আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
887 views
in পবিত্রতা (Purity) by (7 points)
reshown by
যদি ফরজ গোসলের পর শরীর মুছার পর মনে সন্দেহ জাগে দাঁড়ির গোড়াতে হয়তো পানি পৌছায়নি কিন্তু আঙ্গুল দিয়ে লক্ষ্য করলে মনে হয় পানি পৌছেছে কারণ ততক্ষনে আমি শরীর মুছে নিয়েছি। এর পরে আমি নামাজও পড়েছি। সেক্ষেত্রে কি আমার নামাজ বা গোসলে সমস্যা হবে? এমন সন্দেহ হলে করণীয় কি?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান হলো ফরজ গোসলে যদি ভুলে কোনো অঙ্গ ধোয়া না হয়,তাহলে স্বরন হওয়ার পর শুধু উক্ত অঙ্গই ধৌত করতে হবে।
,
উক্ত অঙ্গ ধৌত করার পূর্বে কোনো নামাজ আদায় করে থাকলে সেই নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবে। 
,      
اللباب في الجمع بين السنة والكتاب
 (1/ 129)
"وعنه: عن ابن عباس رضي الله عنه قال: " إذا نسي المضمضة والاستنشاق إن كان جنباً أعاد المضمضة والاستنشاق واستأنف الصلاة ". وكذلك قال ابن عرفة، وإلى هذا ذهب الثوري رحمه الله تعالى".
সারমর্মঃ হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন যদি কেহ জানাবতের গোসলের মধ্যে কুলি,নাকে পানি দেওয়া ভুলে যায়,তাহলে পুনরায় কুলি,নাকে পানি দিবে।
নামাজটি পুনরায় আদায় করবে। 

الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (1/ 155):
"فروع] نسي المضمضة أو جزءاً من بدنه فصلى ثم تذكر، فلو نفلا لم يعد لعدم صحة شروعه.
(قوله: لعدم صحة شروعه) أي والنفل إنما تلزم إعادته بعد صحة الشروع فيه قصدا، وسكت عن الفرض لظهور أنه يلزمه الإتيان به مطلقاً".
সারমর্মঃ উক্ত অবস্থায় নফল নামাজ পড়লে নামাজ যেহেতু শুরু করাই ছহীহ হয়নি, তাই উক্ত নফল নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবেনা।  

الأصل للشيباني ط قطر (1/ 32):
"قلت: أرأيت رجلاً  توضأ ونسي المضمضة والاستنشاق أو كان جُنُباً فنسي المضمضة والاستنشاق ثم صلى؟ قال: أمّا ما كان في الوضوء فصلاته  تامة، وأمّا ما كان في غُسل الجنابة أو طُهر حيض فإنه يتمضمض ويستنشق ويعيد الصلاة. قلت: من أين اختلفا؟ قال: هما في القياس سواء، إلا أنّا نَدَعُ القياس للأثر الذي جاء عن ابن عباس". 
সারমর্ম যদি সেটি জানাবতের গোসলের ক্ষেত্রে হয়,  তাহলে পুনরায় কুলি,নাকে পানি দিবে।
নামাজটি পুনরায় আদায় করবে। 
.
أخرج البیھقي بسندہ أن عمر بن الخطاب رأی رجلاً وبظھر قدمہ لمعة لم یصبھا الماء، فقال لہ عمر: أبھذا الوضوء تحضر الصلاة؟ فقال: یا أمیر الموٴمنین! البرد شدید وما معي ما یدفئني، فرق لہ بعد ما ھم بہ فقال لہ: اغسل ما ترکت من قدمک وأعد الصلاة وأمر لہ بخمیصة (بذل المجھود، کتاب الطھارة، باب تفریق الوضوء، ۲: ۲۸، ط: دار البشائر الإسلامیة بیروت)۔ 
সারমর্মঃ উক্ত বর্ণনায় হযরত ওমর রাঃ পুনরায় পা ধোয়ার কথা বলেছেন,এবং নামাজ পুনরায় আদায় করতে বলেছেন।      
,

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনি যেহেতু আঙ্গুল দিয়ে লক্ষ্য করে বুঝেছেন যে পানি দাড়ির গোড়ায় পৌছেছে,সুতরাং আপনার মনে যে সন্দেহ হচ্ছে যে  দাঁড়ির গোড়াতে হয়তো পানি পৌছায়নি,এটি পরিপূর্ণ ওয়াসওয়াসা। 
এই দিকে আপনি ভ্রুক্ষেপ করবেননা।
আপনার গোসল হয়ে গিয়েছে।
নতুন করে আর কিছুই করতে হবেনা।
আপনি নামাজ আদায় করতে পারবেন,কোনো সমস্যা নেই।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি যেই নামাজ আদায় করেছেন,সেটি আদায় হয়ে গেছে।
,    
,
ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার আমলঃ 
ইবনে হাজার আল-হাইছামি তাঁর ‘আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা’ গ্রন্থে (১/১৪৯) এসেছে, তাঁকে এর প্রতিকার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,

له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان – فإنه متى لم يلتفت لذلك لم يثبت بل يذهب بعد زمن قليل كما جرب ذلك الموفقون , وأما من أصغى إليها وعمل بقضيتها فإنها لا تزال تزداد به حتى تُخرجه إلى حيز المجانين بل وأقبح منهم

অর্থাৎ, এর ঔষধ একটাই সেটা হচ্ছে– ওয়াসওয়াসাকে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও। কেননা কেউ যদি সেটাকে ভ্রুক্ষেপ না করে তাহলে সেটা স্থির হবে না। কিছু সময় পর চলে যাবে; যেমনটি তাওফিকপ্রাপ্ত লোকেরা যাচাই করে পেয়েছেন। আর যে ব্যক্তি ওয়াসওয়াসাকে পাত্তা দিবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করবে সে ব্যক্তির ওয়াসওয়াসা বাড়তেই থাকবে; এক পর্যায়ে তাকে পাগলের কাতারে নিয়ে পৌঁছাবে কিংবা পাগলের চেয়েও নিকৃষ্ট পর্যায়ে পৌঁছাবে।
,

এর সর্বোত্তম প্রতিকার হচ্ছে– বেশি বেশি আল্লাহর যিকির করা, لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ পড়া, আউযুবিল্লাহ্ পড়া তথা বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্র কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা।

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
اَلْحَمْدُ لِلهِ الَّذِىْ رَدَّ اَمْرَهُ عَلَى الْوَسْوَسَة

‘সমস্ত প্রশংসা ওই আল্লাহর যিনি শয়তানের বিষয়টি কুমন্ত্রণা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রেখেছেন।’ (নাসাঈ )
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যখন এক ব্যক্তি তাঁর কাছে অভিযোগ করলেন যে, তার কাছে মনে হয় যে, সে নামাযের মধ্যে কিছু একটা পাচ্ছে। তখন তিনি বললেন, 
لاَ يَنْصَرِفُ حَتَّى يَسْمَعَ صَوْتًا ، أَوْ يَجِدَ رِيحًا 

সে যেন শব্দ শুনা কিংবা গন্ধ পাওয়া ছাড়া নামায না ছাড়ে। 
(সহিহ বুখারী ১৩৭ সহিহ মুসলিম ৩৬১)
,
মুহাদ্দিসিনে কেরামগন বলেছেন যে  এ কথার দ্বারা উদ্দেশ্য হল- অযু ভাঙ্গার ব্যাপারে পরিপূর্ণ নিশ্চিত হওয়া ছাড়া আপনি এটাই মনে করবেন যে, আপনার অযু ভাঙ্গে নি।
অতএব, সন্দেহ কিংবা কল্পনা ধর্তব্য নয়।

আরো জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+1 vote
1 answer 167 views
+1 vote
1 answer 331 views
...