আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
180 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (9 points)
আমি এবং আমার ক্লাসমেট পরস্পরকে ভালোবাসি। ইসলামে অবৈধ প্রেম-ভালোবাসার ভয়াবহতা জানার পর আমরা দুজনই পরিবারকে আমাদের বিয়ের ব্যাপারটা বোঝাতে সক্ষম হই । কিন্তু মেয়ের পরিবার চাচ্ছে আরও এক বছর পর বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে । কিন্তু আমরা দীর্ঘক্ষণ নিজেদের মধ্যে কথা বলে ফেলছি যা আমাদের মনে বিয়ের বারাকা নষ্ট হওয়া এবং গুনাহের ভয় সৃষ্টি করছে । এমতাবস্থায় আমরা দুজনই মানসিক অশান্তিতে আছি এবং কাউকে না জানিয়ে বিয়ে করে রাখতে চাচ্ছি । আমরা যদি এখন গোপনে  বিয়ে করে রাখি এবং পরে আবার সবকিছু পারিবারিকভাবে সম্পন্ন হয় তাহলে এই ব্যাপারটা কী জায়েজ হবে ?

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।

জবাব,

https://ifatwa.info/65633/  নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

শরীয়তের বিধান হলো যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক।

তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রীকে বিবাহ করে, যার কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।

রাসুল সাঃ কুফু মিলাইতে বলেছেনঃ

وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)! (সহীহ বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)

কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/4541/

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ؛ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «الْأَيِّمُ أَحَقُّ بِنَفْسِهَا مِنْ وَلِيِّهَا.

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মেয়ে তার ব্যক্তিগত বিষয়ে অভিভাবকের চেয়ে অধিক হকদার। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৮৮৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪২১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৮, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২২৩৪, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১০৮, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৩২৬০, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪০৮৪, সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং-৩৫৭৬}

আরো জানুনঃ

https://ifatwa.info/4801/

https://ifatwa.info/1525/

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!

আমরা কখনো মাতাপিতার অগোচরে বিয়ের পরামর্শ দেবো না। বরং সর্বদাই বলে থাকি যে, মাতাপিতাকে সাথে নিয়েই বিয়ে করুন। যেভাবে মাতাপিতার অগোচরে বিয়ে করা সন্তানের জন্য উচিৎ নয়, ঠিক তেমনি সন্তানের পছন্দ অপছন্দের প্রতি খেয়াল রাখা অত্যান্ত জরুরী।

প্রশ্নের বিবরণমতে যেহেতু পরিবার রাজি, কিন্তু মেয়ের পরিবার কিছুটা অপেক্ষা করতে চাচ্ছে, তাই পাত্র-পাত্রীর ধর্য্য সহকারে অপেক্ষা করাই উত্তম। অথবা নিজ পরিবারবর্গকে বুঝিয়ে শুনিয়ে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করে সংক্ষেপে বিয়ের আয়োজন করে নেয়াই শ্রেয়। পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ে করলে যদিও বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যায়, তবে এমনটা কল্যাণকর হবে না। কারণ, আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতার আলোকে দেখেছি যে, এমন ভাবে লুকিয়ে বিয়ে করার পরে বিবাহ বিচ্ছেদের মত অনাকাঙ্খিত অনেক ঘটনা ঘটে। বিধায়, এজাতীয় সিদ্ধান্তের পূর্বে আবেগ ও বাস্তবতা উভয়টি সামনে রাখা উচিত।

তবে আপনারা উভয়ে যদি প্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সাক্ষ্যির উপস্থিতিতে বিয়ের প্রস্তাব ও প্রস্তাব গ্রহণ সম্পন্ন করেন, তাহলে আপনাদের বিয়ে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক শুদ্ধ হয়ে যাবে। যদিও আপনাদের পরিবার কিছুই না জানে বা রাজি না থাকে। কিংবা তারা অনুমতি নাও দিয়ে থাকে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...