আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
37 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (22 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ
আমার এক বোন আমার থেকে কিছু শীট ফটোকপি করে নিয়েছেন। যার দাম ২১০ টাকা হয়। এখন তিনি আমাকে।সেন্ড করেছেন ২৩০ টাকা।আমি এক্সট্রা ২০ টাকার কথা জিজ্ঞেস করতে তিনি বলেন যে এই ২০ টাকা চকলেট খাওয়ার জন্য দিয়েছি।

এখন আমার প্রশ্ন হলো-

এই এক্সট্রা ২০ টাকা সুদের অন্তর্ভুক্ত হবে কি না?

1 Answer

0 votes
by (63,240 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

ইসলাম ঋণ দেওয়াকে  যেমন লোকের সাহায্য তথা তাদের কষ্ট দূরীকরণ হিসাবে স্বীকার করে, তেমন ঋণ পরিশোধে উত্তম দৃষ্টান্ত পেশ করে। তাই ঋণ গ্রহীতা ঋণ ফেরত দেওয়ার সময় বেশি বা উত্তম  ফেরত দিতে পারে, যাকে শরীয়তের পরিভাষায় ‘হুসনুল্ কাযা’ বা উত্তম পরিশোধ বলা হয়।

عن أبي رافع رضي الله عنه قال: استسلف رسول الله صلى الله عليه و سلم من رجل بكرا فقدمت عليه إبل من الصدقة فأمر أبا رافع أن يقضي الرجل بكره، فرجع إليه أبو رافع فقال: لم أجد فيها إلا  خيارا رباعيا، فقال: أعطه إياه، إن خيار الناس أحسنهم قضاء رواه مسلم

অর্থ, আবু রাফে হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ একদা নবী (সাঃ) এক ব্যক্তি হতে একটি উষ্ট্রী ধার নেন। তার পর সাদাকার উট আসলে আবু রাফেকে আদেশ দেওয়া হয়, সে যেন সেই ব্যক্তির উট ফেরত দেয়। আবু রাফে (রাযিঃ)  ফিরে এসে বলেঃ  [সেই সমগুণের উট নেই বরং তার থেকে উত্তম] রুবায়ী মুখতার [এমন পুরুষ উট যা ছয় বছর বয়স অতিক্রম করে সপ্তম বছরে প্রবেশ করেছে এমন] উট আছে। নবী (সাঃ) বলেনঃ তাই দিয়ে দাও; কারণ ভাল মানুষ তারা যারা উত্তম পরিশোধকারী।” [মুসলিম- ৪১০৮]

ইবনুল মুনযির বলেনঃ ‘তাদের ঐক্যমত রয়েছে যে, ঋণ দাতা যদি ঋণ গ্রহীতাকে ঋণ ফেরতের সময় বেশী দেওয়া কিংবা হাদিয়া সহ ঋণ ফেরত দেওয়ার শর্ত দেয় এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে ঋণ দেওয়া হয়, তাহলে বেশি নেওয়াটা সুদ।’[মুগনী,৬/৪৩৬]

 তাই ঋণ ফেরতের সময় বেশি গ্রহণ বৈধ নয়, যতক্ষণে দুটি শর্ত না পাওয়া যায়।

ক- ঋণ দাতা ঋণ গ্রহীতার সাথে লাভ নেওয়ার শর্ত দেয় নি।

খ- সমাজে বেশি দেওয়ার প্রথা প্রচলিত ও নয়।

যদি শর্ত দেওয়া হয় কিংবা এটা সমাজে প্রচলিত থাকে, তাহলে বেশি নেওয়া সুদ হবে। এখানে প্রচলিত শব্দটির উল্লেখ এই কারণে করা হচ্ছে যে, শরয়ী মূলণীতিতে প্রচলিত প্রথা শর্তর মতই। অর্থাৎ শর্তারোপ তো করে না কিন্তু প্রথা ও প্রচলন অনুযায়ী বেশি নেয় বা দেয়, তাহলে সেটা শর্ত হিসাবেই গণ্য হবে।

প্রশ্নকারী প্রিয় ভাই! ধারকৃত টাকার থেকে অতিরিক্ত টাকা পরিশোধের ব্যাপারে যদি আগে কোন চুক্তি না থাকে, বা এভাবে ঋণ দিয়ে অতিরিক্ত টাকা দেবার প্রচলনও না থাকে, তাহলে আপনি যদি স্বাভাবিকভাবে ঋণ পরিশোধের পর, নিজ থেকে খুশি হয়ে কিছু টাকা হাদিয়া স্বরূপ প্রদান করেন, তা যত টাকাই হোক না, কেন সমস্যা নেই। এছাড়া নিজ পরিবারের জন্য ব্যয় করলে হাদিসে সদকা করার সওয়াব পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

কোনও ব্যক্তিকে ঋণ দেওয়ার পর সে তা ফেরত দেওয়ার সময় যদি স্বেচ্ছায় (ঋণদাতা পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনও তলব, আকারে-ইঙ্গিতে প্রত্যাশা ব্যক্ত কিংবা চুক্তি না থাকা সত্ত্বেও) অতিরিক্ত কিছু টাকা দেয় তাহলে তা গ্রহণ করতে কোন আপত্তি নেই বরং কিছু অতিরিক্ত সহ ঋণ পরিশোধ করাই উত্তম।

সুতরাং প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে আপনার জন্য উক্ত অতিরিক্ত টাকা হাদিয়া হিসেবে গ্রহণ করা জায়েয আছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...