আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
193 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (46 points)
আসসালামুয়ালাইকুম,
ফেসবুকে বা অন্য কিছু ওয়েবসাইটে কিছু অ্যাপ আছে। এগুলো অনেকটা গেমের মত বলা যেতে পারে। এখানে ফেসবুক প্রোফাইল থেকে কিছু তথ্য নিবে যেমন নাম,জেন্ডার,বয়স ইত্যাদি। এরপর স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেকোনো একটা ডেট দিয়ে বলবে ওমুক বছরের, ওমুক মাসের ওমুক তারিখে আপনি মারা যাবেন বা আপনার বিয়ে হবে। এছাড়াও অনেক অ্যাপে আপনার ছবি নিয়ে একটা ছবি সিলেক্ট করে জানাবে আপনার ছেলে/ মেয়ে কেমন হবে। অনেক সময় আপনার জীবনসঙ্গীর নাম কি হবে/ প্রথম অক্ষর কি হবে এইসবও সেখানে দেয়া হয়।  এই বিষয়টা কেউই বিশ্বাস করে না। সবাই এটা মজা হিসেবেই নিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে কোন গুনাহ হবে কিনা? যেহেতু আমি জানি কেও ফাজলামো করে রাশিফল দেখলে বা গনকের কাছে গেলেও তার নামায ৪০ দিন কবুল হয় না সেক্ষেত্রে তো  এর ক্ষেত্রেও একই বিধান প্রযোজ্য কিনা?
১.কেও ফাজলামো করে রাশিফল দেখলে বা গনকের কাছে গেলেও তার নামায ৪০ দিন কবুল হয় না- এটা কি ঠিক?

২.উপরের অ্যাপ গুলোর বর্ননা অনুযায়ী কি এগুলো ব্যবহার করলে গুনাহগার হবে?

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/6485/  নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তাক্বদীর শব্দটির অর্থ নির্ধারণ করা বা অনুমান করা।শারঈ পরিভাষায় তাক্বদীর হল, আল্লাহ কর্তৃক বান্দার ভবিষ্যত নির্ধারণ করা।

তাকদীর বিষয়ক দুয়েকটা আয়াত ও হাদীস  লক্ষণীয়........

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি-থেকে বর্ণিত তিনি বলেন-

ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ اﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ: ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ اﻟﻠَّﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ -( «ﻛَﺘَﺐَ اﻟﻠَّﻪُ ﻣَﻘَﺎﺩِﻳﺮَ اﻟْﺨَﻼَﺋِﻖِ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ ﻳَﺨْﻠُﻖَ اﻟﺴَّﻤَﺎﻭَاﺕِ ﻭَاﻷْﺭْﺽَ ﺑِﺨَﻤْﺴِﻴﻦَ ﺃَﻟْﻒَ ﺳَﻨَﺔٍ

আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক মানুষের তাক্বদীর লিপিবদ্ধ করেছেন আসমান-যমীন সৃষ্টির ৫০ হাজার বছর পূর্বে এবং তিনি যার ভাগ্যে যা লিপিবদ্ধ করেছেন তাই ঘটবে।(ছহীহ মুসলিম, মিশকাত হাদীস নং/৭৯)।

একদিন ছাহাবায়ে কেরাম তাকে কেবল তাক্বদীরের উপর ভরসা করে সকল আমল ছেড়ে দেওয়ার আবেদন জানালে রাসূল (ছাঃ) বললেন, তোমরা সৎকর্ম করে যাও। কেননা যাকে যেজন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তার পক্ষে সে কাজ সহজসাধ্য হবে। যারা সৌভাগ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত, তাদের জন্য সেরূপ আমল এবং যারা দুর্ভাগাদের অন্তর্ভুক্ত তাদের জন্য সেরূপ আমল সহজ করে দেওয়া হয়েছে।(বুখারী হা/৪৯৪৯)।

তাক্বদীর সম্পূর্ণ গোপনীয় বিষয়।আল্লাহ তা‘আলা স্বয়ং তাক্বদীরের জ্ঞান তাঁর সৃষ্টিকুল থেকে গোপন রেখেছেন।এজন্য রাসূল (ছাঃ) এ প্রসঙ্গে অহেতুক বিতর্কে জড়িয়ে পড়তে নিষেধ করেছেন।(তিরমিযী,ইবনে মাজাহ,মিশকাত হা/৯৮)

আল্লাহ তাক্বদীরের মন্দকে পরিবর্তন করে দিতে পারেন।তিনি তাক্বদীরের ভাল-মন্দকে ইচ্ছা করলে মিটিয়ে দিতে পারেন এবং বহালও রাখতে পারেন। (রা‘দ ৩৯)।

রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘মানুষ পাপকর্মের কারণে রূযী থেকে বঞ্চিত হয়। দো‘আর মাধ্যমে তাক্বদীর পরিবর্তন হয় এবং নেকীর মাধ্যমে বয়স বৃদ্ধি পায়(নাসাঈ, ইবনু মাজাহ,হা/৪৯২৪; মিশকাত হা/৪৯২৫)।

তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি স্বীয় জীবিকায় প্রশস্ততা ও মৃত্যুতে বিলম্ব কামনা করে, সে যেন আত্মীয়-স্বজনের সাথে উত্তম ব্যবহার করে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯১৮)।

আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ

ﻭَﺃَﻥ ﻟَّﻴْﺲَ ﻟِﻠْﺈِﻧﺴَﺎﻥِ ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﺎ ﺳَﻌَﻰ

বান্দা কেবল সেটাই পায়, যেটার জন্য সে চেষ্টা করে। (সূরা আন-নাজম ৫৩/৩৯)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

সবকিছু আল্লাহর হুকুমে হয়। তিনিই একমাত্র অদৃশ্যের ইলম রাখেন। কে কখন জন্ম গ্রহণ করবে বা ইন্তেকাল করবেকে কত দিন বাঁচতে পারেকার সন্তান কেমন হবে? ইত্যাদী এসকল বিষয় আল্লাহ তায়ালা ছাড়া অন্য কেউ জানে না।

বিধায় রাশি কে বিশ্বাস করা যাবে না। এটা কুফরী আকিদা। সুতরাং প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে তাদের নিকট যাওয়া জায়েজ নেই এবং এজাতীয় সাইটগুলো ব্যবহার বা ভিজিট করাও জায়েজ নেই। কেননা, যেকোনো সময় শয়তান ধোঁকা দিতে পারে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...