بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
https://ifatwa.info/4581/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মির্যা গোলাম
আহমাদ কাদিয়ানীর আক্বিদায় বিশ্বাসীরা সমস্ত মুসলমানদের ঐক্যমতে কাফের। সুতরাং কাদিয়ানী
কাফেরদের পণ্য ক্রয়ের বিধান হল, যদি বাজারে এছাড়া আর কোন সমমানের পণ্য না থাকে, তাহলে অপারগ
অবস্থায় তাদের জায়েজ পণ্য ক্রয় করা জায়েজ আছে। কিন্তু যদি সমমানের পণ্য বাজারে থাকে, তাহলে তাদের
প্রোডাক্টকৃত পণ্য ক্রয় থেকে বিরত থাকা উচিত।
ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছেঃ
لَا بَأْسَ بِأَنْ يَكُونَ بَيْنَ الْمُسْلِمِ
وَالذِّمِّيِّ مُعَامَلَةٌ إذَا كَانَ مِمَّا لَا بُدَّ مِنْهُ (الفتاوى الهندية،
كتاب الكراهية، الباب الرابع عشر فى اهل الذمة والاحكام-5/348
যদি সমমানের পণ্য বাজারে না থাকে,তাহলে কাফেরের
পন্য ক্রয় করতে কোনো সমস্যা নেই।
প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে যে
"আমরা যে টাকা দিয়ে ওদের পণ্য কিনব, তার লভ্যংশ থেকে ওরা ১৬ ভাগ করে ১ ভাগ
ব্যয় করবে কাদিয়ানী ধর্ম প্রচারের জন্য। এই টাকায় ধর্মান্তরিত হবে কিছু মুসলিম
ভাই ও বোন। যারা ধর্মের ব্যাপারে একেবারেই অজ্ঞ। এসব যদি আমরা অন্যায় ভেবে থাকি, একজন মুসলিম
হিসেবে নিজ নিজ স্থান থেকে প্রতিবাদ করা ঈমানের নুন্যতম দাবী।
একজন মুসলিম কোন অন্যায় দেখলে সবার আগে হাত দিয়ে প্রতিরোধ করবে, না পারলে মুখ
দিয়ে না পারলে মন থেকে অন্যায়কে ঘৃণা করবে। হাদিসে বর্ণিত অন্যায়ের প্রতিবাদের এই সুন্দর
সংজ্ঞায়ন আমাদের বাস্তব জীবনে কাজে লাগাতে হবে।
পণ্য বয়কট সেই উপায় যার মাধ্যমে আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে
পারি। যেহেতু
তাদের পন্য ক্রয় করলে তাদেরকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করা হয়,এবং শক্তিশালী
অর্থনীতিকে কাজে লাগিয়ে তারা তাদের কার্যক্রম আরো বাড়িয়ে দিতে পারে, কাজেই এসব দেশের
পণ্য ক্রয় করা,এবং
এসব কোম্পানিতে চাকুরী করা থেকে আমাদের অবশ্যই বিরত থাকা চাই। তাদের পন্য
ক্রয় করে তাদেরকে সহযোগিতা করা যাবেনা।
আল্লাহ তায়ালা বলেন
وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ
وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ
اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢]
সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের
ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা।
{সূরা
মায়িদা-২}
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ،
حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ
رَجَاءٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، ح وَعَنْ قَيْسِ بْنِ
مُسْلِمٍ، عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ
أَخْرَجَ مَرْوَانُ الْمِنْبَرَ فِي يَوْمِ عِيدٍ فَبَدَأَ بِالْخُطْبَةِ قَبْلَ
الصَّلَاةِ فَقَامَ رَجُلٌ فَقَالَ يَا مَرْوَانُ خَالَفْتَ السُّنَّةَ أَخْرَجْتَ
الْمِنْبَرَ فِي يَوْمِ عِيدٍ وَلَمْ يَكُنْ يُخْرَجُ فِيهِ وَبَدَأْتَ
بِالْخُطْبَةِ قَبْلَ الصَّلَاةِ . فَقَالَ أَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ مَنْ هَذَا
قَالُوا فُلَانُ بْنُ فُلَانٍ . فَقَالَ أَمَّا هَذَا فَقَدْ قَضَى مَا عَلَيْهِ
سَمِعْتُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَنْ رَأَى مُنْكَرًا
فَاسْتَطَاعَ أَنْ يُغَيِّرَهُ بِيَدِهِ فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ فَإِنْ لَمْ
يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهِ وَذَلِكَ أَضْعَفُ
الإِيمَانِ "
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা ‘ঈদের
দিন মারওয়ান ঈদের মাঠে মিম্বার স্থাপন করে সলাতের পূর্বেই খুত্ববাহ শুরু করায় জনৈক
ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলেন,
হে মারওয়ান! তুমি সুন্নাত বিরোধী কাজ করলে। তুমি ‘ঈদের দিন বাইরে মিম্বার এনেছো
এবং সলাতের পূর্বেই খুত্ববাহ শুরু করেছো। অথচ ইতিপূর্বে (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম ও খুলাফায়ি রাশিদীনের যুগে) কখনো এমনটি করা হয়নি। আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ)
জিজ্ঞেস করলেন, লোকটি
কে? লোকজন
বললো, অমুকের
পুত্র অমুক। তিনি বললেন,
সে তার দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করেছে। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
কে বলতে শুনেছিঃ কেউ কোন গর্হিত (শারী‘আত বিরোধী) কাজ সংঘটিত হতে দেখলে তাকে হাত দিয়ে
প্রতিরোধ করবে। এরূপ করতে অক্ষম হলে তা কথার দ্বারা প্রতিহত করবে। যদি এতেও অক্ষম হয়
তাহলে সে তা অন্তরে ঘৃণা করবে (বা তা দূর করার উপায় অন্বেষনে চিন্তা-ভাবনা করবে)। তবে
এটি হচ্ছে দুর্বলতম ঈমানের পরিচায়ক। (মুসলিম , ইবনু মাজাহ হাঃ ১২৭৫, হাঃ
৪০১৩), আহমাদ
(৩/১০)
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ،
وَهَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، قَالَا: حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ
الْأَعْمَشِ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ رَجَاءٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ،
وَعَنْ قَيْسِ بْنِ مُسْلِمٍ، عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ
الْخُدْرِيِّ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
يَقُولُ: مَنْ رَأَى مُنْكَرًا فَاسْتَطَاعَ أَنْ يُغَيِّرَهُ بِيَدِهِ
فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ - وَقَطَعَ هَنَّادٌ بَقِيَّةَ الْحَدِيثِ، وَفَّاهُ
ابْنُ الْعَلَاءِ: - فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ، فَإِنْ لَمْ
يَسْتَطِعْ بِلِسَانِهِ فَبِقَلْبِهِ، وَذَلِكَ أَضْعَفُ الْإِيمَانِ
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ কেউ কোনো অন্যায় হতে দেখলে সে তা হাতের
সাহায্যে দমন করতে সক্ষম হলে তা দ্বারা যেন প্রতিরোধ করে। ‘‘হান্নাদ’’ এ হাদীসের বাকী
অংশ উল্লেখ করেনি। তবে ইবনুল আলা তা পূর্ণ করেছেন। তা হলোঃ যদি হাতের দ্বারা প্রতিরোধ
করতে সক্ষম না হয়, তবে
জিহ্বা দ্বারা আর যদি জিহ্বা দ্বারা প্রতিরোধ করতে সক্ষম না হলে তবে অন্তর দ্বারা, তবে এটা দুর্বল
ঈমানের স্তর।
(আবু দাউদ ৪৩৪০)
একজন মুসলমান হিসেবে বাজারে কোনো মুসলিম কম্পানির পণ্য ক্রয়
করাই উচিৎ। তবে যদি বাজারে মুসলিম কম্পানির
মানসম্মত পণ্য খোজে না পাওয়া যায়, তাহলে অমুসলিম কম্পানির পণ্য ক্রয় করা
যাবে। হ্যা মুসলিম কম্পানির মানসম্মত পণ্য বাজারে থাকা সত্তেও অমুসলিম কম্পানির পণ্য
ক্রয় করা সর্বদা অনুত্তম ও অনুচিত হিসেবেই বিবেচিত হবে।
★প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
১. নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা গিয়েছে যে প্রান এবং আরএফএল এগুলো কাফিয়ানীদের
পণ্য।
একজন মুসলিম কোন অন্যায় দেখলে সবার আগে হাত দিয়ে প্রতিরোধ করবে, না পারলে মুখ
দিয়ে না পারলে মন থেকে অন্যায়কে ঘৃণা করবে। হাদিসে বর্ণিত অন্যায়ের প্রতিবাদের এই সুন্দর
সংজ্ঞায়ন আমাদের বাস্তব জীবনে কাজে লাগাতে হবে। পণ্য বয়কট সেই
উপায় যার মাধ্যমে আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে পারি।
যেহেতু তাদের পন্য ক্রয় করলে ইসলাম বিরোধীদেরকে অর্থনৈতিকভাবে
শক্তিশালী করা হয়, এবং
শক্তিশালী অর্থনীতিকে কাজে লাগিয়ে তারা তাদের কার্যক্রম আরো বাড়িয়ে দিতে পারে, কাজেই এসব দেশের
পণ্য ক্রয় করা
এবং এসব কোম্পানিতে চাকুরী করা থেকে আমাদের অবশ্যই বিরত থাকা চাই। সুতরাং কাদিয়ানীদের
কোম্পানীতে চাকুরী করা সরাসরি হারাম না হলেও উলামায়ে কেরাম তাদের কোম্পানীতে চাকুরী
করতে নিরুৎসাহিত করে থাকে এবং ঈমানী চেতনা ও তাক্বওয়ার দৃষ্টিতে এটি কোন ভাবে কাম্য
নয়।
২. কাদিয়ানী কাফেরদের পণ্য ক্রয়- বিক্রয়ের
বিধান হল, যদি
বাজারে এছাড়া আর কোন সমমানের পণ্য না থাকে, তাহলে অপারগ অবস্থায় তাদের জায়েজ পণ্য
ক্রয়-ব্ক্রিয় করা জায়েজ আছে। কিন্তু যদি সমমানের পণ্য বাজারে থাকে, তাহলে তাদের
প্রোডাক্টসমূহ ক্রয়-বিক্রয় থেকে বিরত
থাকা উচিত। এটিই তাক্বওয়ার দাবী।
বিস্তারিত জানুনঃ https://ifatwa.info/7143/