আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
143 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
আমাদের পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়েছিল। প্রথমদিকে আমার স্বামীর সাথে আমার একদম বনিবনা হতোনা। দিন রাত আমাদের মধ্যে প্রায় ঝগড়া লেগে থাকত। কিন্তু আমার স্বামী কখনোই আমাকে ছাড়তে চাইতোনা। আমরা কেউই তালাক সম্পর্কে কোনো কিছুই জানতাম না। শুধু জানতাম তিনবার তালাক বললে তালাক হয়। বিয়ের পর একদিন ভুলবশত আমার রাগারাগির সমস্যা থাকায় জোড় করার কারনে আমার স্বামী বাধ্য হয়ে মুখে উচ্চারণ না করে শুধু মেসেজ এ এক তালাক লিখেছিল। তখন 5 মাস পর আমার স্বামীর অবস্থা দেখে পরিবার থেকে আমাদের দ্বিতীয়বার বিবাহ নবায়ন করা হয়। অনেক পরে এই দ্বিতীয়বারে একটি খুব বড় ঝগড়া হলো। আমার স্বামী তখন প্রবাসী ছিল। তখন ওইদিন ঝগড়ার সময়ে আমি অতিষ্ঠ হয়ে মাথা গরম করে তাকে ডিভোর্স দেওয়ার জন্য জোড় জবরদস্তি করেছিলাম। আমি এরকম করতে চাইতাম না তবুও এরকম হয়ে যেত। আমার স্বামী কোনো কিছু না বলে সেদিন ফোন কেটে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমি বার বার তাকে বাধ্য করেছিলাম এই বলে যে ফোন কাটার আগে হয় ডিভোর্সের ব্যবস্থা করো নাহলে ভালো হয়ে আমার মতো করে চলো। তখন সে বলল এই শেষবার। আমি বললাম কি শেষবার এই কথা অনেকদিন শুনেছি শেষবার কবে আসবে। দুটির মধ্যে যেকোনো একটা বলো। তখন সে বলল এইবারই শেষবার পরেরবার যদি আর ঝগড়া করো,,,,,,, এইখানে মাঝখানে কি বললো আমি চেঁচামেচির জন্য কিছুই শুনতে পারিনি। আর একদম শেষে শুনেছি বলল শেষ। তখন কিছুদিন এর মধ্যে শর্তযুক্ত তালাকের ব্যাপারে জানতে পেরে ভয় পেয়ে যাই। আমার স্বামী ওইদিন কি বলেছে সেই চিন্তায় একমাস কেটে যায়। বার বার শুধু ভাবতাম সে কি পরেরবার ঝগড়া করলে ডিভোর্স দিবে আর তখন শেষ হবে বলেছে নাকি পরেরবার ঝগড়া করলে শুধু ডিভোর্স শেষ এই কথা বলেছে নাকি ডিভোর্স না বলে আর অন্যকিছু বলে শেষ বলেছে। এই চিন্তায় আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি। দিন রাত এই চিন্তায় মারাত্মক কষ্ট ভোগ করতে থাকি। প্রায় একমাস পর এত মানসিক যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে ওইদিন যে কথাটা শুনতে পাইনি সে উদ্দেশ্য নিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করি‌। প্রশ্নের ধরনটা আমার ঠিক মনে নেই। সেদিনের কথা জিজ্ঞেস করেছি নাকি কখনো বলেছে কি না জিজ্ঞেস করেছি। এতটুকু মনে আছে নিজের আন্দাজে প্রশ্ন বানিয়ে এইভাবে তাকে বললাম তুমি কি পরেরবার যদি আমি থাকতে না চাই বা ঝগড়া করি তাহলে ডিভোর্স এই কথা বলেছ। সে বলল বলেছি তো তুমি আমাকে জোড় জবরদস্তি করে বাধ্য করেছ। এখানে বলে রাখি আমার স্বামীর ঘন ঘন সবকিছু ভুলে যাওয়ার সমস্যা আছে। আর তাকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছি একমাস পর। সে অনেক সময় আগেরদিন ঝগড়া করলে পরের দিন ভুলে যায় এমন অবস্থা। সে কোন সময়ের উত্তর দিল এবং ভুলে গিয়ে অজান্তেই উত্তর দিল, নাকি সে সবসময় বলত ভবিষ্যতে দিবে এই ভেবে উত্তর দিল, নাকি সেদিনের উত্তরটাই একদম নিশ্চিত হয়ে দিল কিছুই বুঝতে পারিনি। তাই আমি তাকে নিয়ত জিজ্ঞেস করলাম তালাকের নিয়ত ছিলো কি না বলল মনে পড়ছেনা। তখন বললাম অন্য সময় তো এইভাবে বলতে কখনো শুনি নাই শুধু সেদিন কি বলেছিলে তা নিয়ে আমার দুশ্চিন্তা হচ্ছে, সে তখন বলল আমি বলেছি তুমি তোমার পথে আমি আমার পথে। ভাবলাম মনে হয় প্রথম উত্তরটি আগেরবারের তালাকের কথা মনে করে ভুল করে বলেছে কারন তখন এইরকম হয়েছিল বা হয়তো অনুমান করে ভুলে গিয়ে বলেছে তাই দ্বিতীয় উত্তরটি মানে কেনায়া শব্দটি হয়তো সেদিন বলেছিল এটাই ধরে নিলাম। কয়েকদিন পর আবার মাথায় চিন্তা ঘুরাঘুরি করল যদি কেনায়া শব্দ বলে থাকে তাহলে নিয়ত কি ছিলো আর সে বলেছি এই উত্তরটি কেন দিলো। এই চিন্তায় কয়েকদিন পরেই তাকে আবার জিজ্ঞেস করলাম তোমার কি মনে হয় আমাকে পরেরবার ঝগড়া করলে তালাক এইভাবে কখনো শর্ত করে বলেছ বলে। সে তখন উত্তর দিল আমার মনে হচ্ছে আমি কখনো এই রকম বলিনি। এখানেও পূর্বের সব ভুলে গিয়েছে। বললাম তাহলে ওইদিন বলেছি তো এই উত্তর দিয়েছিলে কেন সে বলল আমি তখন কি বলেছিলাম কেন বলেছিলাম আমার আর কোনো কিছুই মনে পড়ছেনা‌। আমার মনে হচ্ছে আমি এই কথা বলিনি। বললাম সেদিন যখন জিজ্ঞাসা করছিলাম তখন আরেকটা ও উত্তর বলেছিলে দুটি কথা কি আলাদা আলাদা ছিল আমি সঠিক উত্তর কোনটা ধরে নেব। ওই অন্য কথাটির নিয়ত কি ছিলো সে বললো আমি তোমাকে কখনই তালাক দিতে চাইনি আমার মনে হচ্ছে তাৎক্ষনিক তালাকের নিয়ত ছিলোনা। আমি বললাম তাহলে ধরে নিলাম ডিভোর্সের কথা বলো নাই। তখন কিছুক্ষন পর আবার বলল একবারের জন্যই বলেছিলাম। আমি বললাম মানে কি। সে বলল ভবিষ্যতে বুঝালে তো হবেনা আমি তো আর তালাক দেইনি। তখন বললো আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা আমার মাথা কাজ করতেছে না আমি বিভ্রান্তিতে পড়ে গেছি। আমি তখন বললাম এগুলো কি বলছ বার বার বলেছি, বলিনি এইভাবে অনিশ্চিত উত্তর দিচ্ছো কেন। একেকবার একেক কথা কেন। তখন তাকে আমি বললাম যে শুনো দ্বিতীয় বার আমাদের বিয়ে দোহরানোর পর আমি নিজে কখনো তোমাকে শর্তযুক্ত করে তালাক বলতে শুনি নাই শুধু একদিন কি বলেছিলে শুনতে পাইনি। আমার জানামতে তুমি কখনো বলোনি তাই তুমি নির্দিষ্ট করে একটা উত্তর বলো যেদিন শুনতে পাইনি সেদিন এর উত্তর আমি কোনটি ধরে নেব তোমার মন কোনদিকে বেশি সায় দিচ্ছে । সে বলল আমার মনে হচ্ছে আমি কখনো এইরকম বলিনি এইদিকে মন সায় দিচ্ছে। আর এটাই আমার শেষ উত্তর। বললাম তাহলে ধরে নিলাম আমি যেদিন শুনতে পাইনি সেদিন এই কথা গুলো বলোনি। তাহলে তখন আরেকটা যে কেনায়া শব্দ উত্তর দিয়েছিলে তুমি তোমার পথে আমি আমার পথে এই কথার নিয়ত কি হতে পারে পরেরবার দিবে নাকি দিয়ে ফেলেছিলে। সে বলল আমার মন বেশি ধাবিত হচ্ছে পরে মানে ভবিষ্যতে ঝগড়া করলে তখন দেব এইরকম সিদ্ধান্ত হয়ত নিয়েছিলাম। পরেও তো আমি আর কোনো তালাক দেইনি। আমি তখন মনে মনে ভাবলাম সেতো প্রথম থেকেই বলে এসেছিল আমাকে কখনোই ছেড়ে দিতে চায়নি।

মুহতারাম আমি কি করব। অনিশ্চিত এবং সন্দেহ যুক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছি। প্রায় ৩ টি মাস ধরে আমি মানসিক ভাবে তীব্র যন্ত্রনা পাইতেছি আমার মাথায় ধরে গেছে। আমার স্বামীর সাথে আমার দুরত্ব বেড়ে গেছে আমার এই চিন্তার কারনে। আমি আল্লাহর পাপিষ্ট বান্দী অনেক পাপ করেছি আমার স্বামীকে জোড় জবরদস্তি করে। তাই এই পাপের ফল ভোগ করতেছি মাঝে মাঝে এই চিন্তায় আর মানসিক চাপে মরে যেতে ইচ্ছা করে । আমি উনার সাথে থাকতে চাই আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি আল্লাহর কাছে দিন রাত তওবা করে যাইতেছি। উপরের সমস্ত বিবরন পড়ে আমাকে একটি উত্তর দিন শায়েখ। আমার পক্ষে এইভাবে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে শায়েখ।

1 Answer

0 votes
by (690 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ মুহতারমা/মুহতারাম 
ওয়াসওয়াসা হল এমন এক মানসিক রোগ যা একজন মুসলিমকে বিভ্রান্ত করার জন্য শয়তানের পক্ষ থেকে মনে আসা কুমন্ত্রনার ফাঁদ। এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন কম নয়। কিন্তু এই রোগ সম্পর্কে ধারনা বা ইলমে জ্ঞান না থাকার ফলে একজন সাধারন ব্যক্তি ধীরে ধীরে মানসিক রোগীতে পরিণত করতে পারে। কারণ শুরুতেই যদি এর চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে এটি বাড়তে থাকে।

আমরা আমাদের বিগত সহস্রাধিক প্রশ্ন রিসার্চ করে দেখেছি যে ওসওয়াসা আক্রান্ত ব্যক্তি বিভিন্ন মাসলা মাসায়েল বা ফতোয়ার প্রশ্নের উত্তর ঘাটাঘাটি করে আরও বেশি ওয়াসওয়াসাতে আক্রান্ত হয়ে যায়। এবং প্রশ্নের উত্তর হল একজন ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত রোগীদের রোগ বৃদ্ধির খোরাক। এবং একটা প্রশ্ন উত্তর পাওয়ার পর একজন ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত ব্যক্তি ক্রমাগত একই প্রশ্ন বারবার ঘুরিয়ে পেচিয়ে শতাধিকবার করতে থাকেন। যেটা উনাকে বরং ক্রমাগত অধিকতরও খারাপের দিকে নিয়ে যেতে থাকে। 
 বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে নিচের দেওয়া বাধ্যতামূলক সুস্থ হওয়ার কোর্সটি কমপ্লিট না হওয়া পর্যন্ত কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়া হবে না । 
এবং আমরা আশা করছি এবং আল্লাহর উপরে ভরসা রেখে বলছি যারা নিচের এই কোর্সটি করবেন ইনশাআল্লাহ সুস্থ হয়ে যাবেন। 
আর কোর্সের ভিতরে একটা অংশে আমাদের মুফতি সাহেবদের সাথে সরাসরি জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে প্রশ্ন-উত্তরের ব্যবস্থা থাকবে। 
আল্লাহ আমাদের সমস্ত শারীরিক ও মানসিক রোগ থেকে হেফাজত করুন। 

by
উত্তরটা জানতে পারলে আমার অনেক উপকার হতো।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...