইলম অর্জন কিছুই হচ্ছেনা‎। বরং আমি গুনাহ করতে করতে দ্বীন থেকে ছিটকে যাচ্ছি। গুনাহকে স্বাভাবিক মনে হচ্ছে।
মা বাবার অসন্তোষের ভয়ে যদিও পড়ছি একাডেমির পড়া, কিন্তু আমি বার বার এখান থেকেও ছিটকে যাচ্ছি, গুনাহের জন্য।
আর এই চিন্তা আমায় শেষ করে দিচ্ছে যে আমার ছেলেমেয়েদের আমি কি শিখাবো পরবর্তীতে। আমি তো চাকরি করবোনা এটা জানে মা বাবা, এই পড়াটা পড়ে তাহলে আমি আর কি করবো? ভার্সিটিতে পড়ে তারপর আর কি করবো? আমার ছেলেমেয়েদের দ্বীন শিখাবো নাকি আমি নিজে শিখবো?
তারা কিছুতেই বুঝতেছেনা যে তারা বিয়ে দেওয়ার পর আমাকেই সব দায়িত্ব নিতে হবে ছেলে মেয়ের শিক্ষার, আমি কিছু না জানলে তাদের কি শিখাবো, আর আমি মুর্খ থাকলে পরিবারের শেকড়ই দূর্বল হবে,তাহলে বাকিরা তো আরও দূর্বল হবে।
আমার অনলাইনে ইলম অর্জন কিচ্ছু হচ্ছে না। আমার বাসার আশেপাশে ভালো কোনো মাদরাসাও নেই, এমনকি আমাদের মতো মেয়েদের পড়ার ব্যবস্থাও নেই, আমি কিভাবে মা বাবাকে বুঝাবো যে আমার সময়গুলো নষ্ট হচ্ছে। আমি গুনাহে তলিয়ে যাচ্ছি।
তারা ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে আমাকে, সরাসরি মানা করে না মারাসায় পড়তে আবার ইমোশনালি বুঝিয়ে দেয় যে তারা এমন চাইছে না।
তারা বুঝতে পারছে না আমার, আলটিমেট, আমারই ক্ষতি করতেছেন তারা। আমার হিসেব শেষদিন আল্লাহ নিবেন....কিন্তু এই যে অন্তরে ভালো জিনিসের আগ্রহ , খারাপ কাজ করে অনুতাপের অনুভুতি চলে যাচ্ছে, এর কারণ যে এমন গাফেল জীবনযাত্রা যার জন্য দায়ী এমন পরিবেশ। এটা কিভাবে বুঝাবো??? আমি ঠিক না হলে আমার ছেলেই বা মুজাহি-দ হবে কিভাবে? আমার মেয়ে ই বা মুজা-হিদের মা হবে কিভাবে? আমি চারিদিকে আঁধার দেখছি।
আইওএমের অফলাইনে আবাসিক মাদরাসায় ভর্তি হতে চাইলেও আমি বলতে সাহস পাচ্ছি না। কারণ, কোচিং এ এতোগুলো টাকা দিয়েছে। কিন্তু,ভার্সিটিতে পড়ার সময়ও যদি এমন হয়,তখন আরও টাকার লস। তার চেয়েও বড় কারণ একবার ইন্টার পরীক্ষার আগমূহুর্তে বললেও মা অনেক ভেঙে পরে,অসুস্থ হয়ে যায়, আমায় কেঁদে কেঁদে বলে অন্তত ইন্টার দে। এখন দেখি আবার বলে একটা পাবলিক ভার্সিটিতে চান্স পা। তাদের চাওয়ার শেষ নেই। আল্লাহ! মাঝখান থেকে আমি শেষ হয়ে যাচ্ছি। কোন পাবলিকের আশা করছেন তারা যেখানে গেলে আমি যেদিকে তাকাই সেদিকেই ফিতনায় পরি আর বিয়ের অভাব বোধ করি। অন্যদিকে মুখ ফুটে একদিন সাহস করে মাকে বিয়ের কথা বলি চরিত্র রক্ষার জন্য, সে মাথাই ঘামায় না। একটা মেয়ে কতটা খারাপ অবস্থায় থাকলে লজ্জাকে বলি দিয়ে মাকে বিয়ের কথা বলে। তারা চোখ থাকলেও কিছু দেখে না। বিবেক থাকতে তা কাজে লাগায়না।
মানুষের কাছে এটা বলা কি খুবই জরুরী যে'আমার মেয়ে অমুকের মতো ওই ভার্সিটিতে পড়ে বা, আমার মেয়েও এতো টাকা আয় করে বা আমার মেয়েও ডাক্তার।'
নাকি আমি চাকরি করবোনা কোনোভাবেই এটা জেনেও বার বার ইমোশনালি বলা যে, ' তোর ভাই আমাদের দেখবেনা জানি, আমাদের তুই খাওয়াবি' অথচ আমার ভাই এমন কিছু বলেনি এবং আমার বাবা আয় করে, শুধুমাত্র বউ শাশুড়ির ছেলের সমস্যার জন্য এসব কথা হয়,,,,। সবচেয়ে বড় কথা রিজিকের মালিক আল্লাহ।
অগোছালো লেখার জন্য মাফ করবেন। ভুলভাল কিছু বললে মাফ করবেন ওস্তাদ। উপরের অনেক কথা বলার জন্য খুবই দঃখিত। আমায় ক্ষমা করবেন ওস্তাদ। কিন্তু আমি নিরুপায়।
১/ পড়ার ব্যপারে আমি কি করতে পারি ?
২/ বাবা মা কে আমি কিভাবে বুঝাতে পারি?
২/মা বাবার এসব কথার জন্য আমি তাদের বলে দেই মাঝেমাঝে যে আমি বিয়ের আগে বলে বিয়ে করবো যে আমার মা বাবা আমার সাথে থাকবে। এটা কি ভুল হবে?
৩/কারণ, রিজিকের মালিক তো আল্লাহ, তিনি আমার বাবামার রিজিক যদি ভাইয়ের রোজগারে দিতে পারেন, স্বামীর রোজকারেও দিতে পারেন। এটা আমার বিশ্বাস। এটা কি ভুল?